আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আগের পোস্টে যারা জেনেছেন এইচআইভি/এইডস কি - এই পোস্টে তারা জেনে নিন এইচআইভি সংক্রমণের উৎস ও থিওরীসমূহ

আমি কথা বলি সব কিছু নিয়ে, যা ঘটে আর যা ঘটে না।

এইডস এবং এইচআইভি সংক্রমণের উৎস নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। এইচআইভি সংক্রমণের ব্যাপারে সর্বপ্রথম তিনটি ঘটনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো: - ১৯৫৯ সালের সংরক্ষিত রক্তে এইচআইভি উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। রক্তটি কঙ্গোর এক পুরুষের; - ১৯৬৯ সালের সংরক্ষিত দেহকোষেও এইচআইভি উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। দেহকোষের নমুনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইর এক যুবকের; এবং - ১৯৭৬ সালের সংরক্ষিত দেহকোষেও এইচআইভি উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দেহকোষের নমুনা ছিল নরওয়ের এক নাবিকের। গবেষকরা অনুমান করেন, সম্ভবত ১৯৪০ সালের দিকে এইচআইভি প্রথম মানবদেহে দেখা দেয়। বর্তমানে বেশির ভাগ বিজ্ঞানীরা একটি বিষয়ে একমত যে, এইচআইভি প্রায় অনুরূপ এক ধরনের ভাইরাস থেকে এসেছে যার নাম এসআইভি (SIV-Simian Immunodeficiency Virus)। গবেষণায় আরও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, আফ্রিকার ক্যামেরুন-এ মানব দেহে প্রথম এইচআইভির উৎপত্তি। এসআইভি এক বিশেষ ধরনের লেজবিহীন বানরের দেহে বাস করে, এই বানর এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে পাওয়া যায় না।

কি প্রক্রিয়ায় এসআইভি মানব দেহে প্রবেশ করে এইচআইভিতে রূপান্তরিত হলো, এ ব্যাপারে নানা তত্ত্ব আছে এবং বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু তথ্য দেয়া হলো: হান্টার থিওরী (The Hunter Theory) বা শিকারী তত্ত্ব : আফ্রিকায় বানর শিকার করে মাংস খাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এ তত্ত্বানুযায়ী এসআইভি আক্রান্ত বানর শিকার করার পর কোনভাবে বানরের রক্ত মানবদেহে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে এইচআইভিতে রূপান্তরিত হয়। ধারণা করা হয় এরূপ ঘটনা বার বার ঘটেছিল। ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন থিওরী (The Oral Polio Vaccine Theory) বা পোলিও টিকা তত্ত্ব : ১৯৫০ সালের দিকে আফ্রিকার কয়েকটি দেশে নতুন এক ধরনের পোলিও টিকা তৈরি ও পরীক্ষা করা হয়।

টিকাটি তৈরি করার জন্য এক বিশেষ প্রজাতির বানরের বৃক্কে (Kidney) পোলিও ভাইরাসকে গবেষণাগারে রূপান্তরিত রূপে ফলানো হয়। অনেকের ধারণা কিছু কিছু বৃক্ক এসআইভি আক্রান্ত ছিল। কিন্তু এ তত্ত্বের কিছু ত্রুটি খুব ষ্পষ্ট। প্রথমত এইচআইভি ১৯৫০ সালের আগেই খুব সম্ভবত মানবদেহে প্রতিষ্ঠিত হয়; দ্বিতীয়ত যে প্রজাতির বানরের বৃক্ক ব্যবহার হয়েছিল সে প্রজাতির বানরকে এসআইভি আক্রমণ করেনা। কণ্ট্যামিনেটেড নিডেল থিওরী (The Contaminated Needle Theory) বা দূষিত সুচ তত্ত্ব : কোন রকম বিশুদ্ধকরণ ছাড়াই আফ্রিকাতে একই সুচ সিরিঞ্জ বার বার একাধিক রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছিল।

অনেকের ধারণা, এসআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে এ ধরনের সুচের মাধ্যমে ভাইরাসটি তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে । কোলোনিয়ালিজম থিওরী (The Colonialism Theory) বা ঔপনিবেশিক তত্ত্ব : ঔপনিবেশিক শাসকরা আফ্রিকান শ্রমিককে সুস্থ রাখার জন্য একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধক টিকা দিত। এছাড়া শ্রমিকদের জন্য যৌনকর্মীদেরও আনা হতো। এ সময় এসআইভি আক্রান্ত বানর শিকারের পর যদি মানবদেহে ভাইরাসটি প্রবেশ করে থাকে তাহলে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে এইচআইভিতে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারতো। কনস্পিরেসি থিওরী (The ConspiracyTheory) বা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব: অনেকের ধারণা এইচআইভি গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জনসাধারণের অস্তিত্ব বিলোপ করার জন্য।

কিন্তু যে সময় এইচআইভির উৎপত্তি হয়, সে সময় গবেষণাগারে ভাইরাস তৈরি করার প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয় নি। ____________ ■ উৎস: এইচআইভি এবং এইডস বিষয়ক সম্পূরক তথ্য ও প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। প্রকশনায়: পায়াক্‌ট বাংলাদেশ । পুনসংশোধিত ও পরিমার্জিত সংস্করণ: এপ্রিল ২০‌১২ ■ ফেসবুক পেজ এ জয়েন করতে পারেন এই লিংকে চেপে। ■ এইচআইভি প্রতিরোধের ওয়েবসাইটে কি কি দেখতে চান সেসব মতামত জানাতে পারেন।

ওয়েবসাইটের ঠিকানার ' লিংক ' ■ এইচআইভি প্রতিরোধে সরকারের কার্যক্রম জানতে ভিজিট করতে পারেন 'এই সাইট '।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।