যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বকাঠামোতে গণতন্ত্র মানেই সাম্রাজ্যবাদীদের কর্পোরেট আধিপত্য মেনে নিয়েই রাজনীতি করা, বাংলাদেশে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলা তাই করে, কিন্তু তারপরও এই সাম্রাজ্যিক হেজিমনির যুগেও আধুনিক রাষ্ট্রের নিজস্ব কিছু স্বকীয়তা, সীমিত স্বাধীনতা রয়েছে তার ভিত্তিতে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের অধিকার আদায়ের বন্দোবস্ত করে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর গণবিচ্ছিন্নতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংঘাত মোকাবিলায় নিজেরা জনগণের উপর আস্থা না রেখে অযাচিতভাবে বিদেশি কূটনীতিবিদ ও জাতিসংঘের কাছে ধর্না দিতে হচ্ছে! পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে কূটনীতিবিদদের মাঝে চলছে প্রোটোকল ভেঙ্গে কে কত দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক কান গলা গলাতে পারে তার নষ্ট প্রতিযোগিতা, আম্রিকা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, থেকে শুরু করে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া , চীনের রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় শামিল! বান কি মুনের ফোন, জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ এসব যে বাংলাদেশের উপর সাম্রাজ্যবাদী নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য নিরঙ্কুশ করে এদেশকে হাইতি, কঙ্গো বানাবে তা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই, উল্টা গণবিরোধী বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, বুর্জোয়া মিডিয়া বাইরের এই অবৈধ হস্তক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে নিজেদের বহিশক্তির গোলাম হিসেবে হাজির করছে। তাদের একমাত্র যুক্তি এটা দুই বিবদমান রাজনৈতিক জোটের সংঘাত থেকে দেশকে বাঁচাবে, কিন্তু পরাশক্তির হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে পুরাপুরি ধসিয়ে দিয়ে দেশকে যে স্রেফ একটা পুতুল রাষ্ট্রে পরিণত করবে সে হুঁশ এসব দালাল এজেন্সির নাই, এদের আত্মা-মগজ এখনও উপনিবেশিক দাস বৈ আর কিছুই হয়ে উঠতে পারেনি!
বিএনপি তার জাতীয়তাবাদী রাজনীতি অনেক আগেই খুইয়ে বসেছে, বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির প্রশ্নে বিএনপির বর্তমান ভূমিকা শূন্য, তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা থেকে শুরু করে মার্কিন ও ভারতীয় আধিপত্য মোকাবিলায় বিএনপির কার্যকর ভূমিকা শূন্য, এসব প্রশ্নে বিএনপির আন্দোলনহীনতা এই দলটিকে এখন নিছকই এক সুবিধাবাদী এলিট পলিটিকাল গ্রুপে পরিণত করেছে, তাই গণরাজনীতি বিবর্জিত বিএনপি এখন জাতিসংঘের ভিত্তিতে পরাশক্তির অবৈধ হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানাতে বদ্ধপরিকর বলেই মনে হচ্ছে।
জনগণের উপর বিন্দুমাত্র আস্থা না রেখে এভাবে পরাশক্তির সেজদায় নিজেদের বিকিয়ে দিয়ে রাজনীতি করার কোন অধিকার এদেশের রাজনীতিবিদদের দেয়া হয় নাই। জনগণের তরফ থেকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতির অভিমুখ হবে দুইটি- প্রথমত দুই বিবদমান পক্ষকে অবিলম্বে নিজেরাই দেশের অভ্যন্তরেই একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসতে বাধ্য করা এবং দ্বিতীয়ত রাজনৈতিক দলগুলার বিবাদের সুযোগে পরাশক্তির নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারের যে কোন প্রচেষ্টা প্রতিহত করা। সংঘাত নিরসনে জাতিসঙ্ঘসহ বাইরের শক্তির অযাচিত হস্তক্ষেপকে এসেনশিয়ালাইজ করে যারা দেশকে পুরাপুরি উপনিবেশে পরিণত করার কাজে লিপ্ত তাদের ব্যাপারেও সজাগ থাকা জরুরী !
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।