কেবলই নিজেকে খুঁজছি
মায়ের কোলে জন্মেছিলাম শিশু মানব হয়ে
একটু বুঝতে শিখলে জানলাম, আমি হিন্দু।
একটা সংকীর্ণতার দেয়াল উঠে গেল
আমার বাড়ন্ত মনে।
হিন্দুত্বের পরিচয় নিয়ে বড় হতে থাকি
আবার কখন যেন আমার মাঝে
অঙ্কুরিত হলো মনুষ্যত্ত্বের বীজ।
আমার ভেতরের সংকীর্ণতার দেয়াল ভেঙে পড়লো
এখন মানুষ আমি, সমাজের চক্ষুশূল।
যুগে যুগে মানুষেরা সমাজের
চক্ষুশূল হয়েই বেঁচে ছিলেন, বেঁচে আছেন।
মসজিদে যাই কদাচিৎ
চলতে পথে ভেতরের চাপে,
মন্দিরেও যাই কালেভদ্রে
আবৃত অথবা অনাবৃত
কোন মূর্তির সামনেই মাথাটা টলে না।
মূর্তির শৈল্পিক কারুকাজ দেখি, শরীর দেখি
চারপাশের সুসজ্জিত-উগ্রসজ্জিত লীলাপটু
জীবন্ত শরীরগুলিও দেখি।
স্বর্গে যেতে চাই না
ঐ শুঁড়িখানার মাতাল কিংবা
বেশ্যাপল্লীর নাগর হতে
আমার প্রবৃত্তি হয় না।
নরক তো এই পুরো পৃথিবীটাই
মৃত্যুর পর আমার লাশের কি হবে!
হিন্দুরা কি শ্মশানের চিতায় উঠিয়ে
বল হরি হরি বল বলে
ছাই করে দেবে নিথর দেহটাকে!
নাকি মুসলমানেরা কবর খুঁড়ে
ছুঁড়ে দেবে অন্ধ কুঠিরে!
নাকি ঘৃনায় আমার লাশ
তোমরা কেউ ছোঁবে না
কাকে, শকুনে আর কুকুরে
কাড়াকাড়ি করে ছিঁড়ে খাবে
আমার প্রাণহীন দেহটি।
তোমরা নাকে রুমাল চাপা দিয়ে
দূর দিয়ে যাবে আর ঘৃনাস্বরে বলবে-
'বেশ হয়েছে, একটা কুলাঙ্গার নাস্তিকের
এমন পরিণতিই হওয়া উচিত।
'
আর যদি আমার দেহটি দান করে যাই
কোন দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে
আমার চোখ, কিডনী, হৃদপিন্ড
শরীরের মূল্যবান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো
তোমাদের প্রয়োজনে নিজেদের শরীরে ধারণ করবে!
নাকি মানুষের চোখে দেখলে
সত্য দেখতে হবে,
মানুষের হৃদপিন্ড লাগালে
সত্যের সন্ধান করতে হবে বলে
তোমরা মরে যাবে
তবু ওগুলো ছোঁবে না।
তোমাদের এই সাম্প্রদায়িক পৃথিবীতে
মানুষের জন্ম নেওয়টাই ভুল
এখানে হিন্দুর জন্ম হবে, মুসলমানের জন্ম হবে
বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইহুদী, শিখদের জন্ম হবে।
এখানে ভুমিষ্ট শিশুর
মানুষ হবার মসৃন সুযোগ কোথায়!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।