আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উদার গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশ - এর সংজ্ঞা কি ?



নতুন পরিচয়ে পরিচিত করা হচ্ছে বাংলাদেশকে। ৭৫ এর নৃশংস হত্যাকান্ডের পরই বাংলাদেশে ঝেঁকে বসে রাজাকাররা। শাহ আজিজ, ড:আলীম আল রাজী, খান এ সবুর, মশিউর রহমান যাদু মিয়ারা পাখনা মেলে। তৎকালিন খুনি স্বৈরশাসক জে: জিয়ার সামনে একটাই আকাংখা ছিল, পরাজিত দালাল শক্তিকে একত্র করে রাষ্ট্রক্ষমতার স্থায়ী ইজারা নেয়া। এবং সেটাই করেছিলেন তিনি।

এর পর থেকেই ধর্ম কে ক্ষমতায় থাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে যেতে থাকে বাংলাদেশে। আরেক স্বৈরশাসক হো মো এরশাদ ক্ষমতায় এসে সেই একই কায়দা অনুসরণ করেন । শহীদ বুদ্ধিজীবি ডা: আব্দুল আলীমের খুনী , কুমিল্লার দাগী আলবদর মওলানা মান্নান কে ধর্ম মন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে দেশে গড়ে তোলা হয় একটি নেট ওয়ার্ক। জমিয়তুল মোদাররেসীন নাম দিয়ে দেশের মাদ্রাসাগুলোতে একটা বিকল্প শক্তি গড়ে তোলা হয় , এই ধর্মীয় শক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের জন্য। রাষ্ট্রের সম্পত্তি নামমাত্র মূল্যে লীজ দিয়ে গড়ে তোলা হয় ইনকিলাব ভবন।

এই ভবন থেকে পরবর্তী সময়ে পরোক্ষ মদদ পেতে থাকে মৌলবাদি, জংগীবাদি, জামাতি শক্তিরা ও। এরশাদ ই পাশ করেন রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম সংশোধনী। এভাবেই দেশে লাই পেতে থাকে ধর্মীয় উন্মাদনার নামে একধরনের পেশীবাদ। আর এর নিয়ামক হয়ে উঠে , একাত্তরে পরাজিত সেই চক্রটি- যারা ঘাপটি মেরে বসেছিল। ২০০১ এর নির্বাচনে রাজাকার- জাতীয়তাবাদী চার দলীয় জোট জিতে আসার পরই যুক্ত হয় এই তকমাটি - উদার গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশ।

প্রশ্ন হচ্ছে উদার এর সংজ্ঞা কি ? কাকে বলে উদারতা ? মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অধিকাংশই হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। আর সেগুলো মূলত মুসলিম ডোমিনেটেড কিংডমস । সেখানে অন্য দেশের মানুষের সাথে আচরণ, প্রভু-ভৃত্যের মতো। অনেকটা সেই আদলেই গণত্ন্ত্রের ঝান্ডা উড়াবার খায়েশে এই মহলটি ব্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ কে নতুন অভিধা দিতে। আমরা জানি, মহান মুক্তিযুদ্ধ যখন সংগঠিত হয় তখন সেই সংগ্রামে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ , খৃষ্টান, গারো , হাজং ,মনিপুরী , মারমা সকল মানুষের আন্তরিক অংশগ্রহণ ছিল।

তখন কেউ মুসলিম ডোমিনেটেড কান্ট্রি বলেনি। যারা বলেছিল , তারা ছিল পাকি-দালাল। খান সেনাদের দোসর। লাখো শহীদের রক্তে গড়া সেই বাংলাদেশ এখন নব্য ডোমিনেটিং ইজম এর লীলাভূমি। তাহলে কি এই দেশও প্রভূ- ভৃত্য প্রথা চালু করে মানবতাকেই ঘায়েল করতে চায় ? এই উদারপন্থী (!) বাংলাদেশে ভেঙে দিয়েছে লালনের ভাস্কর্য ।

তারা ভেঙেছে বলাকা ভাস্কর্য। এর পর তারা মুক্তমত প্রকাশের বিরুদ্ধে আইন করার হুংকার দিচ্ছে। তারা বলেছে, এই দেশে কোনো ভাস্কর্যই তারা থাকতে দেবে না। এটাই কি উদার গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশ - এর সংজ্ঞা ? নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে , উদার গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশ তকমার দুর্বৃত্তপনা ছড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে আজকের এই বড়দিনে ঢাকার চার্চে গিয়ে খৃষ্টান সম্প্রদায়ের সমর্থন চাইছেন রাজাকার-জংগীবাদী নেত্রী খালেদা জিয়া ! না , এই দেশে কারো ডোমিনেটিং করার মানসিকতা চলতে পারে না।

এই দেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায়, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। এই দেশে মানুষ কারো ডোমিনেটিং কিংডম গড়ে তোলার চেষ্টা মেনে নেবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.