আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনন্তকালের সঙ্গী শুধু স্বপ্নরা........



রাতের অন্ধকার অনেককে বিষন্ন ও একা করে দেয়। কিন্তু আমি যেনো দিনের আলোতেই হয়ে পড়ি বিষন্ন। একাকিত্বটাকে চরমভাবে উপলব্ধি করতে পারি এই দিনের বেলাতেই। যখন আমার চারপাশ জাগ্রত তখন আমি বুঝতে পারি আমি ঘুমন্ত। যেমন, বাস ভরতি মানুষ থাকবে কিন্তু তাতে আমি একা থাকবো।

বাহনগুলো যানজটে আটকে বিশাল সাপের মতো আকার ধারণ করবে রাস্তাগুলো, যখন গাড়ীগুলোর বিকট হর্ণের আওয়াজে সবার কান ফাটতে থাকবে তখনও আমি একা থাকবো। দিনের ঝলসানো রোদ্রে ব্যস্ত মানুষগুলোর ঘামে ভেজা শরীর থাকবে কিন্তু আমি একা থাকবো। ক্লাসে যাবো, ক্লাস ভরতি শিক্ষার্থী থাকবে কিন্তু আমি একা থাকবো। এ পৃথিবীতে কেউ একা নয়। এ গাছ একা নয়।

তারতো ডাল-পালা আছে। আছে ফল, আছে ফুল, এ ফুলের জন্য আছে ভ্রমর। এ সাগর একা নয়, তার তো দ্বীপ আছে, আছে তার গহীনে অনন্ত রহস্য। সবুজ সমারহে আবৃত এ বনও একা নয়। বিশাল আকাশ!! সেও তো একা নয়।

তার আছে চাঁদ, আছে জলজল করতে থাকা তারারা, আছে বিশাল সূর্য, আছে মেঘ, আছে বৃষ্টি, আছে সেই বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দ। আর এ পৃথিবী? এ বিশাল সৌন্দর্য যে ধারন করে বসে আছে....সে কি করে একা হলো!! ভরপুর এ পৃথিবীতে আমরা মানুষগুলো তবে একা কেনো? সবাই কি নিজেকে নিজের মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখি? নিজের মনের হাজারো বেদনা, নিজের একাকিত্বকে মনের মধ্যেই আমরা গলা টিপে মেরে ফেলি। তারপর একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলি, সব ঠিক আছে। মানুষের নকল হাসিতে চলছে এ পৃথিবী। নিজেকে আমরা লুকিয়ে কৃত্রিমভাবে নিজেকে ফুটিয়ে তুলছি অন্যের মাঝে।

তাই সবার একাকিত্ব থাকছে ইতিহাসে এক অজানা অধ্যায়ের মতো করে। তারপরও এই একাকিত্ব জীবনে আমরা স্বপ্ন নিয়ে বেচে থাকি। অবসন্ন-বিষন্ন মনকে টিকিয়ে রাখে আমাদের স্বপ্ন। সারাক্ষণ স্বপ্ন দেখি কখন স্বপ্নরা দেবে ধরা। তাই আমাদের অনন্তকালের সঙ্গী আমাদের স্বপ্ন।

জীবনানন্দ লিখেছেন, পৃথিবীর বাধা-এই দেহের ব্যাঘাতে হৃদয়ে বেদনা জমে-স্বপনের হাতে আমি তাই আমারে তুলিয়া দিতে চাই! যেই সব ছায়া এসে পড়ে দিনের-রাতের ঢেউয়ের-তাহাদের তরে জেগে আছে আমার জীবন; সব ছেড়ে আমাদের মন ধরা দিতো যদি এই স্বপনের হাতে! পৃথিবীর রাত আর দিনের আঘাতে বেদনা পেত না তবে কেউ আর- থাকিত না হৃদয়ের জরা- সবাই স্বপ্নের হাতে দিতো যদি ধরা!.......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।