আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানুষ!!!!!!!! (রি পোস্ট)



প্রখর তাপের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মাথাটি ঝিমঝিম করছিল তার। আকাশে জোড়া নক্ষত্র আজ যেন দ্বিগুন তেজে তাপ বিকিরন করছে। তৃতীয় সূর্যটার তেজ আবার অতটা বেশি নয়। মৃত প্রায় কিনা! সময় হিসাব করে প্রাণীটি। অন্ধকার নামতে এখনও প্রায় আটাশ ঘন্টা বাকি।

এটুকু সময়ে সমুদ্রটা কি পেরুনো যাবে ? ঝড়টা যদি তার আগেই শুরু হয়ে যায় ? নিজেকে মনে মনে সাহস দিলেও কালচে-সবুজ সমুদ্রটির দিকে তাকিয়ে মনটা দমে যায় তার। তবুও পা চারটিতে সর্বোচ্চ গতি তুলে চলতে শুরু করে সমুদ্রের ওপর দিয়ে। বারবার নিজেকে বোঝায়.. .. .. সে সৃষ্টির সেরা জীব!!... .. ..সে মানুষ !!... .. ..তার অসাধ্য কিছুই নেই !! উপসংহার একটি সুবিশাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে হলোগ্রাফিক ছবিটা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেন তিনি। মনের মাঝে চারপেয়ে প্রাণীটার ভাবনাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে। কি আশ্চর্য ! এইসব প্রাণীরা নিজেদের "মানুষ" কেন মনে করছে ? "মানুষ" শব্দটা তারা আবিষ্কারই বা করছে কি করে ? আবার একটি দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে তার ফুসফুস থেকে।

হোক না অল্প দিনের গবেষনা। তবু ব্যর্থতার কষ্টটা কিছুতেই ভোলা যাচ্ছে না। পুরো কাজটা এভাবে ব্যর্থ হয়ে যাবে। তারা কখনও কল্পনাই করেননি। মহাবিশ্বের এত গুলো স্থানে, এতগুলো ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায়, এতগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির প্রাণের বিকাশ ঘটানো হয়েছে এবং অসীম যত্নে যে এতকাল তাদের রক্ষনাবেক্ষন করা হয়েছে- তার ফলাফল শুধুই শূন্য ? সবগুলো প্রজাতির প্রাণীই নিজেদের মনে করছে "মানুষ"এবং যে সকল মানুষেরা তাদের সৃষ্টি করেছে, তাদের নাম দিয়েছে "বিধাতা"।

কোনো মানে হয় ? সবগুলো প্রাণী জগতের অবস্থা শেষবারের মত পর্যবেক্ষন করেন তিনি। প্রতিটি প্রাণীজগতের সভ্যতার বিন্যাস মোটামুটি প্রায় একই রকম,ব্যতিক্রম কিছু নেই। সর্বশেষে হলোগ্রাফিক ছবিটায় ফুটে উঠে বুদ্ধিসত্তার স্কেলে সর্বনিম্ন স্তরের প্রাণী কুলের অবস্থা। ত্রিমাত্রিক জগতে পৃথিবী নামের একটি প্রতিকুলে গ্রহে জন্ম দেয়া হয়েছিল এই অনুজীবগুলোকে। এরা এখন এই ল্যাবরেটররি সব চাইতে কৌতুককর বিষয়।

অনুজীবগুলোর অর্থহীন হিংস্রতা পর্যবেক্ষন করে কৌতুকে তার প্রায় স্বচ্ছ ত্বক ক্রমশ সবুজাভ হয়ে উঠে। এই অনুজীবেরা "মানুষ" এবং "মানব সভ্যতা" শব্দদুটি শিখেছে ঠিকই, কিন্তু অর্থ বের করেছে সম্পূর্ন উল্টো। নিম্ন স্তরের বুদ্ধিসত্তার প্রাণী বলেই হয়তো আত্ম বিধ্বংসের অদ্ভুত সব উপায় বের করেছে- যাদেরকে তারা অস্ত্র বলে থাকে। সবাই পৃথক পৃথক স্বত্তায় নিজেদের বিভক্ত করে রেখেছে এবং সামান্য কোনো কারনেই পরষ্পরকে ধবংস করছে। আর সেই সাথে পৃথিবী নামের গ্রহটিকেও! হতাশা ঘিরে ধরে মানুষটিকে।

শরীরের মধ্যভাগে অবস্থিত রক্তাত্ত চোখটি তাকিয়ে থাকে ছোট বোতামটির দিকে। বোতামটি ঘিরে সোনালি আলোর বলয় জানান দিচ্ছে বিপদ সংকেত। এই উদ্ভট, নিবোর্ধ অনুজীব প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্পূর্ন অর্থহীন। তারচাইতে গ্রহটির অন্য কোনো প্রাণী প্রজাতিকে প্রধান প্রাণীকুল হিসেবে বিকশিত করার চেষ্টা করা যেতে পারে। কি ভেবে বোতামটির দিকে অগ্রসর মান সপ্তম হাতটিতে ফিরিয়ে নেন মানুষটি।

কি দরকার অযথা শক্তি অপচয করে ? এই আত্ম-বিধবংসী প্রাণীরা তো নিজেরাই নিজেদের ধবংশ করে ফেলছে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.