"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার
ঘুম থেকে উঠেই বিষু (বিষাক্ত মানুষ) নিজের সাথে সাথে তার প্রিয় ছাগল রুবেলকে দাতন করায়। বিষু গ্রামের সহজ সরল যুবক, রুবেল আর সে এই তার সংসার। রুবেলকে তার জীবনের সাথে জড়ানোর অবশ্য একটা কাহিনী আছে। বিষুর ছোটবেলার বণ্ধু ছালু যখন গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছিল যাবার বেলায় রুবেলকে দিয়ে বলেছিল, বন্ধু একে আমার নিশানা মনে করে সবসময় সাথে রাখিস। যেদিন তুই এই ছাগল হারাবি মনে করবি আমাকে হারিয়েছিস।
বিষু বলল, বন্ধু... তোর এ নিশানী...আমি জীবন দিয়ে রক্ষা করবো....একটাই কথা আছে বাংলাতে মুখ আর মন বলে একসাথেএএ....সে হলো বন্ধুউউ...বন্ধু আমার....(বিষু গান ধরলো)
আজও চোখে ভাসে বিষুর ছালুর কান্নার দৃশ্য, ছালুকে বলেছিল, কি রে বন্ধু তুই কানতাছিস?
ছালু, ওইডা কিচু না, চোহে যানি কি পর্ছে.....আ্হ্ আহ্ আহ্ (চিৎকার দিয়ে ভেউ ভেউ করে কেদে উঠল ছালু)
আজ এতদিন হয়ে গেছে কিন্তু বিষু ছালুকে ভুলতে পারে নি, ছালু কি পেরেছে রাখতে বিষুকে মনে? আসুন দেখি.....
রুবেল আজকে বেশ ভাব ধরে আছে ২দিন ক্লোজআপ টুনিপ্যাক দিয়ে দাতন করে আজকে আর ম্যাজিক টুথপাউডার দিতে দাত মাজতে চাইছে না। বিষু জোর করে করাচ্ছে, বিষুর নিজের মুখেও কুলি করার পানি।
বিরক্ত করে কুলির পানি বিষু চোখ বন্ধ করে পিছনে ফিরে দূরে ছুড়ে মারলো আর এইটাই তার জন্য কাল হয়ে দাড়ালো। সেই পানি লাগল গ্রামের চেয়্যারম্যান সুশান্ত ব্যাপারীর গায়ে। (এই লোকটা মাঝবয়সী, সুপারীর ব্যাপারী ছিল, বর্তমানে চেয়্যারম্যান হবার পর থেকে সে আর সুপারির ব্যবসা করে না এবং এখন কেউ তাকে তার পুরানো ব্যাবসার কথা বললে, সে তার উপর ক্ষেপে যায়, তবে সবাই তাকে বাপারী সাব বলেই ডাকে।
এক কথার মানুষ তিনি। অত্যন্ত হিংস্র স্বভাবের এই লোক, কয়েকটা খুনও করার রেকর্ড আছে তার। )
ওই ......(গালি) তুই আমার ছ্যাপ (থুথু) দিলি ক্যান!! , খেকিয়ে উঠল ব্যাপারী।
খিয়াল কর্তে পারি নাই ব্যাপারী সাব, সদা হাস্যো্জ্জ্বল বিষু তার সাড়ে ২৯টা দাত বের করে বলল।
খিয়াল করতে পারোস নাই !! এইবার খিয়াল করাইতাছি তোরে !! ওই মুকলা (চামচা) ওর এই ছাগলটারে নিয়া চল!! আইজকাই এইডারে খামু , ব্যাপারী বলল।
মুকলা রুবেলের দড়ি ধরে টান দিয়ে নিতে উদ্যত হল। বিষু এইবার বুঝলো এক কথার মানুষ ব্যাপারী সাব তার রুবেলকে নিয়েই যাবে!!
কেদে উঠল বিষু, পায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল ব্যাপারীর।
এবারের মত ক্ষ্যমা দেন ব্যাপারী সাব আর কুনোদিন এইরম ভুল করুম না!! আপনে আমার জান নেন কিন্তু রুবেলরে না...ও যে ছালুর সিরিতি .....
ব্যাপারী: রুবেল কেডা?আমি তো তোর ছাগলডা নিচ্ছি...
বিষু: রুবেল আমার জান, আমার প্রাণ...আমার সবকিছু...আমার বন্দু ছালুরে দেয়া সিরিতি এই ছাগলডা।
ব্যাপারী: অতো কতা বুজি না, মুকলা তোরে কয় ফির কমু নিয়া চল এই ছাগলডারে....
এরপর রুবেল আর নেই....রুবেলের শোকে বিষু কাদতে কাদতে পাথর হয়ে গেল সে সিদ্ধান্ত নিল যে সেও মারা যাবে, রুবেলই যদি না থাকলো তাহলে তার বেচে থেকে কি হবে!!
এ জীবন আর আমি থুমু না....রুবেল ...ও রুবেল...তোর কাচে আইতাছি....বলে লাফ দিতে উদ্যত হল নদীতে বিষু।
পিছন থেকে এস্কেন্দার মোল্যা (এস্কিমো) ধরে ফেলল।
আরে তুই ক্যান মরবি রে বোকা....ওরে থাম, বলল এস্কেন্দার মোল্যা
বিষু: না গো ভাইসাব আমি বাচতে চাই না....বাইচ্যা থাইকা কি লাভ! গরীবরে কেউ চায় না....
এস্কেন্দার মোল্যা: আরে মরতেই যদি চাস তবে একটা কথা কই...গরীবদের জন্য কিছু করে মর...
বিষু: মানে?
এস্কেন্দার মোল্যা: মানে তোর নামে আমি একটা বীমাপলিসি করবো এককোটি টাকার...৩মাস পর তুই মর তোর নামের টাকা সব গরীব দুঃখিদের বিলায় দিবো..তোর ও সওয়াব হলো আর গরীবরাও কিছু সাহায্য পেল।
বিষু: তাইলে ঠিকাছে আমি ৩মাস পরেই মরমু।
বিষুকে নিয়ে এস্কেন্দার মোল্যা শহরে আসলো, ইনস্যুরেন্স পলিসিও বানালো, তার জন্য একটা মহিলা সেক্রেটারীও রাখলো শাকিবাকে।
সারা শহরে নিজের হারানো ভাই বলে এস্কেন্দার মোল্যা বিষুকে পরিচয় করিয়ে দিলো। সহজ সরল বিষু কিছুই বুঝলো না এস্কেন্দার মোল্যার আসল স্বার্থ সে ভাবলো এস্কেন্দার মোল্যা মনে হয় আসলেই ভাল মানুষ।
কিন্তু এস্কেন্দার মোল্যার স্বার্থ ছিল এই যে সে বিষু মারা যাবার পর তার ইনস্যুরেন্সের সমস্ত টাকা মেরে খাবে।
এরই মধ্যে ছালুর সাথে দেখা হল বিষুর, ছালু বিষুকে চিনতেই পারলো না। বিষুর মন ভেঙ্গে গেল, এই বন্দুর জন্য সে মরতে চাইছিলো!! এইবার সে ডিসিশন নিলো সে মরবে না...ওদিকে ৩ মাস শেষ বিষু যখন মরতে চাইছে না তখন এস্কেন্দার মোল্যা আঙ্গুল বাকা করা বুদ্ধি বের করলো। বিষুকে মেরে ফেলতে হবে।
এ খবর শাকিবা জানার পর বিষুকে পালিয়ে যেতে বললো।
বিষু পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসলো। গরুর গাড়ি থেকে নেমেই বিষু দেখলো শাকিবা তার পিছু পিছু চলে এসেছে।
কি তুমি আইলা ক্যান !! বিষু বিরক্ত হয়ে বলল।
শাকিবা: তুমি বুঝো না ক্যানো আসলাম!!
বিষু ক্যাটক্যাটে ভংগিতে: না বুজি না
শাকিবা: সবাই বুঝে আর তুমি বুঝো না!! (লজ্জিত ভংগিতে)
বিষু: ও গাড়িয়াল ভাই আপনি বুঝেন?(চিন্তিত ভংগিতে)
গাড়িয়াল: হ বুজি এইডা তো আমার গরুও বুঝে(দাত কেলিয়ে)
গরুটাকে এইবার বিষু জিজ্ঞেস করলো, গরুও মাথা নাড়ালো সো বুঝে।
তুমি আমার চান্দ আমি চান্দেরই আলো...যগে যুগে আমি তোমায় বাসবো ভাল....
গান শেষ হবার সাথে সাথেই বিষুকে এস্কেন্দার মোল্যার লোকজন মারতে আসলো, তুমুল মারপিট চললো।
অবশেষে বিষু জয়লাভ করলো এবং তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।