যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে, ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
যথারীতি টিউবলাইটের মতো অবস্থা আমার, নির্বাচনের উত্তাপ শেষ হয়ে যখন সরকার গঠনের উত্তাপও মাঝপথে, তখন লেখার সুযোগ পাইলাম।
দেশে গিয়েছিলাম নির্বাচনের সময়টায়, না, অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেয়া, মানে ভোটে দাঁড়ানো বা ভোট দেয়ার উদ্দেশ্যে না। বিশেষ পারিবারিক কারণেই যাওয়া, যেজন্য এমন ব্যস্ততার মাঝেই দিন গেল যে একবার ভালোমতো ব্লগেও ঢোকার সময় পেলামনা। ইন্দিরা রোডের এক সাইবার ক্যাফেতে একবেলা ঢুকেছিলাম, কিন্তু নেটের যা স্পীড ছিলো তাতে, মিনিট পনেরো অপেক্ষা করার পর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলামনা। বের হয়ে আসতে হয়েছিলো।
অথচ কত প্ল্যান ছিলো, ভেবেছিলাম সমহোয়ারের ব্লগারদের সাথে একটা আড্ডা দেয়া যায় কিনা, সচলায়তনের ব্লগারদের একটা আড্ডা হবে হবে শুনেছিলাম, সেটাতে তো যেতে পারবই ধরে রেখেছিলাম। শুভ ভাইয়ের আস্তানায় হানা দেয়ার নিয়তও ছিলো। যাবার আগে হাতে ছিলো তিন তিনটা বিয়ের দাওয়াত, একটায় আবার সিলেটে গিয়ে বৌভাতের দাওয়াতও ছিলো। তারওপর আজ আবার আবিষ্কার করলাম দেশে যাবার পর ইমেইলে আরেকজন চমৎকার মানুষের বিয়ের দাওয়াতও খোদাতালা আমার কপালে রেখেছিলেন -- শুধু খাওয়াগুলো কপালে রাখেননি!
মোটের ওপর পাঁচ দাওয়াতের মধ্যে যেতে পেরেছি মাত্র একটায়! আমার মতো ভোজনরসিকের জন্য এটা যে কতটা কষ্টের ...
১২ দিনের ছুটিতে কত পরিকল্পনা ছিলো -- কিছুই হয়নি!
শুধু অনেকদিন পর, হুম, ১৭ বছর পর ভোট দেখতে পেলাম আবার। অবশ্য হাহুতাশ করার কিছু নেই, দেশে থাকইন্যারাও ৭/৮ বছরে একবার দেখে ।
যাই হোক, ভোট হলো, নৌকার ভূমিধ্বস বিজয় হলো, উড়ে এসে জুড়ে বসা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিশ্রুতিমতোই দুবছরের মাথায় বিদায় নিলো, নতুন সরকার গঠিত হলো।
পরাজিত পক্ষ চারদল ভয়ংকরভাবে শক্ড -- বোঝাই যাচ্ছে। আমার পরিচিত অনেক বিএনপি সাপোর্টার আছে, তারা কিছুতেই মানতে পারছেনা বিএনপি ২৯ সিট পায় কিভাবে!
কাজেই, যথারীতি পরাজিত দলের লোকজন ভোটের রেজাল্ট মানতে পারলেননা। দলের নেতৃওনা, থিংকট্যাংকের রিজভী/মাহমুদ সাহেবরাও না। তাঁরা এখন নানান হিসেব কষে দেখানোর চেষ্টা করছেন যে ভোটে কারচুপি হয়েছে।
কিন্তু খুব সাধারণ কিছু খটকা মাথায় আটকে আছে। সেটাই সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।
আমি তো এবারের ভোটে কারচুপি হবার কোন সুযোগ দেখিনা!!!
মূল অভিযোগটা আসছে এরকম যে ৮৭% ভোট পড়েছে বলে যেটা দেখানো হচ্ছে সেটা ভুয়া। এখানে ১৫% - ২০% ভুয়া ভোট যোগ হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
কিন্তু আমার জানামতে ভোটগ্রহন শেষ হবার পর আর এই ১৫%-২০% ভুয়া ভোট যোগ করার কোন উপায় থাকার কথা না!
কারণ, সব কেন্দ্রেই বড় দলগুলোর পোলিং এজেন্ট থাকে বলেই জানি, এবং তাঁদের সামনেই ভোট গণনা হয়।
কাজেই কোন একটি আসনে যদি এমন কারচুপি হয়, তাহলে তো পোলিং এজেন্টরা সেটা ধরে ফেলবে!!
ভোটগ্রহন শেষ হবার পর পোলিন এজেন্টদের আড়ালে কোথাও কি ব্যালটবাক্স নেয়া হয়? নাহলে কখন ঐ বাড়তি ১৫/২০% ভোট বাক্সে ঢুকবে? কারণ গণনা শেষে তো একটা ফলাফল সব পোলিং এজেন্টকেই দেয়া হয় -- সেগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে যোগ করলেই তো বোঝা যায় যে নির্বাচন কমিশন পরবর্তীতে যোগবিয়োগে কোন জালিয়াতি করেছে কিনা।
কাজেই ১৫/২০% বাড়তি ভোট ঢুকালে সেটা ঢুকাতে হবে ভোটচলাকালীন সময়ে বা তার আগে। এমন কোন রিপোর্ট তো পাওয়া যায়নি। তাছাড়া স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স হওয়ায় এবার তো সূক্ষ্ম কারচুপিও স্থূলভাবে ধরা পড়ার কথা।
তবে টুকটাক মারামারি, ছোটখাটো হিসেবের গরমিল এমন বিশাল ব্যবস্থাপনায় হতেই পারে -- সেটা হোয়াইট নয়েজ।
তাছাড়া, চানাচুরের প্যাকেট হিসেবে যে ব্যালটপেপারগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো যে দলের সাপোর্টাররাই দুচারটা মেরে দেয়নি পরে প্রমাণ দেখানোর জন্য -- তার নিশ্চয়তা কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।