অতএব- লক্ষন যা, তাতে দুঃখ আর ক্ষোভই আমার কপালের লেখা।
অফিসের কাজে রাষ্ট্রভাষা বাংলা ব্যবহারে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ
সরকারি দলিল ছাড়াও এটার মূল্য আচ্ছে আবেগের জায়গায়। এমনকি আদেশটির লেখাতেও বঙ্গবন্ধুর আবেগের ছোয়া দেখা যায়। দাফতরিক আর দশটা আদেশের মতো ভাষা নয় এটার।
১২ মার্চ ১৯৭৫ রাষ্ট্রপতি কতৃক জারিকৃত আদেশটি হুবহু তুলে দিচ্ছি এইখানে।
‘‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। বাংলা আমাদের জাতীয় ভাষা। তবুও অত্যন্ত দুঃখের সাথে ল্য করছি যে, স্বাধীনতার তিন বছর পরেও অধিকাংশ অফিস আদালতে মাতৃভাষার পরিবর্তে বিজাতীয় ইংরেজী ভাষায় নথিপত্র লেখা হচ্ছে। মাতৃভাষার প্রতি যার ভালোবাসা নেই, দেশের প্রতি তার ভালোবাসা আছে এ কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। দীর্ঘ তিন বছর অপোর পরও বাংলাদেশের বাংগালী কর্মচারীরা ইংরেজী ভাষায় নথিপত্র লিখবেন সেটা অসহনীয়।
এ সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী নির্দেশ সত্বেও এ ধরনের অনিয়ম চলছে। আর এ উচ্ছৃংখলতা চলতে দেয়া যেতে পারেনা।
এ আদেশ জারী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা ও আধা সরকারী অফিসসমূহে কেবলমাত্র বাংলার মাধ্যমে নথিপত্র ও চিঠিপত্র লেখা হবে। এ বিষয়ে কোনো অন্যথা হলে উক্ত বিধি লংঘনকারীকে আইনানুগ শাস্তি দেবার ব্যবস্থা করা হবে। বিভিন্ন অফিস আদালতের কর্তা ব্যক্তিগন সতর্কতার সাথে এ আদেশ কার্যকরী করবেন এবং আদেশ লংঘনকারীদেও বিরুদ্ধে শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করবেন।
তবে বিদেশী সংস্থা বা সরকারের সাথে পত্রযোগাযোগ করার সময় বাংলার সাথে ইংরেজি অথবা সংশ্লিষ্ট ভাষার একটি প্রতিলিপি পাঠানো প্রয়োজন। তেমনিভাবে বিদেশের কোনো সরকার বা সংস্থার সাথে চুক্তি সম্পাদনের সময়াও বাংলার সাথে অনুমোদিত ইংরেজি বা সংশ্লিষ্ট ভাষায় প্রতিলিপি ব্যবহার করা চলবে। ’’
রাষ্ট্রপতি লিখেছিলেন ‘‘ এ বিষয়ে কোনো অন্যথা হলে উক্ত বিধি লংঘনকারীকে আইনানুগ শাস্তি দেবার ব্যবস্থা করা হবে। ’’ শাস্তি কেউ পেয়েছিলেন কি না সেটা আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু লিখেছিলেন ‘‘দীর্ঘ তিন বছর অপোর পরও বাংলাদেশের বাংগালী কর্মচারীরা ইংরেজী ভাষায় নথিপত্র লিখবেন সেটা অসহনীয়।
’’ এরপরও এই অসহনীয়তার সাথে বঙ্গবন্ধুকে থাকতে হয়েছে। তিনি লিখেছিলেন স্বাধীনতার তিন বছর পরে, আর এখন পেরিয়ে গেছে তিন সাত সাতত্রিশ বছর।
*ছবিতে ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭২ সংবিধানের চুড়ান্ত কপি স্বাক্ষর করছেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৩ অনুযায়ি বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।