দেশের শেয়ারবাজারে অব্যাহতভাবে দরপতন চলছে। ফলে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম তলানিতে ঠেকেছে। বাজারের মূল্য আয়ের অনুপাত (পিই) অনেক নিচে নেমে গেছে। দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে অনেক।
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাজারের নিম্নমুখী এই অবস্থা বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তাঁরা বলেছেন, শেয়ারবাজার খুবই সংবেদনশীল একটি ক্ষেত্র। খুব সামান্য বিষয় বিনিয়োগকারীদের আস্থা নড়চড় করে দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। তাই তাঁরা নতুন করে বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। অন্যদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও তুলনামূলক অনেক কমে যাওয়ায় বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আরও বলেছেন, গত সপ্তাহে বাজারে সার্বিক মূল্য আয়ের অনুপাত নেমে দাঁড়িয়েছে ১০.৫২। এ অবস্থায় বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে অনেক আকর্ষণীয় পর্যায়ে চলে এসেছে, যা বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত সময় বলেও মনে করেন তাঁরা। এ অবস্থায় বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তাঁরা।
সার্বিক বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আজ সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৩ পয়েন্ট কমে ৩৬১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ দিন সূচকের পতন ঘটল বাজারে।
আজ ডিএসইতে ১৩৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত দুই দিন এই পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আহমেদ রশিদ লালী প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমরা কঠিন সময় পার করছি। দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না থাকায় বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও কমিয়ে দিচ্ছে।
ফলে বাজারে পতনোন্মুখ অবস্থা অব্যাহত রয়েছে। ’
আহমেদ রশিদ লালী আরও বলেন, সংসদের চলতি অধিবেশনে ‘স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথককরণ) আইন’ পাস হতে পারে। এটা হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও আস্থার সঞ্চার হবে, যার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে দেখা যাবে।
শেয়ারবাজারের নিম্নমুখী এই অবস্থার জন্য দেশের সার্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করছেন বাজারবিশ্লেষক ও বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মো. মুসা। তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল শেয়ারবাজারেই নয়, সার্বিকভাবে সব ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট ঘোষণা। তাদের ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের আশানুরূপ না হওয়া শেয়ারবাজারে নিম্নমুখী অবস্থার পেছনে কাজ করছে।
স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন পাসের বিষয়ে মো. মুসা বলেন, ‘ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন পাস হলে রাতারাতি কিছুই হবে না। স্বল্পমেয়াদে এর ফল পাওয়া যাবে না। ’ তবে আইনটি পাস হলে দীর্ঘমেয়াদে সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।