স্লামডগ মিলিওনার এই বছরের অত্যন্ত আলোচিত মুভি । ইতিমধ্যেই গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার পাওয়া এবং অস্কারের জন্য লড়াকু এই মুভিটি নিয়ে অনেকগুলো পোস্ট দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্তু খারাপ লেগেছে এরকম মানুষের সংখ্যা কম, তবে সবারই যে ভালো লেগেছে তা নয়। তবে সিনেমার মধ্যে সামান্য কিংবা অনেক অসংগতি কেউ কেউ লক্ষ করেছেন। যেমন, সম্প্রতি অলৌকিক হাসান তার পোস্টে একটি উল্লেখ করেছেন।
ক্যাডেট কলেজ ব্লগে একজন ক্যাডেট শওকত হোসেন মাসুমের পোস্টের বিপরীতে 'স্লামডগ মিলিওনার: ভিন্নমত' নামে এক পোস্টে (যথাযথ শ্রদ্ধা বজায় রেখে) সিনেমায় দেখানো অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেছেন। অনুমতি নেয়া হয় নাই বলে লিংক দিতে পারছি না।
এত সুন্দর ছবিটা কিন্ত টাট্টিখানায়
সিনেমার কাহিনী ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছেন, দেখা কিংবা পড়ার বদৌলতে। তাই সে সম্পর্কে না বলে ভিন্ন কিছু দেয়ার চেষ্টা করি। সিনেমার পরিচালক ড্যানি বয়েল।
এপর্যন্ত অনেকগুলো মুভি পরিচালনা করে অনেকের প্রিয় লিস্টে স্থান পেয়েছেন, শানসাইন, ২৮ ডেজ লেটার মুভিগুলোর নাম ঘুরে ফিরে আসে।
মজার ব্যাপার হল যে মুভিটি তাকে ইতিমধ্যেই কয়েকটি পুরস্কার এনে দিয়েছে এবং আরও এনে দিবে, সেই মুভিটি করতে তিনি আগ্রহি ছিলেন না। প্রথমে যখন তাকে স্ক্রিপ্ট পড়তে দেয়া হয়,তিনি 'না' করে দেন 'মিলিওন ডলার' শো'র উপর সিনেমা করবেন না বলে। পরে স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে সাইমন বিওফেকে দেখে রাজী হন। সে ২০০৬ সালের কথা।
এর আগে সাইমন ভারতে তিনবার এসে বস্তির জীবনযাত্রা দেখে গেছেন।
মুভির বাজেট ঠিক করা হয়, ১৫ মিলিয়ন ডলার কিন্তু প্রাথমিক প্রযোজন কোম্পানি সিলেডর ফিল্ম এবং ফিল্ম ফোর এর জন্য এই ব্যয় অত্যাধিক হওয়ায় পরবর্তীতে ফক্স এবং ওয়ার্নার যোগ দেয়। শ্যুটিং শুরু হয় ২০০৭ এর নভেম্বরে। এর আগে চরিত্র নিয়োগের কাজটি দক্ষ হাতে শেষ করা হয়। নায়ক চরিত্রের ডেভ প্যাটেল কিন্তু জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন লন্ডনে।
প্রায় সব চরিত্র ইন্ডিয়া থেকে নেয়া সত্তেও নায়ককে বাইরে থেকে নেয়ার কারন সম্পর্কে পরিচালক বলেন, বলিউডের নায়করা বেশী স্মাট এবং হিরোইক, কিন্তু সেই পার্সোনালিটি পাননি যা তিনি খুজছিলেন। সো....। অবশ্য নায়িকা ইন্ডিয়ান মডেল যিনি এর আগে কোন ফিল্মে অভিনয় করেননি।
স্লামডগ মিলিওনার যতটা বিদেশী ছবি তার চেয়ে বেশী বলিউডি। সোজা কথায়, 'বিদেশী পরিচালকের বলিউডি মুভি'।
এর যথেষ্ট কারনও আছে, মুভির কো ডিরেক্টর হিসেবে পাচজন ইন্ডিয়ান ছিলেন, তার একজন আবার পুলিশের কনস্টেবল চরিত্রটির নির্মাতা। তাছাড়া, দেওয়ার (১৯৭৫), সত্য (১৯৯৮), কোম্পানী (২০০২) এবং ব্লাক ফ্রাইডে (২০০৪) মুভিগুলো দেখেই ইন্ডিয়ান আন্ডারওয়ার্ল্ডের ধারনা লাভ করেছিলেন পরিচালক। বেশীর ভাগ শ্যুটিং মুম্বাইয়ে হয়েছে, একটা বড় অংশ হয়েছে বস্তিতে। নাম জুহুর শান্তিটাউন।
আলোর নিচে যেমন অন্ধকার থাকে তেমনি ১৫ মিলিয়ন ডলারের এই মুভির ও সামান্য অন্ধকার আছে।
ছোটবেলার লতিকা রুবিনা আলীকে পারিশ্রমিক দেয়া হয়েছিল ৫০০ পাউন্ড আর ছোটবেলার সালিম, আজহারউদ্দীনকে দেয়া হয়েছিল ১৭০০ পাউন্ড, বাৎসরিক হিসেবে। ইউকে নিউজপেপার 'টেলিগ্রাফ' অনুযায়ী আজহার উদ্দীনের ঘর গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা এখন ত্রিপলের নিচে থাকে। তাদের বাসস্থানও পরিবর্তিতি হয় নি।
সব মিলিয়ে স্লামডগ মিলিওনার ভালো মুভি, তবে সামান্য খুত থেকে যায়, আমরা টেররিস্ট নই , বরং শান্তিপ্রিয় মুসলমান,এই কথাকে আমরা যত প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছি পশ্চিমারা যেন ততটাই ছড়িয়ে দিচ্ছে, বদ্ধমুল করে দিচ্ছে। জানিনা এ থেকে মুক্তি কবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।