টুকিটাকি ভাবনাগুলো
গত ডিসেম্বরে সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সাথে ইজরায়েলের ৬ মাস ব্যাপী যুদ্ধবিরতি শেষ হবার পরে গত ২৭শে ডিসেম্বর থেকে ইজরায়েলের ডিফেন্স ফোর্স গাজা স্ট্রীপে হামাস অধিকৃত স্থানগুলোতে বোমা ফেলে যাচ্ছে। এতে হামাসের সন্ত্রাসীরা নিহত হবার পাশাপাশি প্রায় ৪০০ লোকের বেশী মারা গেছেন যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ ফিলিস্তিনি শিশু। এদের দুর্দশা অবর্ণনীয়। ইজরায়েলের অবরোধের ফলে এমনিতেই এখানকার জনগণ খুব কষ্টে ছিল। তারপর মৃত্যুদুতের মত ইজরায়েলের এই বোমা আক্রমণ।
এই দিনটিকে ১৯৬৭ সালের আরব-ইজরায়েল যুদ্ধের পর সবচেয়ে রক্তাক্ত মনে করা হয় । বোমা হামলা এখনও চলছে।
তবে এই অবস্থার পেছনে হামাস সংগঠনের কার্যকলাপও অনেকাংশে দায়ী। গত আট বছরে তারা ৪ হাজারেরও বেশী করে রকেট আর মর্টার ইজরায়েলের বেসামরিক এলাকায় ফেলেছে।
তাদের এইসব কর্মকান্ডের ফলে ইজরায়েল এখন বোঝাতে চাইছে যে তাদের জনগণ বিপন্ন তাই হামাসকে থামানোই তাদের লক্ষ্য।
প্যালেস্টাইনের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস এবং তার দল ফাতাহর সাথে হামাসের দ্বন্দ্ব থাকায় তারাও এখন নিশ্চুপ রয়েছে। গত বছর আব্বাস হামাসের সশস্ত্র শাখাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ওদিকে মিশরও এবারে চুপ কারন হামাসের সাথে তাদেরও হয়ত কোন বনিবনা হচ্ছে না। অধিকাংশ আরব মোড়ল দেশ (যেমন সৌদি আরব) এবং পশ্চিমা দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্র্র, যুক্তরাজ্য ইত্যাদি চুপ এইসব নির্বিচারে হত্যার ব্যাপারে।
তবে এ ঘটনা বিশ্বব্যাপী জনমনে খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আজ দেখলাম বৃটেনের বাংলা টিভিতে ফান্ড রেইজিং চলছে, লোকজন দেদারসে সাহায্য করে যাচ্ছে। পপ গায়িকা এনি লেনক্স প্যালেস্টাইনীদের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে দিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা কমবে কি?
ইজরায়েলের বোমা হামলার প্রতিবাদে বেসামরিক লোকের উপর পাল্টা বোমা হামলার স্ট্রাটেজী কোনক্রমেই ধোপে টিকে না তাই এ নিয়ে প্রচার মাধ্যমে নানা রকম গল্প ফাঁদা হচ্ছে। তারা বলছে যে প্যালেস্টাইনিরা বাড়িয়ে বলছে।
আর এদিকে আরব প্রচার মাধ্যমগুলোও ইজরায়েলের লোকদের শয়তানের প্রতিমুর্তি বানাতে ব্যস্ত। আরব অঞ্চলের কজন হামাসের বোমা হামলার প্রতিবাদ করেছে? এছাড়া ইজরায়েলে সামনে নির্বাচন। সরকার এই স্টান্ট দেখিয়ে ভোট জয়ের চেষ্টা করছে এবং সাধারণ ইজরায়েলীদের বোকা বানাচ্ছে। সবখানেই প্রপাগান্ডা, পক্ষপাতিত্ব ছাড়া কোন রিপোর্টই পাবেন না।
আপনাদের তাই অনুরোধ করব গ্লোবাল ভয়েসেসের বিশেষ কাভারেজ পাতার পোস্টগুলো পড়তে যেখানে ফিলিস্তিনি ও ইজরায়েলী ব্লগাররা এ নিয়ে তাদের প্রত্যক্ষ্যদর্শী রিপোর্ট ও দৃষ্টিভঙ্গী জানাচ্ছেন।
গ্লোবাল ভয়েসেস বাংলায় বেশ কিছু আর্টিকেল বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে -সেগুলোও পড়তে পারেন।
এই ইজরায়েলী যুবকের কথাই ধরুন যে তার সরকারের অভিযানের সমালোচনা করে বলছে আমি যদি আজ একজন ফিলিস্তিনি হতাম তাহলে আমি ইজরায়েলীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতাম, এমন কি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েও। কাজেই ইজরায়েলের বর্তমান অভিযান আরও কিছু সুইসাইড বোম্বার আর সন্ত্রাসীদের সৃষ্টি করবে।
আমাদের সত্যগুলো জানা দরকার এবং চিন্হিত করা দরকার কারা ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ঐ অঞ্চলে শান্তির বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। একে অপরের প্রতি ঢালাও বিষোদগার না ছড়িয়ে আমাদের সত্যকে তুলে ধরে এইরকমের ঘটনা প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়া উচিৎ।
আরও কিছু ব্লগের লিন্ক রইল এখানে:
এন্থনী লোয়েনস্টাইন
ফিলিস্তিনি ব্লগার হাইতাম সাব্বাহ
দ্যা অবজার্ভার্স
[উপরের গ্রাফ এই রিপোর্ট] থেকে গৃহীত
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।