আমি কইলাম মরিনাই; বুকের আগুনও নেভে নাই, কসম ক্ষুধিরামের। খালি কয়দিন ধইরা কর্পোরেট ভন্ডামিতে ডুইবা আছি আপাদমস্তক! কমরেড, মিছিল আইলে একটা টোকা দিয়া যাইয়েন।
আমি বিজয় দেখিনি, একাত্তরের অনেক পরে আমার জন্ম। ছোটবেলায় যতটুকু শুনেছি, জেনেছি সবই বাবা-মা'র মুখে। আমার বাবা ছিলেন পাঁচ ভাইয়ের ভেতর সবার বড়, বাকি সবার মত সবচেয়ে ছোট যেই কাকা তিনিও সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
"গেরিলা" শব্দটা মনে হলেই কেন যেন আমার সেই কাকা কে খুব মনে পরে। উনি বেঁচে নেই। দেশ স্বাধীন করেছেন ঠিকই, কিন্তু দারিদ্রের মুখোমুখি যুদ্ধে আর পেরে ওঠেননি।
মাঝে মাঝে বাসায় এলে উনার শার্ট খুলে দেখতাম, সারা পিঠ জুড়ে ডোরাকাটা কালো কালো দাগ। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ঢাকার অদূরে কোন এক অজ্ঞাত স্থান হতে তাকে পাক-হানাদার বাহিনী ধরে ফেলেছিল।
টানা তিন দিন অমানুষিক অত্যাচার করেও উনার মুখ থেকে একটা শব্দ বের করতে পারেনি ।
৬ ফুট স্ট্রাকচারের ওপর দার করানো অটুট শরীর। শরীরের মত মনের ভেতরেও ছিলনা ছিটেফোঁটা মেদ। দেশ স্বাধীন করার যে প্রাণান্ত সংগ্রাম উনি করেছিলেন, তার ছিটেফোঁটা উপস্থিত ছিল না বেঁচে থাকার সংগ্রামে। হয়তোবা স্বাধীনতা অর্জনই তার কাছে জীবনের শ্রেষ্ঠতম স্বার্থকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
মৃত্যুর পর আর কোন জীবন আছে কিনা জানা নেই; জানা নেই কাল ভোরে কেউ তার কবরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসবে কিনা!!
না হয় ফুল নেই, নেই রাষ্ট্রিয় মর্যাদা; কয়েকটা সাদা প্রজাপতি কি উড়ে বেরাবেনা একজন আরবান গেরিলার বিলীন হয়ে যাওয়া কবরের ওপর!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।