এক বনে বাঘ(আওয়ামী লীগ) আর সিংহের(বি এন পি) ভীষণ ঝগড়া শুরু হয়ে গেল অক্টোবর"২০০৬।
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,আমি হবো বনের রাজা।
সিংহ (বি এন পি) বলল,তুই কে হে! জন্মের পর থেকেই শুনে আসছি সিংহই হচ্ছে বনের রাজা। কখনো শুনেছিস বাঘ বনের রাজা হয়?”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“দিন অনেক বদলে গেছে। এখন বাঘের রাজা হওয়ার দিন।
”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“তোমার বুঝি যোগ্যতা আছে? আমার মতো এত সুন্দর কেশর দেখাও তো? থাকলে তো দেখাবে!”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“আমার শরীরে কী সুন্দর ডোরাকাটা দাগ, দেখেছ? দেখাও তো এমন ডোরাকাটা দাগ? পারবে? পারবে না। তাই বলছিলাম অনেক হাম-তাম করেছ। আর নয়। এবার ভালোয় ভালোয় আমাকে রাজা মেনে নাও। ”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“বললেই হলো! বনের পশুরা এখনো আমাকে রাজা হিসেবেই জানে।
আর কোনো সিংহ নিজেকে কখনো রাজা ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারে না। বুঝেছ মিঁয়াওর ভাগ্নে?”
নাহ্! এই বিড়ালের জন্য ইজ্জতটা রক্ষা করা গেল না। কে যে বলেছে বিড়াল বাঘের মাসি। এখন সিংহরে কাছে অপমান হতে হলো বিড়ালের ভাগ্নে বলে?
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“মিঁয়াওকে মাসি বলে মেনে নিলে তো!”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“মানো আর না মানো মিঁয়াও তোমার মাসি এটা বনের সবাই জানে। এমনকি বনের ওই পাশে যে মানুষরা থাকে, তারাও জানে।
মিঁয়াওয়ের গোষ্ঠী! আবার এসেছে বনের রাজা হতে। ভাগো!”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“তুমি ভাগো!”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“তুই ভাগ!”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“তুই ভাগ!”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“কী তুই আমাকে তুই করে বলছিস! রাজাকে তুই করে বলার খেসারত কিন্তু দিতে হবে তোকে। মনে রাখিস। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“তুই-ই তো আগে রাজাকে তুই করে বলেছিস। তোকেও খেসারত দিতে হবে।
মনে রাখিস। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) সিংহের (বি এন পি) ঝগড়ার এসময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত)। বাঘ (আওয়ামী লীগ) সিংহের (বি এন পি) ঝগড়া শুনে শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“কী নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে?”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“আমি বনের রাজা। অথচ বাঘ বলছে ও নাকি বনের রাজা। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“রাজা বদলাতে পারে না? সিংহের একাই রাজা হওয়া বাঘ মানে না।
বাঘেরও রাজা হওয়ার ক্ষমতা আছে। ”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“বনে বনে এখন এটাই একটা ঝামেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সমাধান দিতে পারে আমাদের শেয়াল রাজা (পরাশক্তিশালী দেশ)।
বাঘ (আওয়ামী লীগ) আর সিংহ দুজনই অবাক। বলে কি শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত)! শেয়ালদের আবার রাজা আছে নাকি?”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“আছে না আবার! আমাদের শেয়াল রাজাই (পরাশল্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট) বনের রাজা কে হবে তা ঠিক করে দেয়।
”
শেয়ালের (বিদেশী রাস্ট্রদুত) কথায় সিংহের (বি এন পি ) আঁতে ঘা লাগল। দাম্ভিক সিংহ বলল,“কোন বনে কে রাজা হবে সেটা শেয়াল রাজা ঠিক করে দেয়ার কে শুনি?”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“কে না জানে কূট-কৌশলে শেয়ালের চেয়ে বড় আর কোনো পশু নেই। তাই পশুদের রাজা ঠিক করে দেয়ার কাজটি শেয়াল রাজাই (পরাশক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট) করেন। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“তা তোদের শেয়াল রাজা কোথায় থাকে?”
শেয়াল বলল,“আটলান্টিকের ওপার। ”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“আটলান্টিক আবার কী জিনিস?”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“একটা মহাসাগর।
ওই মহাসাগরের ওপারে থাকেন শেয়াল রাজা। আটলান্টিকের এপারে আরেক শেয়াল থাকে। তবে ওপারের শেয়াল যা বলে,এপারের শেয়াল তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হুয়া হুক্কা করে কেবল। আমাদের শেয়াল রাজা (পরাশক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট) চাইলে বনের কোনো ছুঁচোকেও রাজা বানিয়ে দিতে পারেন। তার অনেক ক্ষমতা।
”
সিংহ (বি এন পি) বলল, “তাহলে তোদের শেয়াল রাজাকে বল, আমাকে রাজা বানিয়ে দিতে। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“বিশ্বে এখন পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। আমাদের খুদে বনটাই বা এই পরিবর্তন থেকে বাদ যাবে কেন? এতদিন সিংহরা একা রাজত্ব করেছে। এবার বাঘদের পালা। তুই তোদের শেয়াল রাজাকে বল আমাকেই এই বনের রাজা করে দিতে।
আমি তোকে আমার পরামর্শক বানিয়ে দিলাম। পারবি না আমাকে রাজা বানাতে?”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“চেষ্টা করে দেখি। তার আগে বলো আমাদের শেয়াল রাজাকে (পরাশক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট) কে কীভাবে খুশি করবে? শেয়াল রাজাকে যে বেশি খুশি করতে পারবে, সে-ই রাজা হবে। ”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“বেশ ভালো প্রস্তাব। ঠিক আছে।
রাজা হলে আমি আমার বনের অর্ধেকটা তোদের শেয়াল রাজাকে দিয়ে দেবো। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“আমি পুরো বনটাই দিয়ে দেবো। ”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) বলল,“পুরো বন দিয়ে দিলে রাজত্ব করবে কেমন করে? আমাকেই বা দেবে কী। রাজা বানিয়ে দিলে আমাকে কিছু দেবে না?”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“তোকে এই বনের সব বনমোরগ দিয়ে দেবো। ”
বাঘ (আওয়ামী লীগ) বলল,“আমি তোকে সব বনমোরগের সঙ্গে বনমুরগিগুলোকেও দিয়ে দেবো।
তোর আর খাবারের অভাব হবে না। মোরগ-মুরগির খোঁজে তোকে আর বনের এ মাথা ও মাথা ঘুরতে হবে না। আহ্হা রে! খাবারের খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে নিজের চামড়ার রঙটাই তোর বদলে গেল। কী কষ্ট তোর। তোর কষ্ট দেখলে তো আমারই চোখ দিয়ে পানি গড়ায় রে শেয়াল।
”
সিংহ (বি এন পি) বলল,“শেয়ালের জন্য আলগা দরদ দেখছি। বলি এই দরদ এতদিন কোথায় ছিল? শোন শেয়াল। বনের রাজা কিন্তু আমাকেই বানানো চাই। মনে রাখিস রাজা হওয়ার অভিজ্ঞতা কিন' কেবল আমারই আছে। ”
শেয়াল (বিদেশী রাস্ট্রদুত) মাথা নাড়তে নাড়তে বলল,“আমি বললেই তো আর হবে না।
আমাদের শেয়াল রাজার সঙ্গে আলাপ করে দেখি। তারপর জানাচ্ছি। ”
কিন্তু নতুন রাজা না হওয়া পর্যন্ত বনের রাজা কে থাকবে? বন তো আর রাজা ছাড়া থাকতে পারে না? শেয়ালের (বিদেশী রাস্ট্রদুত) পরামর্শে ততদিন একটা বুনো ষাঁড়কে (সেনাবাহিনী শাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার) বনের রাজা বানিয়ে দেয়া হলো। এই বুনো ষাঁড়ের (সেনাবাহিনী শাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার) ইয়া লম্বা লম্বা দুখানা শিঙ (জরুরী অবস্থা ও সেনাবাহিনীর সমর্থন)। মাঝে মাঝে শিঙ দুখানা (জরুরী অবস্থা ও সেনাবাহিনীর সমর্থন) দেখিয়ে বাঘ (আওয়ামী লীগ) আর সিংহকে (বি এন পি) সে ভয় দেখাতে চেষ্টা করে।
কিন্তু বাঘ (আওয়ামী লীগ) আর সিংহ (বি এন পি) এত সহজে ডরায়? উল্টো ওরা হালুম হুলুম করে। লাফ ঝাঁপ করে। কিন্তু বুনো ষাঁড়কে কিছু বলে না। বুনো ষাঁড়কে কিছু বললেই যদি শেয়াল রাজা রাগ করেন? শেয়াল রাজার মতি-গতির ঠিক নেই। কখন কাকে রাজা করে বসে ঠিক নেই।
তাই শেয়াল রাজাকে রাগাতে চায় না কেউই। বনের পশুদের মতো ওরাও অপেক্ষা করে আছে-দেখা যাক কী হয়।
শেষের অংশ আপনারা সবাই জানেন। তাই আর লিখলাম না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।