আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দলবাজি এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং মন্ত্রীদের ফাউল খেলা -- সাদেক খান

নিরুপমা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের পর এবার ফাউল করলেন, লেং মারলেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। দু’জনেই আইনজ্ঞ এবং রাজনৈতিক জীবনে দলীয় প্রচারযুদ্ধে লেং মারতে অভ্যস্ত। মন্ত্রিত্ব গ্রহণের সময় শপথ নিয়েছেন ‘কাহারও প্রতি অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া’ সরকারি দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু লেং মারার স্বভাব ছাড়তে পারেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্য এবং চোরাগোপ্তা নানামুখী নির্বাচনোত্তর দলীয় সহিংসতার দায় চাপিয়েছিলেন বিরোধী জোটের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ওপর।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী তো নয়ই, আওয়ামী মহাজোটপন্থী শান্তিপ্রিয় ব্যক্তিরাও তাকে বিশ্বাস করেনি, দলীয় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের নিরস্ত্র করতে তাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মৃদু তিরস্কার করেছেন বলে প্রকাশ। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ অবশ্য বিরোধী দলের ভাবমর্যাদা নস্যাতের মন্ত্রীপদবাচ্য দলবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন আরো চতুরতার সাথে। সাংবাদিকদের ডেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘মানি লন্ডারিং’ বা মুদ্রাপাচারসংক্রান্ত একটা মামলা তদন্তকারী প্রতিনিধিদলের বরাত দিয়ে বলেছেন, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১২ জন ২০ কোটি ডলার (১ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা) ঘুষ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে জোট সরকারের মন্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা আছেন।

এখন এ অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশের সাহায্য চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে সাহায্য চাইতে মার্কিন কর্মকর্তারা গত ১১ জানুয়ারি (জরুরি অবস্থা জারি দিবস!) আইনমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রণালয়ের (ফেডারেল জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট) মুদ্রা পাচারসংক্রান্ত শাখার উপপ্রধান লিন্ডা এম স্যামুয়েল এবং মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র স্পেশাল এজেন্ট ডেবরা হেপ্লেভট। আরো ছিলেন যুক্তরাজ্যের ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের পরামর্শদাতা বা কনসালট্যান্ট ফেরদৌস খান। সাংবাদিকদের কাছে আইনমন্ত্রী আরো প্রকাশ করেন যে ওই দুই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, কোকোসহ ১২ ব্যক্তি সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ২০টি দেশে এ অর্থ গ্রহণ করেছেন।

তবে আইনমন্ত্রী এই ঘুষ লেনদেনের সাথে জড়িত অন্য কোনো দেশ বা কোকোর বাইরে এ প্রক্রিয়ায় জড়িত কারো নাম বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, বিষয়টি যেহেতু তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে, তাই কারো নাম বলা ঠিক হবে না। ঘুষের নামে যে অর্থ নেয়া হয়েছে তা উদ্ধার করতে মার্কিন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। এ সহযোগিতার জন্য আইন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশের এ বিষয়ে সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রের কেন প্রয়োজন সেটা ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী বিবিসিকে বলেন, ‘যেসব কোম্পানি এখানে কাজের জন্য এসেছে তাদের কাছ থেকে মন্ত্রী বা যেসব ব্যক্তি নিজেদের পদ বা চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্পর্কের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যেসব টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন, সেসব টাকা-পয়সা ও সম্পদ জব্দ করে (তাদের) দেশে ফিরিয়ে নিতে তারা সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরাও বলেছি তাদের সহযোগিতা করব। তারা ইতোমধ্যে আমাদের কাছে একটি তালিকা দিয়েছেন। কার কোথায় কী পরিমাণ টাকা আছে, কোথায় বাড়ি করেছেন বা বিভিন্ন দেশে ভবন নিয়েছেন সেটার। ’ মোটা দাগে যা বোঝা গেল তা এই যে, বাংলাদেশের একাধিক প্রকল্পের ঘুষের টাকার যে হদিস যুক্তরাষ্ট্রের মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ খুঁজে বের করেছে, সে টাকা জব্দ করে মার্কিন তহবিলে জমা করার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ যাতে বাদ না সাধে, ওই টাকার ওপর পাল্টা দাবি না করে বসে, সে জন্যই ওই প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশে আগমন।

তাদের হয়েই আইনমন্ত্রী ওই টাকার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দাবির সাফাই গেয়েছেন। বলেছেন, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকের মাধ্যমে কিছু ঘুষের টাকা (যার মালিক প্রেরক অ্যাকাউন্টহোল্ডার বা প্রাপক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার, আর জব্দ করার মালিক যে প্রকল্পের বাজেট থেকে ঘুষের উপরি সরানো হয়েছে সেই প্রকল্প কর্তৃপক্ষ) সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য দেশে গিয়েছে, সেহেতু মার্কিন কর্মকর্তারা তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ জন্য তারা এটা চিহ্নিত করে মামলা করেছেন এবং ওই অর্থ উদ্ধারে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ওই ঘুষের টাকার প্রাপক সিঙ্গাপুর বা অন্য কোনো দেশে বাংলাদেশী নাগরিকের অ্যাকাউন্ট হয়ে থাকলে সে টাকা ফেরত আনতে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা বর্তমান সরকার ব্যবস্থা নেয়নি বা নেবে না কেন, সে কথা ব্যাখ্যা করে বলা হয়নি। আইনমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যদি চিহ্নিত হয় যে তারা ঘুষ নিয়েছেন, তাহলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(বিদেশে) তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ‘প্রয়োজনে আমাদের সরকারও তদন্ত করবে। ’ আইনজ্ঞসুলভ সুবিবেচনা সহকারেই তিনি কথাগুলো বলেছেন। তবে মার্কিন এফবিআই প্রদত্ত ১২ জনের তালিকার মধ্য থেকে তদন্তসাপেক্ষে আর কারো নাম প্রকাশ না করে শুধু সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর নাম প্রকাশ যে দলবাজির তাগিদেই ঘটেছে, সেটাও কারো বুঝতে বাকি নেই। ঘটনা নতুন নয়।

জার্মানির সিমেন্স কোম্পানি এখন বিদ্যুৎ-বেতার-যন্ত্রবুদ্ধির ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানি। অনেক মার্কিন বিশেষজ্ঞ কোম্পানিকে কিনে নিয়ে তার বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছে সিমেন্স। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ডাকসাইটে কোম্পানির বিফল প্রতিদ্বন্দ্বিতার জেরে সিমেন্সের বাণিজ্যিক সাফল্যের পেছনে বিশ্বের নানা দেশে মোটা ঘুষ দিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা আদায়ের কৌশল ফাঁস করেছে মার্কিন তদন্তকারী গোয়েন্দারা। মার্কিন ফরেন করাপ্ট আইনে আন্তর্জাতিক ঘুষ গ্রহণকারী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিমেন্স কোম্পানি অন্য দেশসহ বাংলাদেশে ঘুষ লেনদেনের অপরাধ স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে হলফনামা দিয়েছে।

২০০১ সালের মে থেকে ২০০৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত ৫৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৯ মার্কিন ডলার ঘুষ দিয়েছে সিমেন্স বাংলাদেশে, যার একটি বড় অংশ সিঙ্গাপুরের ব্যাংকে জমা পড়েছে। এর একটি পেমেন্ট মার্কিন ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে। কার্যত মানি লন্ডারিং আইনের সূত্র ধরেই মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। তদন্ত করেছে এফবিআই’র ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিস। এফবিআই’র এই অনুসানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহায়তা করেছে বলে মার্কিন আইন মন্ত্রণালয় আদালতকে জানিয়েছে।

‘বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী’ ওই ঘুষের টাকার তদন্তে সহায়তা দিয়েছে এবং তদন্তলব্ধ বিষয়াদি সম্পূর্ণ অবহিত হয়ে দুদক প্রধান সংসদ নির্বাচনের আগেভাগে হঠাৎ করেই কোকোকে জড়িয়ে এ সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশে দ্বিধাবোধ করেননি। অথচ ওই ‘ঘুষের টাকা’ দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ বা ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করেননি কেন, তার জবাবদিহি জাতীয় সংসদ তলব করবে কি? এ দিকে আইনমন্ত্রীর ‘কিউ’ পেয়ে বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মাধ্যমে জিয়া পরিবারবিদ্বেষী প্রচারবাদ্যের ধুম শুরু হয়েছে। তার আরো রসদ জুগিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকের মাধ্যমে প্রেরিত বাংলাদেশের প্রতাপশালী ব্যক্তি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ঘুষের টাকা ফেরত দাবি করে মার্কিন আদালতে মামলার খবর। ৯ জানুয়ারি প্রদত্ত একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট আদালতে দায়েরকৃত এই মামলার কথা জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ ফ্রেডরিক বলেন, গত ৮ জানুয়ারি মামলা গৃহীত হয়েছে। জার্মানভিত্তিক কোম্পানি সিমেন্সের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা এবং খবরটি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বিদেশী পত্রপত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

মামলা দায়েরের খবরটি ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়েছে। মামলার বিবরণে বলা হয়, ঘুষের টাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তা বর্তমানে সিঙ্গাপুরে একাধিক ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসের অ্যাক্ট অনুযায়ী এই ঘটনার বিচারকাজ করার এবং তা ফেরত পাওয়ার আইনগত অধিকার রয়েছে। মার্কিন ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিস আইন অনুযায়ী বাইরের দেশে কাজ পেতে কোনো মার্কিন কোম্পানি ঘুষ দিতে পারবে না। সিমেন্স জার্মানির কোম্পানি হলেও নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে নিবতি।

একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ঘুষের টাকা প্রদান করা হয়েছে। যে কারণে মুদ্রা পাচারের দায়েও কোম্পানিটিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটক প্রকল্প এবং নিউমুরিং টার্মিনাল স্থাপনের কাজ পায় জার্মানভিত্তিক সিমেন্স এজির স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিমেন্স বাংলাদেশ। এ জন্য ৫৩ লাখ ডলার ঘুষ দেয়া হয়েছিল। এ জন্য মার্কিন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় কোম্পানিটি।

গত ১২ ডিসেম্বর মার্কিন আদালতের এক রায়ে ৫ লাখ ডলার জরিমানার নির্দেশ দেয়া হয়। শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেমন আর্জেন্টিনা, চীন, ইরাক, ইসরাইল, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে ঘুষ দেয়ার দায়ে সিমেন্সকে এ পর্যন্ত ১৬০ কোটি ডলার জরিমানা দিতে হয়েছে। অন্য দিকে, নিজস্ব তদন্ত ও সংস্কার কাজে তাদের ব্যয় করতে হয়েছে আরো ১০০ কোটি ডলার। কাজ পাইয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করায় ‘বিজনেস কনসালট্যান্সি’র নামে কোকোসহ বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের ৫৩ লাখ ডলার ঘুষ দিয়েছে সিমেন্স। এর মধ্যে ৩০ লাখ ডলার (প্রায় ২১ কোটি টাকা) লেনদেনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে।

সিমেন্সের সাথে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিও ঘুষ প্রদান কাজে জড়িত। ওই মামলার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কোনো সংশ্লিষ্টতা বা প্রশ্রয়ের কোনো ইঙ্গিত নেই, কিংবা দল হিসেবে তখন ক্ষমতার অংশীদার বিএনপি’রও কোনো দায়দায়িত্ব নেই। কিন্তু জনমনে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তাই অপবাদি প্রচারের মোকাবেলায় তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের একটা দায় বর্তেছে। বিএনপি’র আইনজীবীরা ১১ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সিমেন্স ২০০০ সাল থেকে এ দেশে ব্যবসায় শুরু করে।

সিমেন্সের সাথে কথিত ২ লাখ ডলারের ঘুষ লেনদেন হয় ২০০১ সালের ৪ মে এবং একই বছরের ১৯ জুলাই। কিন্তু বিএনপি জোট এ সময় ক্ষমতায় ছিল না। ঘুষ লেনদেনের তালিকায় কোথাও কোকোর নাম নেই। সিমেন্সের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছিল, তাতে কোকো আসামিও ছিলেন না। সে মামলা ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিষ্পত্তি হওয়া একটি মামলার রেফারেন্স টেনে বিএনপি ও জিয়া পরিবারের ভাবমর্যাদা খাটো করার চেষ্টা চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ঘুষ নিয়েছেন, এই মর্মে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো মামলা হয়নি। কোকোর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণসংক্রান্ত সরাসরি কোনো অভিযোগও করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিভাগের শুধু অনুমান বা ধারণানির্ভর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ওপর নির্ভর করে দেশের সংবাদপত্রগুলো যে সংবাদ পরিবেশন করেছে, তা উদ্দেশ্যমূলক, আলট্রা প্রোপাগান্ডা বা অতিশয়োক্তির প্রচার। যে সময়ের ঘটনা, তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল না।

তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল। তাই এ ঘটনার সূত্রপাত আগে থেকেই। আর এখন যেটি করা হচ্ছে, তা দেশকে ছোট করার জন্য করা হয়েছে। ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম বলেন, এখানে একটি অভিযোগ শোনা গেছে, সিমেন্স বা চায়না হারবার টাকাটা দিয়েছে। আমেরিকার একটি ব্যাংক থেকে টাকাটা সিঙ্গাপুরে গেছে।

ধারণা করা হয়, সিঙ্গাপুরের ওই ব্যাংক হিসাবটা আরাফাত রহমান কোকোর। কিন্তু এখানে কোকোর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট সরাসরি অভিযোগ বা মামলা হয়নি। যেসব সংবাদপত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওই মামলা নিয়ে প্রচারের দক্ষযজ্ঞ শুরু করেছিলেন, তাদেরই একজন অনুসানী প্রতিবেদক মিজানুর রহমান খানের প্রতিবেদনে দেখা যায়, আইন ও বিচারমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও বিদায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদের জবানিতে ২০ কোটি মার্কিন ডলার পাচারের সাথে আরাফাত রহমান কোকোসহ সাবেক ১২ জন মন্ত্রীর জড়িত থাকার প্রচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন খোদ ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র। মার্কিন ফেডারেল জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের দুই প্রতিনিধির সাথে দুদক’র বৈঠককালে ২০ কোটি ডলার ও জোট সরকারের ডজনখানেক মন্ত্রীর জড়িত থাকাসংক্রান্ত মিডিয়ার খবরের বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা উষ্মা প্রকাশ করেন। তাদের বক্তব্য এ ধরনের ইস্যু এমনিতেই সংবেদনশীল।

সুতরাং সতর্কভাবে কথাবার্তা বলাই সঙ্গত। আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের অতিরঞ্জিত বক্তব্যে সরকারের বিভিন্ন মহলেও প্রতিক্রিয়া বিরূপ বলে মন্তব্য করেছেন মিজানুর রহমান খান। বিদায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল অবশ্য একটা সুখসংবাদ দিয়েছেন। দুদক কর্মকর্তাদের উদ্যোগ ছাড়াই বাংলাদেশের একটা প্রাপ্তিযোগের সম্ভাবনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওই মামলাসূত্রে। তার বরাত দিয়ে প্রকাশিত কোকো আর সাবেক ১২ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা বলে যেসব মুখরোচক জল্পনা মিডিয়ায় এসেছে, তাতে তাকে সঠিকভাবে উদ্বৃত করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন।

বলেছেন, ‘ডজনখানেক মন্ত্রীর কথা তারা (মার্কিন প্রতিনিধিরা) বলেননি। আর আমি ২০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি আইনমন্ত্রীর প্রদত্ত বক্তব্যের আলোকেই পুনরাবৃত্তি করেছি মাত্র। তবে আমি যে বিষয়টি মূলত ব্যাখ্যা করতে চেয়েছি তা হলো, এ ধারণা অমূলক যে মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে টাকা নিতে এসেছে। তারা বরং আশ্বস্ত করেছে যে উদ্ধার হওয়া সম্পদ তারা বাংলাদেশের সরকারি কোষাগারে জমা দেবেন। ’ ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও এফবিআই’র সফররত কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে দায়ের করা সম্পদ বাজেয়াপ্তসংক্রান্ত মামলা নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশে এসেছিলেন।

আমাদের চলতি কার্যক্রম ব্যাংক হিসাবগুলোর (যেখানে বেআইনি অর্থ গচ্ছিত) বিরুদ্ধে পরিচালিত। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত নয়। ’ ‘আমরা মার্কিন বিচার বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এতে বলা হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় তিন মিলিয়ন ডলার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে। আমরা ধারণা করতে পারি, ২০০ মিলিয়ন ডলারের তথ্যটি বাংলাদেশ সরকারের, এতে তাদের তদন্তাধীন সামগ্রিক দুর্নীতির প্রতিফলন ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার তার দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচার হওয়া যেকোনো পরিমাণ অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। এ ধরনের বিষয় মার্কিন সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। ’ ওয়াশিংটনে মার্কিন আইন মন্ত্রণালয়ের দায়ের করা সম্পদ জব্দ করা সংক্রান্ত মামলাটি একটি দেওয়ানি মামলা। এটি কেবল দায়ের করা আরজির পর্যায়ে নেই। আদালত এটি গ্রহণ করেছেন।

আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, ‘ভবিষ্যৎই বলে দেবে, এ মামলায় বাংলাদেশ সরকার আদৌ কোনোভাবে পক্ষ হওয়ার প্রশ্ন আসবে কি না। তবে যারাই অভিযুক্ত হয়েছেন, তারা নিশ্চয়ই আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। ’ মামলার নথিতে ৬ জানুয়ারি হলফনামা দাখিল করা আরজি মোতাবেক কোকো ও সিমেন্সের সাথে যুক্ত থাকা ফজল সেলিম ও জুলফিকার আলী সিমেন্স কোম্পানিকে চাপ দিয়ে চাঁদাবাজি ও ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ। আরজিতে এই চাঁদাবাজি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আরজিতে বিশেষভাবে ২০০৪ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ‘বাংলাদেশের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারগুলোকে’ ৩২ লাখ ডলারের দু’টি ব্যাংক হিসাব থেকে ঘুষ বিতরণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে যে ঘুষখোর ব্যক্তিরা ও সিমেন্স জেনেশুনেই বেআইনি তৎপরতার সাথে যুক্ত হয়। তাতে দণ্ডবিধির ৩৮৩ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা যায়। মামলার বিবরণে ঘটনাস্থল ও ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়, জুন ১৯৯৬ থেকে জুলাই ২০০১ পর্যন্ত শেখ হাসিনা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই সময়ে বাংলাদেশ টিআই সূচকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের অন্যতম বলে চিহ্নিত হয়। ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে আইন মন্ত্রণালয় ও এফবিআই বাংলাদেশ সরকারের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারগুলোর দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে।

এতে প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের বহুসংখ্যক সদস্য বাংলাদেশে ব্যবসায় করা ও সরকারি প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দিতে ঘুষ নেয় এবং এর উল্লেখযোগ্য অংশই মার্কিন ডলারে এবং মার্কিন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লেনদেন হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে কোকোকে ‘প্রটেকশন মানি’ (রক্ষাপণ) দেয়া হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর ২০০৮ সিমেন্স বাংলাদেশ ও ভেনিজুয়েলার কাজ পেতে ঘুষ দেয়ার দায় স্বীকার করে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দেয়। বাংলাদেশে সিমেন্সের পক্ষে কাজ বাগানো ও ঘুষ লেনদেন হয় ফজল সেলিম ও জুলফিকার আলীর মাধ্যমে। অস্ট্রিয়া, সাইপ্রাস ও জুরিখে ব্যাংক হিসাবকেও তারা এ কাজে ব্যবহার করেছেন।

সেলিম ও আলী উভয়ে স্বীকার করেন, নভেম্বর ২০০৪ থেকে আগস্ট ২০০৬ সালের মধ্যে সেলিম তার সিঙ্গাপুরের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড অ্যাকাউন্টে (নম্বর ০১৭৪০০১৭৭০) সিমেন্স থেকে মোট ১৮ লাখের বেশি ডলার এবং আলীর অ্যাকাউন্টে (নম্বর ০১৭৪৫৩৭৪৬) ১৪ লাখের বেশি ডলার জমা হয়। তারা দু’জনেই স্বীকার করেন, এই তহবিল তারা বাংলাদেশের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন। পাদটীকায় আরো বলা হয়, মামুন বাংলাদেশে একজন শক্তিশালী ব্যবসায়ী। মনে করা হয়, তিনি কোকোর ভাই তারেক রহমানের পক্ষে ঘুষ নিতেন। তার পর তদন্ত রিপোর্ট উদ্বৃত করে বলা হয়, কোকোকে দেয়া ঘুষের টাকা সম্পর্কে সরাসরি জানতে চাওয়া হলে জুলফিকার আলী বলেন, কোকো তার কাছে ধরনা দেন এবং বিটিটিবি প্রকল্পের বিষয়ে ঘুষ দাবি করেন।

আলী এ ব্যাপারে মোঃ গিয়াসউদ্দিন মামুনের কাছে অভিযোগ করেন। মামুন তাকে বলেন, কোকো তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আলী বলেন, কোকোকে যদি চাঁদাবাজির (এক্সটরশন) অর্থ না দেয়া হতো, তাহলে কোকো সিমেন্সের বিটিটিবি প্রকল্প পাওয়ায় বাগড়া দিতে পারতেন। তাই সিমেন্সের বাংলাদেশের স্থানীয় নির্বাহী সিঙ্গাপুরে কোকোর জেডএএসজেড কোম্পানির হিসাবে এক লাখ ৮০ হাজার ডলার স্থানান্তরের কথা বলেন। কিন্তু ওই হিসাব কোকোর কি না, তা নিশ্চিত হতে আলী সময় নেন।

সাবেক অর্থমন্ত্রীর পুত্র বাবুর মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ১৮ আগস্ট ২০০৫ আলী কোকোর সিঙ্গাপুরের ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংক হিসাবে (নম্বর ১০৯৩১০১৩৯৭) ওই অর্থ জমা দেন। বিএনপি সূত্রে প্রকাশ, ব্যাংককে চিকিৎসাধীন আরাফাত রহমান কোকো বলেছেন, সিঙ্গাপুরে বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, কোকোর বিরুদ্ধে মামলা হলে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই তার মোকাবেলা হবে। আইনমন্ত্রীর মতোই আরেকটা ফাউল করেছেন নয়া হাসিনা সরকারের পানিমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। তিনি সাংবাদিকদের গায়ে পড়ে বলেছেন, বিগত খালেদা জিয়া সরকারের ‘লুটপাটের বিষয়ে’ বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা মন্ত্রিসভায় উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী নিজে কিছু না বলে এ কথা পানিমন্ত্রীর মুখ দিয়ে বলালেন কেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। বিগত প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের সময়কার ‘লুটপাট’ নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সেনাসমর্থিত ‘টাস্কফোর্স’ জোর তদন্ত করেছে। দুদক সেসব তদন্তের জের টেনে চলেছে, নিজস্ব তদন্তও চালিয়ে যাচ্ছে। নয়া সরকার আর কী বিশেষ ব্যবস্থা নেবে? নাকি, বিরোধী জোটের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অভয়বার্তাকে লঘু করার লক্ষ্যেই এই বিশেষ ব্যবস্থার হুমকি? আরো বেশি তাক লাগিয়েছেন পানিমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন এ কথা বলে যে, ভারতের কাছ থেকে গঙ্গার পানি কম পেলেও প্রতিবাদ করে লাভ নেই। যতটুকু পানি পাওয়া যাচ্ছে সেটাই বাংলাদেশের সৌভাগ্য।

আরো বলেছেন, ফারাক্কার পানি উজানে প্রত্যাহার করা হয় না। এ সব কথা তিনি ভারতের হয়ে বলছেন না বাংলাদেশের মন্ত্রী হিসেবে বলছেন, সে কথা ঠাউরে উঠতে পারেনি উপস্থিত সাংবাদিকরা অনেকেই। আসলে তিনি বশংবদ হয়ে সুর মিলিয়েছেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর সাথে। রাষ্ট্রদূত পিনাক চক্রবর্তী দাবি করেছেন, চুক্তি অনুযায়ী পানি কম দেয়া হচ্ছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ সঠিক নয়। কারণ ফারাক্কায় গঙ্গার পানির প্রাপ্যতার ওপরই নির্ভর করে বাংলাদেশের হিস্যা।

ফারাক্কার উজানে ব্যাপকভাবে সরকারি-বেসরকারি পানি প্রত্যাহারের জন্যই যে ফারাক্কায় পানির মাত্রা হ্রাস ঘটছে, আর ফারাক্কা থেকে হুগলি নদীর যোগাযোগ খালে পানি ঢালার ক্ষতিপূরণের জন্য নেপাল থেকে আগত উপনদীগুলো থেকে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি প্রবাহযোগের বিবেচনা যে গঙ্গা চুক্তির উভয়সম্মত দিগদর্শন, এ কথা দুই দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা, বৈদিশক বিশেষজ্ঞরা ও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোভাবেই জানেন। শেখ হাসিনার কাছে সবক না নিয়ে পানিমন্ত্রী ভারতীয় হাইকমিশনারের কথায় নাচতে গেলেন কেন, সেটা বুঝে ওঠা ভার। এ যাবৎ পাওয়া পানিই শুকনা মৌসুমের শুরুতে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারছে না, পদ্মাপাড়ের কোন কৃষকের কাছে জিজ্ঞাসা করে পানিমন্ত্রী এমন তথ্য প্রকাশ করলেন, সেটাও বোধগম্য নয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.