আহসান মোহাম্মদ
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটছে না। বিএনপি’র সাত দফা দাবির মধ্যে আবার দুই নেত্রীর বৈঠক নতুন করে আলোচনায় এসেছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এবার বৈঠকে বসতে আগ্রহী হয়েছেন। খালেদা জিয়া আগেই ব্যারিস্টার রফিক উল হকের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। এখন বৈঠক অ্যাজেন্ডাভিত্তিক হবে, না সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
তবে নেপাল, ভুটানের মতো কয়েকটি দেশ ছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত দুনিয়ার সব দেশের রাষ্ট্রদূতরা যেভাবে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানোর চেষ্টা-তদবির করছেন, তাতে বৈঠক একটা হবে বলে আশা করা যায়। এর আগে দুই নেত্রীর আইনজীবী ব্যরিস্টার রফিক উল হক যখন প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। এখন সাদা চামড়ার লোকজন বলায় আগ্রহী হয়েছেন। যা-ই হোক, তবু একটা বৈঠক হোক। বৈঠকে দুই নেত্রী নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে একটি সমঝোতায় আসতে পারলে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে চার দল ও চৌদ্দদলীয় জোটের মধ্যে হবে।
নিঃসন্দেহে সে নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া উত্তরণের স্বার্থে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো একতরফা নির্বাচন যে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ নেতারা যদি অনুধাবন করতে পারেন। তবে তা হবে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক। এ ছাড়া ড়্গমতায় যাওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
শুধু আওয়ামী লীগ কেনো, জাতীয় পার্টিও কম আত্মবিশ্বাসী নয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ এখন কবে বঙ্গভবনে যাবেন সে ব্যাপারে অধীর অপেড়্গায় আছেন। তার এ আকাঙ্ক্ষা সুপ্ত নয়, প্রকাশ্য। এ ব্যাপারে এরশাদের সাথে আওয়ামী লীগের একটি চুক্তিও হয়েছে বলে এরশাদ জানিয়েছেন। এরশাদ একটি দৈনিকের সাথে সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সে সাক্ষাৎকার থেকে কিছু অংশ তুলে ধরা যাকঃ
“নির্বাচনের ফলাফল আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হলে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে পার্টনারশিপ কেমন হবে তা কি ঠিক হয়েছে?
- হ্যাঁ, এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে মোটামুটি সমঝোতা হয়েছে। পাওয়া আসনের আনুপাতিক হারে আমরা মন্ত্রিত্ব পাবো। আশা করি এ ব্যাপারে সমস্যা হবে না।
আপনাকে রাষ্ট্রপতি করার বিষয়ে জোটের প্রধান দল রাজি আছে কি?
- হ্যাঁ, ২২ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে আমাকে রাষ্ট্রপতি করার কথা আছে। আমরা মনে করি, সে চুক্তি এখনো বহাল আছে।
তাহলে আপনি আশা করছেন আগামীতে আপনাকে বঙ্গভবনে দেখা যাবে···
- আল্লাহর রহমত হলে অবশ্যই আমাকে আরেকবার বঙ্গভবনে দেখা যাবে।
বর্তমান সরকার সেনাসমর্থিত। সাবেক সেনাপ্রধান হিসেবে আপনার দল বিশেষ আনুকূল্য পাচ্ছে বলে কথা উঠেছে। এটা কি ঠিক?
- আমি সেনাপ্রধান ছিলাম এবং বর্তমান সরকার সেনাসমর্থিত এটা ঠিক। এ কারণে একটু সুবিধা পাওয়ারই কথা।
কিন্তু একজন সাবেক সেনাপ্রধান হিসেবে আমার সাথে সম্পর্ক ভালো থাকলেও তারা আমার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আনুকূল্য দেখাচ্ছে এটা ঠিক নয়। আমার দলে দুর্নীতিবাজ নেই, আমাদের নেতারা ক্লিন বলে গ্রেফতার হননি। কিন্তু আমাকে তো এখনো মামলায় হাজিরা দিতে হচ্ছে। আগামী দিনও একটি মামলায় হাজিরা দিতে হবে। ৬ বছর জেল খেটেছি।
আর কত?”
এরশাদ জোট প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া। আর সে জন্যই জোট। (আমার দেশ ১২ নভেম্বর ০৮)
এরশাদের সাক্ষাৎকার থেকে আমরা মোটামুটি বুঝলাম বর্তমান সেনাসমর্থিত সরকারের কাছ থেকে তিনি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন। এরশাদকে এ সরকার কেন সুবিধা দিচ্ছে? তিনি কি শুধুই একজন সাবেক সেনাপ্রধান হওয়ার কারণে। নাকি চারদলীয় জোটের পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয় একটি সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে মহাজোটকে ড়্গমতায় আনার চেষ্টা চলছে এটি কি সে প্রক্রিয়ার অংশ।
আমরা জানি না। তবে এরশাদের বক্তব্যে এমন সন্দেহ আরো বাড়ছে।
এরশাদ-আওয়ামী লীগ সম্পর্ক নতুন নয়। এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের অতীত। ’৮২ সালে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা নেয়ার পর প্রথম তিনি পরোক্ষ অভিনন্দন পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে।
’৮২ সালে এরশাদের ক্ষমতা দখল প্রশ্নে শেখ হাসিনার মন্তব্য ছিলঃ ‘আই অ্যাম নট আনহ্যাপি’। এরশাদের নয় বছরের ড়্গমতা আঁকড়ে থাকার ক্ষেত্রে প্রথম টনিক হিসেবে কাজ করছে শেখ হাসিনার এই বহুল আলোচিত মন্তব্য। সামরিক আইন প্রশাসকের খোলস বদলে তিনি যখন প্রথম রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তখন সেই রাজনৈতিক দলের ভিত্তি রচনার কাজটি আওয়ামী লীগ তৈরি করে দিয়েছে। ’৮৬-র নির্বাচনে যারা অংশ নেবে তারা জাতীয় বেইমান বলে চিহ্নিত হবে এমন ঘোষণা দেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেখ হাসিনা সে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। মওদুদ আহমদ তার বইয়ে শেখ হাসিনার সাথে এরশাদের লং ড্রাইভের সম্পর্কের যে বিবরণ দিয়েছেন, তা থেকে স্পষ্ট হয় এ সম্পর্কের ভিত্তি অনেক মজবুত ও শক্তিশালী।
এরশাদ জানেন শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের পক্ষে তাকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। এ কারণে এরশাদ তার বিরম্নদ্ধে পরিচালিত নয় বছরের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে এখন কোনো গুরম্নত্বই দিতে চান না। এ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের কর্মী মারা গেলেও এরশাদ সে দায়িত্ব নেননি। ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগ নূর হোসেন দিবস পালন করে। এর এক দিন পর দেয়া সাড়্গাৎকারে এরশাদ বলছেন, নূর হোসেনের হত্যার জন্য তো আমি দায়ী নই।
তাকে হত্যা করেছে ওরা নিজেরাই, যারা একটি লাশ চেয়েছিল। এরশাদের দাবি অনুযায়ী নূর হোসেনকে আওয়ামী লীগ নিজেই হত্যা করেছে। এর কী জবাব দেবেন শেখ হাসিনা আমরা জানি না। তবে এ দেশের মানুষ জানে, নূর হোসেনের লাশের ওপর দিয়ে এ দেশে গণতন্ত্র এসেছিল। আওয়ামী লীগের সাথে এরশাদের এমন আঁতাত যদি নূর হোসেন জানতেন তাহলে বুকে-পিঠে আওয়ামী লীগ সমর্থক এ ইতিহাস হয়ে যাওয়া ব্যক্তি ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লেখা নিয়ে রাজপথে হয়তো নামতেন না।
এরশাদ তাহলে ঠিকই বলেছেন- ‘নূর হোসেনের হত্যার জন্য তো আমি দায়ী নই। ’ তাহলে কারা দায়ী? যারা এরশাদের সাথে আঁতাত করে আবার নূর হোসেনদের মতো কর্মীদের মাঠে নামিয়েছিলেন তারা কী? শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কি এ দাবি মেনে নিয়েছেন? এখন পর্যন্ত এরশাদের এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করেনি আওয়ামী লীগ।
এরশাদ দাবি করেছেন আমাদের নেতারা ক্লিন বলে তারা গ্রেফতার হননি। শুধু তার নেতারা কেনো তিনিও কি কম ক্লিন? এক-এগারোর সরকার নোংরা রাজনীতিবিদদের ক্লিন করানোর প্রচেষ্টায় খালেদা, হাসিনা, নিজামী, মুজাহিদ- সবাইকে কারাগারে পাঠিয়ে ছিলো। কিন্তু এরশাদকে যেতে হয়নি।
কারণ তার গায়ে কোনো ময়লা নেই। কিন্তু সম্প্রতি উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়ে ‘জনতা টাওয়ার’ যে সরকারের সম্পত্তি হয়ে গেল এবং রওশন এরশাদসহ তাদের দলের অনেকের জরিমানা হলো, সে দায়ভার থেকে জেনারেল এরশাদ কিভাবে দায়ভারমুক্ত হবেন? কিভাবে ক্লিন থাকবেন? অবশ্য আওয়ামী লীগের মতো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে থাকলে ময়লা লাগার কেউ কোনো অভিযোগ করবেন না। এমনকি সুশীলসমাজ বা মিডিয়া, কেউ না। সবার চোখে এরশাদ এখন ক্লিন। আর বর্তমান সেনাসমর্থিত সরকার এমন ক্লিন লোককে তো সুবিধাই দেবে কারাগারে পাঠাবে কেন? এমন লোকেরই তো রাষ্ট্রপতি হিসেবে মানায়।
তা-ই না। তাহলে দেখা যাচ্ছে শেখ হাসিনার গায়ে দুর্নীতির নোংরা লেগেছে এ কারণে কারাগারে যেতে হয়েছে। কিন্তু এরশাদ একজন নিষ্কলুষ দুর্নীতিমুক্ত লোক এ জন্য আগামী নির্বাচনের পর তাকে রাষ্ট্রপতি বানাতে হবে। স্বয়ং শেখ হাসিনা এরশাদের সাথে এ চুক্তি করছেন বলে দাবি করেছেন এরশাদ। তবে এরশাদ এ কথাও বলেছেন তিনি মহাজোট করেছেন কোনো আদর্শিক কারণে নয় নিখাঁদ ড়্গমতায় যাওয়ার জন্য।
তিনি আশা করছেন এবার মহাজোট ড়্গমতায় যাবে আর আওয়ামী লীগের সাথে তার চুক্তি অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রপতি হবেন। এরশাদের ভাষায় আল্লাহর রহমতে তাকে বঙ্গভবনে দেখা যাবে।
এবার এরশাদের এ আশা পূরণের দৃশ্যপটটি আমরা একটু কল্পনা করিঃ বাংলাদেশের নয় বছরের সামরিক শাসক, যিনি স্বৈরাচার হিসেবেও পরিচিত, তিনি বাংলাদেশের ১৬তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। সে শপথ অনুষ্ঠানে হাস্যোজ্জ্বল শেখ হাসিনা উপস্থিত আছেন। একজন স্বৈরাচারকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করায় বেগম খালেদা জিয়া সে অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টামণ্ডলীর অনেকে উপস্থিত আছেন। কিন্তু একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি আসছেন কি না, সে দিকে সবার দৃষ্টি । তিনি হলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। আচ্ছা, সাহাবুদ্দীন আহমদ কি এমন অনুষ্ঠানে থাকবেন? এরশাদের রাষ্ট্রপতি হওয়ার দাবির সাথে এমন দৃশ্য অনেকের মনে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার আগে এরশাদ যেমন রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর, তেমনি দেশের মানুষের মাঝে এখন থেকেই বঙ্গভবনে কে আসবেন সে দিকেও আগ্রহ বাড়ছে।
নিশ্চয়ই এ আগ্রহ আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। সে প্রভাব কেমন হবে তা দেখার জন্য যদি নির্বাচন হয় সে সময় পর্যন্ত আমাদের অপেড়্গা করতে হবে। দেখতে হবে দেশের মানুষ স্বৈরাচারের ইচ্ছাপূরণের এ নির্বাচনে কী সিদ্ধান্ত নেন।
সবশেষে মহাজোট নেত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য দল-জোটের নেতানেত্রীদের কাছে একটি প্রশ্নঃ আপনাদের কী মনে আছে ১৯৯০ সালের ১৫, ৭ ও ৫ দলের পৃথক পৃথক সমাবেশ থেকে একটি অভিন্ন ঘোষণা প্রচার করা হয়েছিল। সে ঘোষণার এক জায়গায় বলা হয়েছিল· ‘স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের দুঃশাসনের কবল থেকে মুক্তিকামী জনগণ এরশাদ সরকারের অপসারণের দাবিতে এবং এ দেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা ও জীবন পদ্ধতি কায়েম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষে চলমান গণআন্দোলনের সব শ্রেণী ও পেশার মানুষ এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন।
’ একই ঘোষণার অন্য জায়গায় উলিস্নখিত দল-জোটগুলো প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছিলঃ ‘অবৈধ এরশাদ সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় নির্বাচন আমরা ১৫, ৭ ও ৫ দলীয় ঐক্যজোট গ্রহণ করব না, তা রাষ্ট্রপতি বা সংসদ যেকোনো নির্বাচনই হোক না কেন। এসব নির্বাচন শুধু বর্জনই নয়, প্রতিহতও করব। ’
এ ইতিহাস তো নিকট-অতীতের। এই ইতিহাসের অন্যতম অংশীদার তৎকালীন ১৫ দলীয় জোটের নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই এখন এরশাদকে প্রেসিডেন্ট করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
আর এরশাদ নিজেকে দাবি করছেন একজন ক্লিন ব্যক্তি হিসাবে। শেখ হাসিনা বা আওয়ামীলীগ এরশাদকে প্রেসডিন্ট হিসাবে মেনে নিতে প্রস্তুত হলেও মাত্র ১৭ বছরের মধ্যে একজন স্বৈরশাসককে দেশবাসী প্রেসিডেন্ট হিসাবে মেনে নিতে প্রস্তুত কীনা তা দেখার জন্য আমরা নির্বাচন পর্যন্ত অপেড়্গায় রইলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।