আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৯৭২ সাল; এ্যবোটাবাদ

উন্নত দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা

শীতকালীন ছুটি শেষে এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুলে ফিরে গেলাম। যে কোন কারনেই হোক স্কুলে কোন প্রকার বৈরী পরিবেশ বা মন্তব্য শুনতে হয়নি। যদি ও এটা স্কুল (বোর্ডিং) ক্লাশ ছিল বার পর্যন্ত অর্থাৎ ইন্টরমিডিয়েট পর্যন্ত। আমরা মাঝে মাঝে আক্ষেপ করতাম ১২ ক্লাশে পড়লেও আমাদেরকে বলবে স্কুলেই আছি। পাশের শহরে ছিল মারীর কাছে "লোয়ার টোপা" সম্ভবত ক্যডেট কলেজ এবং আরেকটা 'হাসানাবদাল ক্যডেট কলেজ'।

এ দুটোর নামই মনে আছে, কারন তারা ইন্টার স্কুল ডিবেটিং ও খেলাধূলা এ অংশগ্রহণ করতে আসত। একবছর তারা আসত, আর পরের বছর আমাদের টীম যেত। আমরা ওভার অল জিততে পারলে আমরা জানতাম পরের দিন স্কুল ছুটি। শহরের মাঝে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে আরেকটি নামকরা স্কুল ছিল "বার্ন হল" Burn Hall, এটি মনে হয় ঐ শহরের এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুলের ন্যয় প্রসিদ্ধ কিন্তু একমাত্র কো- এড স্কুল। অন্যটি সারা পাকিস্তানে নামকরা "কাকুল মিলিটারী একাডেমী" এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুল ১৯৬০ সালে ছিল রেলওয়ে পাবলিক স্কুল।

এর পর পরই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে আলাদা হয়ে এটি এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুল হয়ে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের রূপ লাভ করে। এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুল আরও প্রচারের শীর্ষে হয়ে থাকে একজন একনিষ্ঠ নিবেদিত বৃটিশ ইংরেজী শিক্ষকের জন্য। যার নাম ছিল "হিউ ক্যচপোল" (Hugh Catchpole)। ভারত বিভাগের পূর্বে ইনি ছিলেন দিল্লির নিকটে অবস্থিত "ধেরাধুন রয়েল মিলিটারী কলেজের" সহ শিক্ষক ও হাসানাবদাল ক্যডেট কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক। এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুলে তিনি যখন জয়েন করেন, তাকে অধ্যাপক পদটি দেয়া হলেও তিনি তা গ্রহণ না করে জানান তিনি বাকি জীবন শুধু মাত্র ইংরেজী শিক্ষক হয়ে থাকতে চান।

তিনি অবশ্য ইংরেজী স্টাইলে পুরো দমে উর্দু বলতে পারতেন। তবে সেই উর্দু অনুবাদ একেবারে শেষ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেন, যখন দেখতেন ছাত্রকে এ ছাড়া কোন প্রকারে বোঝানে সম্ভব না। ১৯৬৯ সালে বোধ করি এই নিবেদিত প্রান ব্যচেলর শিক্ষকের বয়স ছিল ষাটের কাছাকাছি। এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুলে যারাই পড়াশুনা করেছেন, এই ইংরেজী শিক্ষকে সারা জীবন স্মরন করতেই হবে। ভোর ছ'টা থেকে শুরু হোত তার ছাত্র পড়ানোর দায়িত্ব তারই পরীক্ষার এক পাতা বা দু পাতার শীট গুলো চেক করে মার্কিং করনের মাধ্যমে।

সারে আটটায় স্কুল এ্যসেম্বলীর প্রারম্ভে স্নান ও নাস্তা করে আবার তার নিজস্ব লাইব্রেরী কাম কামরায়। বিকেলেও স্কুলের পর ও দেখতাম তাকে তার নিজস্ব কামড়ায় পরীক্ষার পাতাগুলো চেক কড়ছে। ক্যচপোলের নিজস্ব কামরার লাইব্রেরীতে নামকরা ইংরেজী ক্লাসিক নভেল গুলোর সংক্ষিপ্ত সংস্করন থাকত। তিনি এ গুলো তার প্রত্যেক ছাত্রকে পড়তে ধার দিতেন। এক সপ্তাহ পর বই ফেরত দিতে হোত তার কাছেই।

এবং প্রত্যেককে বই ফরতের সময় ঐ নভেলের কোন একটা জায়গা থেকে প্রশ্ন করতেন, উদ্দেশ্য ছাত্রটি অদৌ বইটি পড়েছে কি না। এখন বুঝতে পারি তার ঐ সাধনা আমাদের ইংরেজী শিক্ষাকে কতটুকু পাকা পোক্ত করে দিয়েছে, সেই স্কুল বয়স থেকেই। ক্যচপোলকে সন্মান জানিয়ে তার ছাত্র Click This Link মুজাফফরাবাদ থেকে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল, চিঠি। হল এ কোন ফোন ছিল না। নবম শ্রেনীর ফাইনাল পরীক্ষার পর বসন্ত কালীন ছুটিতে মুজাফফরাবাদ যাই।

এখন কেউ আর বৈরী মন্তব্য করতে সাহস পাচ্ছে না। ইতি মধ্যে ৯০,০০০ পাকিস্তনী সৈন্য "পিওডব্লিউ" হিসেবে ভারতের কাছে বন্দী। পাকিস্তানীরা তাদের সোনার সন্তানদের কূকর্মের কথা জেনে কিছুটা হলেও ধিক্কার দেয়া শুরু করেছে। বিশেষ করে যখন হাজার হাজার নারী ধর্ষনের ও লক্ষ নিরপরাধ জনগন নিধন, সংবাদটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর, এই প্রথম বারের মত পশ্চিম পাকিস্তানের জন সাধারন জানতে পারে। কারন পাকিস্তানী গণমাধ্যম তা প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।

ঐ বাংলা শব্দটির সেই সময়তেই আমার প্রথম পরিচয়। বাংলা অভিধান দেখে শব্দার্থ জানতে হয়েছিল। এমনকি লাহোরে এই সময়ে ববা ও আমি ট্যক্সিতে চলাকালিন, ট্যক্সি ড্রাইভারও তার প্রিয় সেনাবাহিনীকে গালাগাল দেয়া শুরু করল। জনসাধারনকে অন্ধকারে নিমজ্জিত রেখে সত্য গোপন করে দেশ শাষন করলে পরিনাম কি হতে পারে ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.