শামিম
আমাদের সিলেট তখন ছবির মতো সুন্দর ছিলো। এতো যান্ত্রিকতা এতো ব্যস্ততা এতো ভন্ডামি কোনোটাই তেমন ছিলো না। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলির বিনিময়ে গুলির শব্দ শোনা যেত না। তখনো ক্যাম্পাসে কারো লাশ পড়েনি। আমার প্রিয় ক্যাম্পাসে তখনো ছাত্রলীগ ছাত্রদল শিবির ছাত্রইউনিয়ন বিভাজনও তেমন দ্যাখিনি।
শিকড়, থিয়াটার সাস্ট, রিম, ডিবেটিং ক্লাব, অহণা পর্ষদ- এগুলোই নিয়েই ছিলো ক্যাম্পাস। সাংস্কৃতিক বুম হয়েছিলো সেই সময়টায়। আজ এই নাটক তো কাল সেই ডিবেট। আমরা কজন বন্ধু উপভোগ করেছিলাম সেই সময়টা। আমাদের মতো করে।
কানপেতে শুনতে চেয়েছিলাম সময়ের দাবীগুলো। কথাগুলো। হাসি আনন্দ চিৎকার হাহাকার আর কান্নার মুহূর্তগুলো।
সন্ধ্যার পর তখনো আমরা বন্ধুরা অন্ধকার ঠেলে ঠেলে ঘন্টা চুক্তির রিকশায় বের হতাম শহর ভ্রমণে - প্রচন্ড গরম তীব্র ঠান্ডা আর বিনাশী ঝড়ের মুখেও। কোন পথে ঘুরছি তাও জানা ছিল না, লেম্প পোস্টের আলো মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরতাম ভোরের রূপসী সিলেট দ্যাখে দ্যাখে।
খুব সম্ভব এমন এক শীতের সকালেই শুনলাম শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এর নামে কোনো হলের নামকরণ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না । আমরা স্তম্ভিত হয়ে গেলাম । ঘৃণার ঢেউয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বিধ্বস্থ হলো, ছি ছি করে উঠলো । যুদ্ধাপরাধীদের আস্ফালনে আমরা কালিমাখা হলাম, ক্যাম্পাস কালিমাখা হলো ।
সেই সময়ের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যাল, আমাদের বন্ধুতা এবং কিছু গুরুত্বহীন স্মৃতি নিয়ে লিখবো ।
জহিরুল সিদ্দিকী (শামিম)
মনাশ ইউনির (মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া) রসায়ন বিভাগে ইলেকট্টোকেমেস্ট্রিতে গবেষণারত।
(পরের পর্ব: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় - বন্ধুত্বের দিনগুলো : পর্ব ১)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।