জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
বিডিআর বিদ্রোহের পর হতভম্ভ হয়ে থেকেছি কয় দিন। টেলিভিশন, ব্লগ, নিউজ সাইট সব জায়গায় বিডিআর প্রসঙ্গ ছাড়া আর কোন প্রসঙ্গ নেই। নানা কথা, নানা মতামত, ঘৃণা, কান্না, আহাজারি, উৎকণ্ঠা - কোনটা নেই ?
প্রথম দিন মিডিয়ার কল্যাণে ব্লগবাসীরা বিডিআরের পক্ষে চলে গেলেন। আর পর দিন থেকে সেই মিডিয়ার কল্যাণেই সবাই চলে গেলেন সেনা সদস্যদের পক্ষে। সেটাই স্বাভাবিক।
প্রথমে কারো ধারণা ছিল না কী নারকীয় কাণ্ড ঘটে গেছে বিডিআর সদর দপ্তরে। তাই নির্যাতিত, বঞ্চিত, অত্যাচারিতর প্রতীক হিসেবে ধরে নিয়ে বিডিআরের প্রতি সমব্যথী হয়েছিলাম আমরা।
দাবী আদায়ের পদ্ধতি হিসেবে সশস্ত্র বিদ্রোহ যে কত নির্মম হতে পারে তা দেখলাম আমরা। কিন্তু এত নৃশংস আচরণ করল কেন বিডিআর জোয়ানরা ? এ বিষয়টি নিয়ে ভাবার অবকাশ আছে।
সাধারণত অপরিচিত লোককে খুন করলে খুনীর অতটা আক্রোশ থাকে না, যতটা আক্রোশ থাকে পরিচিত কাউকে খুন করার ক্ষেত্রে ।
প্রতিশোধপরায়ণ খুনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত নৃশংস হয় খুনী। লাশ টুকরো করা, পুড়িয়ে ফেলা, খুনের পূর্বে ধর্ষণ বা নির্যাতন এবং লাশের উপর লাথি মারা বা থুথু মারা ইত্যাদি ঘটনা ঘটে প্রতিশোধপরায়ণ খুনের ক্ষেত্রে।
বিডিআর বিদ্রোহের খুনগুলো ঠিক এরকমই। ভয়াবহ ও নৃশংস। সেনাসদস্য বা সেনা অফিসারদের প্রতি বিডিআর সদস্যদের এত ক্ষোভ বা ঘৃণা ছিল কেন ? ঠাণ্ডা মাথায় এ বিষয়টি ভাবার প্রয়োজন আছে।
গলদ ছিল কোথায় সেটা বের করার ক্ষেত্রে এই চিন্তাটা কাজ দেবে।
বিডিআর সদস্যরা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ অপরাধী। কিন্তু তাই বলে তারা যা অভিযোগ করেছে সেগুলো অবহেলা করা উচিত হবে না। তাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে। সেনাবাহিনী ও বিডিআর উভয় পক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্তে আসতে হবে, আসলে গলদটা কোথায়।
প্রত্যেক দায়ী ব্যক্তির অবশ্যই বিচার করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে প্রত্যেককে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে কেবল বিচার করাই এটার সমাধান নয়, ভবিষ্যতে যেন এ রকম ঘটনা না ঘটে তার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
তার জন্য প্রয়োজন সেই সব কারণ বের করা যে সব কারণ বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে দায়ী। সেই কারণগুলো দূর করার জন্য যা যা করা দরকার, তার প্রত্যেকটি করণীয় নির্ধারণ করে এক্ষুণি কাজে হাত দিতে হবে।
পুরোনো সেই নিয়ম কানুন ঝেড়ে নতুন করে একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী নতুন আইন কানুন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বিডিআর বা সেনা বাহিনীর পক্ষ নিয়ে কোন কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার দিকে তাকিয়ে। তাহলেই এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।