সাবধান!! এখানে সিআইএ-র গোপন ক্যামেরা আছে
নারী-পুরুষ মিলিতভাবে একজন আর একজনের সঙ্গী ও আপনজন হিসাবে জীবন তরণী চালনা করে আসছে সৃষ্টির প্রথম থেকেই। অথচ এই দুয়ের সম্পর্ক সম্বন্ধে এই বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত মতভেদ ও অনিশ্চয়তার অন্ত নেই। সামাজিকভাবে নারী-পুরুষ কিভাবে অগ্রসর হলে মানব জাতির শান্তিময় প্রগতি সম্ভব ও সহজ হয়, তার সুষ্ঠু ধারণা এখনো যেন আমাদের বোধের বাইরে।
এই সুষ্ঠু বোধের অভাবে একদিকে স্বাধীনতার নামে নারীকে করা হচ্ছে প্রদর্শনীর বস্তু, অন্যদিকে সতীত্ব রক্ষার নামে করা হয়েছে তাকে পঙ্গু ও অবরুদ্ধ। আমাদের প্রাচ্য দেশগুলির কথা বলতে গেলে অনেকখানে নারীকে আমরা অন্ধ করে দিয়েছি।
না দিয়েছি শিক্ষা না দিয়েছি প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীকে করা হয়েছে নিকৃষ্ট জীব, পদসেবিকা, তার উপর আর কিছু নয়। আধুনিক কালেও আমরা তাই দেখছি নারীকে যথোচিত মর্যাদা দেয়া হচ্ছে না। বড় বড় কথা বলে তথাকথিত প্রগতির নামে তাদের ভোগের বা খেলার সামগ্রী হিসেবে পাবার পথ পরিষ্কার করা হয়েছে। এতদিন ঘরের ভিতর বেঁধে রেখে নারীকে অন্ধ করা হয়েছে, এখন তথাকথিত প্রগতির চোখ-ঝলসানো তীব্র আলোকে তার চোখকে আরও বেশী করে অন্ধকার করে দেওয়া হচ্ছে।
জগতে শুধু নারী বা নর দ্বারা জীবন ধারণ ও সুখ-শান্তি লাভ অসম্ভব। দু’য়ের জীবন এমন মধুর ও পবিত্র সম্পর্কে ওতপ্রোতভাবে জড়িত; যে একজনের প্রতি আর একজনের বিদ্রোহ মানবজাতির অমঙ্গল ডেকে আনবে। নারী-পুরুষের সুসম্পর্ক আজও সঠিকভাবে সমাজে স্থিরকৃত হয়নি সত্য এবং এজন্যে সমাজে অবিচার ও অত্যাচারেরও সীমা নেই; তাই বলে একে শ্রেণীসংগ্রাম হিসেবে ভাবলে ভুল করা হবে। আমাদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির অনুসারী হওয়া উচিত। জীববিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞানের রায় হলো- নারী-পুরুষ দুটি আলাদা বিবদমান শ্রেণী নয়; যদিও অবিচার, অত্যাচার সমাজে বর্তমান রয়েছে এবং পরিবারে অনেক সময় অশান্তি দেখো যায়।
যে সমাজেই হোক- মা-ছেলে, পিতা-কন্যা, ভাই-বোন ও স্ত্রী-স্বামীর সম্পর্ককে বিবদমান শ্রেণীরূপ দেওয়া এবং তাকে সেভাবে দেখা মানবজাতির জন্য কলঙ্কজনক বৈকি!
অবশ্য এর অর্থ এই নয় যে, নারী-পুরষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। পার্থক্য নিশ্চয়ই আছে। শরীর বিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের দিক দিয়ে দু’য়ের পার্থক্য অত্যন্ত প্রকট। প্রকট হলেও নারী-পুরুষের মধ্যে এই ভিন্নতা পরিপূরক বিশেষ। একজনের অভাব ও দরকার অন্য জনের তা আছে এবং দুয়ের মিলনে ও সহজীবন ধারণে এই ভিন্নতা তাই অপার আনন্দ ও সুখ বহন করে আনে।
এই জন্যেই নারী-পুরুষের সম্পর্কের বড় কথা হলো- একজনের আর একজনের উপর পরস্পর নির্ভরশীলতা। এই নির্ভরশীলতা অসহায় দুর্বলের নির্ভরশীলতা নয়; এর মূলে হলো নিজের অভাব অন্যের দ্বারা পূরণ করে নেয়ার স্পৃহা। এই নির্ভরশীলতা ছাড়া সমাজ গড়ে উঠতে পারে না। সম্পর্কহীন হলে নারী-পুরুষের সৃষ্টিরই কোনো অর্থ হয় না। মনে রাখতে হবে, একজন আর একজনের উপর অংশত হলেও নির্ভরশীল বলেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে ওঠে।
এই নির্ভরশীলতা না হলে প্রেমপ্রীতি, মহত্ত, আত্মত্যাগ সবই অর্থহীন হয়ে পড়ে। কারণ, পরস্পর নির্ভরশীলতা ছাড়া এই সমস্ত মানবীয় গুণের কোনোটারই বিকাশের সুযোগ থাকে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।