ছবিতে যাকে দেখছেন তিনি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা এলাকার বাসিন্দা। শৈশবে বড় হয়েছেন খুবই অভাব অনটনের মাঝে। দরীদ্র পিতার পক্ষে সম্ভব ছিলনা তাকে লেখাপড়া শেখানোর, তাই ষষ্ঠ শ্যেনীতে পড়াকালীন সময়ে বাড়ি থেকে রওনা হন অজানার উদ্দেশ্যে। ঢাকা শহরে এসে চলতে থাকে এক বালকের জীবন সংগ্রাম, এরপর ধীরে ধীরে জায়গা করে নেন তিনি, দুই তিন বছর তাকে লড়তে হয়েছে অস্তিত্বের লড়াই। কোন দিস খেয়ে আবার কোনদিন না খেয়ে দিন কাটিয়েছেন তিনি।
এরপর বিকালে ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন কাজ করে চালিয়ে নেন নিজের পড়াশুনা। প্রথম বিভাগে এসএসসি এবং এইচএসসি পাশ করে ঢাকা কলেজে ইকনোমিক্সে অনার্স ভর্তী হন আর টিউশনি করে চালাতে শুরু করেন নিজের জীবন। এরপর দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক সম্মান ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ফিরে যান গ্রামে। গ্রামে যাওয়ার সময় সম্বল ছিল টিউশনি করে জমানো ২০,০০০ টাকা।
গ্রামে ফিরে এ বিশ হাজার টাকায় দেড় বিঘা জমি লীজ নিয়ে শুরু করেন ভাগ্যোন্নয়নের কাজ।
প্রথম তিনি নার্সারী ব্যবসা শুরু করেন, উৎপাদন করতে থাকেন বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছের চারা। প্রথম বছর ভালই লাভ করেন তিনি। এরপর নতুন উদ্যমে শুরু করেন নার্সারীতে চারা উৎপাদন। পাশাপাশি আরও কিছু জমি লীজ নিয়ে কুল বাগান এবং ধান চাষ।
ছয় বছর পরে বর্তমানে তার নিজের ১৫ বিঘা জমি রয়েছে, রয়েছে পাঁচটি কুল বাগান এবং তিনটি নার্সারী।
তার নার্সারীতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচজন মজুর কাজ করছে। বছর শেষে লাভ কমপক্ষে তিন লাখ টাকা।
কথা বলছিলাম ছবির এই মানুষটির সঙ্গে। তিনি জানালেন, "লেখাপড়া করে আমরা সবাই যদি চাকুরীর আশায় গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যাই তবে নিজে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারব, কিন্তু আমাদের গ্রামে যে সম্পদ রয়েছে তা সুষ্ট ব্যবহার হবে না এবং গ্রামীন অর্থনীতির উন্নয়ন না করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কখনই সম্ভব হবে না। তাই আমাদের উচিৎ শুধু নিজের বে*চে থাকার কথা চিন্তা না করে পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতির কথাও চিন্তা করা।
"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।