১৪.
পুনশ্চ যাজিকা সেই তার উদ্দেশ্যে বলল, তুমি আমাদের যুক্তি ও আবেগ সম্পর্কে কিছু বল
জবাবে সে বলল :
তোমাদের চিদাত্মা রণক্ষেত্রে এক, সেই রণক্ষেত্রে তোমাদের যুক্তি ও বিচারবোধ সতত যুযুধান তোমাদের আবেগ ও ক্ষুধাবোধের বিরুদ্ধে, (কেউ কাউকে বরদাস্ত করে না কখনও)
তোমাদের চিদাত্মার শান্তিদূত হতাম যদি আমি, আমি তোমাদের বেতালা স্বভাব প্রবৃত্তির বিরোধ সংঘাতকে সংহত করতাম সুরেলা ঐকতানে, (কোনকিছুই বরদাস্ত করতাম না কখনও)।
কিন্তু কিভাবেই তা করতে পারি আমি তোমরা যদি না নিজেরাই নিজেদের শান্তিদূত হও, তোমাদের (মন্ডূক) প্রকৃতি যদি স্বভাবপ্রেমে প্রেমিক না হয় কখনও?
তোমাদের যুক্তি আর আবেগ হ’ল তোমাদের সমুদ্রপর্য্যগামী চিদাত্মার হাল ও পাল
তোমাদের হাল ও পালের একটা কিছু ভেঙ্গে পড়লে উথাল হাওয়ায় ভেসে যাওয়া ছাড়া তোমাদের আর গতি থাকে না অথবা মাঝ দরিয়ায় গতিরুদ্ধ হ’য়ে তোমরা হও বেসামাল।
একান্ত প্রভুত্বকামী যুক্তি হ’ল অবরুদ্ধ এক শক্তি আর আবেগ বাধাবন্ধহীণ হ’ল এমন এক ষ্ফুলিঙ্গ যা জ্বলে পুড়ে নিজেই খাক্ হ’য়ে যায় অনন্তকাল।
সুতরাং তোমাদের চিদাত্মা যেন তোমাদের যুক্তিকে আবেগের সমুচ্চতায় মহিমান্বিত করে আর জীবনের গান গেয়ে ওঠে
এবং তা যেন তোমাদের আবেগকে যুক্তির সারথি রথে চালিত করে আর তোমাদের আবেগ ণে প্রতক্ষিণে ফিনিক্স পাখীর মতন আত্মদহনের ভস্ম থেকে পুনর্জীবনে বেঁচে ওঠে।
আমি বলি, তোমরা তোমাদের বিচারবোধ ও তোমাদের জীবনতৃষ্ণাকে তোমাদের গৃহে দুই আদরণীয় অতিথির মত গণ্য করবে
এবং তোমরা কখনই একজনকে অন্যজনের ঊর্ধ্বে সমাদর করবে না কেননা একজনের প্রতি অতি-মনস্ক হ’লে তোমরা একই সঙ্গে উভয়ের আস্থা ও শুভেচ্ছা খুইয়ে বসবে
তোমরা যখন পর্ব্বতকন্দরে শুভ্র পপলারের শীতল ছায়ায় বসে দূর মাঠপ্রান্তরের অমোঘ অমল শান্তি উপভোগ করবে তখন তোমরা তোমাদের হৃদয়ে স্বগতোক্তি করবে ’যুক্তিতেই ঈশ্বরের আশ্রয়’
আবার যখন ঝড় ঘনিয়ে আসবে উত্তাল বাতাসে হিন্দোলিত হবে আরণ্যক বন বজ্রবিদ্যুতে নির্ঘোষিত হবে নভোমণ্ডলের রাজসিক ঐশ্বর্য্য, তখন সম্ভ্রম বিষ্মযে তোমাদের হৃদয়ে বলবে ’আবেগ আবেশেই ঈশ্বর সঞ্চরমান, আবেগ আবেশেই ঈশ্বর গতিময়’
এবং জেনে রাখবে ঈশ্বরেই তোমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস, ঈশ্বরের বনবিথীকায় তোমাদের জীবন পল্লবময়
সেই কারণেই তাই যুক্তিতেই তোমাদের বিশ্রান্তি আর আবেগ আবেশেই তোমাদের গতি বৈজয়ন্তী প্রতীতি প্রত্যয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।