শামীমের বাবা হাজী আলাউদ্দিনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ মঙ্গলবার আবেদনটি দায়ের করেন।
যে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা হলেন- সোরারগাঁও থানার ওসি মো. আতাউর রহমান খান, ওই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ তরফদার, উপ-পরিদর্শক পল্টু ঘোষ, নারায়ণগঞ্জের বি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ।
এই চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে সোনারগাঁও থানার প্রতি হাই কোর্টের নির্দেশও চেয়েছেন আলাউদ্দিন।
ইউনুস আলী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ওই চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা মামলা গ্রহণ করেনি।
“আমরা সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করে একটি কোর্টে নিয়ে গিয়েছিলাম।
বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের ওই বেঞ্চ আবেদন গ্রহণ করেনি। ”
ফলে অন্য বেঞ্চে আবেদনটি নিয়ে যাবেন বলে জানান ইউনুস আকন্দ।
ওই আবেদনে শামীম হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনে স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতি আদালতের নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আশরাফুজ্জামান, জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তাদেরও বিবাদী করা হয়েছে।
দৈনিক যুগান্তরে গত ২৪ মে প্রকাশিত ‘আড়াই লাখ টাকা ঘুষ নিয়েও শামীমকে পিটিয়ে হত্যা করে পুলিশ’ একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।
এতে বলা হয়, গত ১৪ মে শামীমকে পুলিশ ৫৪ ধারায় আটক করে। ১৯ মে পর্যন্ত তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। ২০ মে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির না করে পুলিশ সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
শামীমকে পরে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে।
২১ মে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পরদিন তিনি মারা যান।
আলাউদ্দিনের অভিযোগ, ২৩ মে সোনারগাঁও থানায় তিনি মামলা করতে গেলে তাকে হুমকি দিয়ে বের করে দেয়া হয়। পরদিন আদালতে মামলা করতে গেলেও ওই চার পুলিশ কর্মকর্তার বাধায় তিনি তা পারেননি।
অভিযোগ তদন্তে পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও তাতে অনাস্থার কথা জানান রিট আবেদনকারী।
শামীমের স্ত্রী সাবেকুন নাহার তুহিনের অভিযোগ, মৃত্যুর আগে হাসপাতালে স্বামীর সঙ্গে দেখা করে তার দেহে নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছেন তিনি।
আলাউদ্দিন মিয়াও বলেন, তার ছেলেকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আগে পুলিশ ছয় দিন থানায় আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
“দেখতে যাওয়ার পর মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে তদন্ত কর্মকর্তা অরূপ তরফদার ৫ লাখ দাবি করেন। এর আড়াই লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ”
আলাউদ্দিন মিয়া আরো জানান, চার খুনের মামলার আসামি রাজিব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে শামীম নামে এক যুবকের কথা বলেছিলেন।
পুলিশ ওই শামীম মনে করে তার ছেলেকে আটক করে।
শামীম চলতি বছর নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় বিভাগে মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তিনি এলাকায় ড্রেজার ও পাথরের ব্যবসা করছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম দাবি করেছেন, পুলিশের নির্যাতনে শামীমের মৃত্যু হয়নি।
তবে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।