আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

সময়টা ১৯৯৯ সাল। একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমি প্রথমবারের মতো মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে যাই। আমরা ৬০ থেকে ৭০ জন। এক ঘরে দেখতে পাই সেই বিখ্যাত ঘোষণাটির রেকর্ড। আমরা সেই রেকর্ডটা বাজিয়ে শোনাতে বলি।

তারা শোনায়। শুনি আর পূর্বের সেই ধারণা ভেঙ্গে যায়। এতকাল শুনে এসেছি, তিনি স্বাধীনতার ঘোষক। তখন বুঝি আসলে তিনি ঘোষক নন, তিনি একজন পাঠক মাত্র। অন্য জনের পক্ষ থেকে তিনি ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন।

তার আগেই আরেক জন এই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। যদি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠকারী বলে কাউকে স্বীকৃতি দিতে হয় তবে তা এম এ হান্নানের প্রাপ্য। আর স্বাধীনতার মূল ঘোষণাকারী শেখ মুজিবুর রহমান। অন্য দিকে ১০ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে যেই অস্থায়ী সরকার সৃষ্টি হয়, সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।

সেই সরকারের প্রধান ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সুতরাং স্বাধীনতার ঘোষণার সঙ্গে শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতা জড়িত। জিয়ার ঘোষণাপত্র পাঠ করাটা একটি কাকতালীয় ঘটনা মাত্র। সেই সময়ের চট্টগ্রাম কালুরঘাট স্টেশনে যেই ব্যক্তিটি জিয়াউর রহমানকে ডেকে আনেন, সেই বেলাল মোহাম্মদ অসংখ্য সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তিনি প্রত্যেকবারই বলেছেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন। যারা এখনও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে যান নি, তাদের অনুরোধ করব কমপক্ষে জিয়াউর রহমানের এই রেকর্ড শোনার জন্য মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে যান।

সেই ঘোষণায় জিয়াউর রহমান পরিষ্কার বলেছেন, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা করছেন। তাহলে তিনি কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হন ? তিনি তো কেবলমাত্র বঙ্গবন্ধুর আহবানটা পাঠ করেছেন। বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত বা রাজাকারপন্থী লোকজন শেখ মুজিবুর রহমানকে অপমান করার জন্য এবং বিতর্ক ও বিভক্তি সৃষ্টি করার জন্য স্বাধীনতার ঘোষক বানালেন জিয়াউর রহমানকে। তিনি বেঁচে থাকতে কোনদিনও এরকম দাবি করেন নি। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর এই থিউরি আবিষ্কৃত হয়।

গতকালও সংসদে এই স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়েছে। আমরা মনে করি, আমরা এই সব বিতর্ক করে সময় নষ্ট না করে প্রকৃত সত্যটা জানি। তবে কেউ কেউ বিশেষত যারা '৭১ এ রাজাকার ছিলেন, তারা এই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এবং তারা চান এই বিতর্ক চলতে থাকুক। তাতে করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যে জনদাবি উঠেছে, সেটা চোখের আড়ালে চলে যাবে। এই বিতর্কে আসলে তাদেরই লাভ।

ক্ষতি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তির। তাই অনর্থক বিতর্ক না করে সত্যকে মেনে নেয়া উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.