বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
পূর্বে প্রকাশের পর
........................
দোকানটি হলো নাটোর সদরের লালবাজার জয়কালী বাড়ী সংলগ্ন একটি ছোট্ট দোকান। দোকানের নাম দারিক মিষ্টান্ন ভান্ডার। দোকানীর নাম রবীন্দ্রনাথ কুন্ডু ও ননী কুন্ডু। আরো অনেক দোকানে হয়ত তৈরী হয় কিন্তু সেগুলো আসল কাঁচাগোল্লা বলা যায় না।
এ কথাটা কাঁচাগোল্লা প্রেমী এবং ঐ শহরের অধিবাসীরাই বলবে। এই দোকানদার শুধু কাঁচাগোল্লাই তৈরী করেন। এর দোকানের ভিতরে কোন খরিদ্দার কোনদিন ঢুকতে পারেনি। বাহিরে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করতে হয়। ছবি তোলা ও ভিডিও করা আমার জানা মতে নিষিদ্ধ যখন কাঁচাগোল্লা তৈরী করা হয়।
(টিভি মিডিয়া তার প্রামান্যচিত্র করতে যেয়েও পারেনি)। লোকটা প্রচার বিমুখ। তার ঐ কাঁচাগোল্লা নাটোর শহরের জয়কালীবাড়ীতে ভোগ হিসাবে আগে দেয়া হয়। আর বাদবাকী বিক্রি করা হয়। এবং এটাতে যে ভেজাল দেয়া হয় না এটা নিশ্চিত।
কারণ তার দোকানে তৈরী কাঁচাগোল্লা আজ থেকে ৩০ বছর আগে যে স্বাদ ছিল এখনও সেই স্বাদই আছে। শুধু বেড়েছে দাম। দোকানের অবকাঠামোগত কোন পরিবর্তন হয়নি শুধু পাকা করা ছাড়া।
উপকরন: প্রধান উপাদান দুধ, চিনি ও এলাচ দানা।
তৈরী পদ্ধতি: দুধকে ছানাতে পরিনত করার পর তাতে কিছু চিনি মিশানো হয় এরপর মিশ্রনটিকে একটা পাতলা কাপড়ে মধ্যে ভরে ঝুলিয়ে রাখা হয় অনেক সময়।
সেখান থেকে সাদা তরল পদার্থ চুইয়ে পড়ে। শেষে পুরো মিশ্রনটি শুকনো হয়ে গেলে নামিয়ে এলাচের গুড়া মিশানো হয় ফ্লেবারের জন্য। এরপর সেটা একটা বড় কড়াইয়ের মাঝে রেখে আগুনে জ্বাল দেয়া হয়, যতক্ষন না পর্যন্ত একটু ছোট গুটি গুটি না ধরে। সেই মিশ্রন থেকে যখন পানির পরিমান কমে যাওয়ার পরে ঠান্ডা হলে পরিবেশন যোগ্য হয়। তবে এটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া।
মূলতঃ স্বাদ নির্ভর করে কাঁচামালের গুনগতমান এবং প্রতিটি ষ্টেইজে নির্দিষ্ট সময়ক্ষেপনের উপর। অনেকে মনে করেন যে, এটা গোল্লা টাইপের কোন মিষ্টি। আসলে তা নয়।
যারা নাটোর শহরের উপর দিয়ে (ট্রেন বা বাস) যাতায়াত করেছেন তারা এই ষ্টপেজে শুনেছেন, "নাটোরের কাঁচাগোল্লা" ডাক ফেরীওয়ালার কাছে। তবে মনে রাখুন, এর সাথে আসল কাঁচাগোল্লার বিন্দুমাত্র কোন মিল নেই।
অথচ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন এই ভন্ড ফেরীওয়ালাদের কাছে। অনেকে ফলশ্রুতিতে আসল কাঁচাগোল্লাকে খারাপ বলছেন।
দাম: এর দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০টাকা মাত্র (কমবেশী)।
রং: আসল কাঁচাগোল্লা হালকা বাদামী রং এর হয়। এই রংটা আগুনে কিছুক্ষণ জ্বাল দেবার জন্য হয়ে থাকে।
অন্যদেশে এর কদর: এই নাটোরের কাঁচাগোল্লা কোন কোন সময়ে বিদেশেও গিয়েছে। অনেকেই আছেন যারা তাদের প্রিয়জনদের জন্য বিদেশে এই কাঁচাগোল্লা নিয়ে যান। শোনা যায় ইংল্যান্ডের রাণী ভিক্টোরিয়াও নাকি এখানকার কাঁচাগোল্লা খেয়েছেন। এছাড়া আমাদের আশেপাশের দেশে কখনও কখনও স্বল্প পরিসরে ব্যাক্তিগত উদ্বোগে এই মিষ্টান্ন রপ্তানী হয়েছে।
(এসব সবকিছুই পুরনো এবং মিষ্টি শিল্পের সাথে জড়িত মানুষের মুখ থেকে শোনা)
সমাপ্ত
প্রথম পর্ব
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।