মুগ্ধ প্রেমিক তাই ভালোবাসা করে না!
দৃশ্য এক.
[ আকমল সাহেবের ডাইনিং রুম। ডাইনিং টেবিল গড়ের মাঠের মতো খালি দেখে মরিয়মের মাকে ডাকবেন তিনি। ]
আকমল: কী ব্যাপার মরিয়মের মা, আজকেও কি নাশতার টেবিলে বিড়ালের নেক নজর পড়েছে নাকি?
মরিয়মের মা: না স্যার, এইরম কিছু তো অয় নাই।
আকমল: তাহলে নাশতা কোথায়? সকাল থেকে কি বসে বসে ডিম পেড়েছ?
মরিয়মের মা: সাবে যে কী কন না! আমি হাঁস-মুরগি না ঘোড়া, যে ডিম পাড়মু?
আকমল: স্টুপিড, ঘোড়া কি ডিম পাড়ে নাকি?
মরিয়মের মা: না পাড়লে ঘোড়া আসে কোথাকে।
আকমল: ধ্যাৎ, নাশতা কেন নেই সেটার শানেনুজুল বল।
মরিয়মের মা: আফায় অবরোধ ডাকছে।
আকমল: কী?
মরিয়মের মা: হ, রান্নাবাড়া সব বন্ধ, আফার হুকুম।
আকমল: কোথায় তোমার আপা?
মরিয়মের মা: রান্নাঘরে।
দৃশ্য - দুই[ রান্নাঘরের দিকে এগোবেন আকমল। স্ত্রী জয়তুনকে ঝাড়- হাতে দেখে ঢোক গিলবেন।
তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললবন- ]
আকমল: নাশতা কই?
(স্ত্রী জয়তুন নিশ্চুপ, চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকবে)
আকমল: জয়তুন, তোমার কি শরীর খারাপ? নাশতা বানাওনি কেন? জয়তুন : নাশতা? আজ থেকে রান্নাবাড়াসহ সব হোম সার্ভিস বন্ধ। আকমল: কেন?
জয়তুন : এক দফা এক দাবি পূরণের অবরোধ।
আকমল: তোমাকে কি রাজনৈতিক ভাইরাসে পাইছে? ডাক্তারকে ফোন লাগাব?
জয়তুন: চুপ কর। ফাজিলের টিউব লাইট কোথাকার।
আকমল: ছিঃ স্বামীকে ওভাবে গালি দিতে হয় না।
শুনতে খারাপ লাগে। জয়তুন: খারাপ লাগে না? আর খারাপ কাজ করতে বুঝি আপনার ভালো লাগে বাছাধন?
আকমল: এসব তুমি কী বলছ গো?
জয়তুন: উহ! গো-আলগা পিরীতের জোয়ার দেখো। মুখে মুখে ভাব মারে আমার লগে আবার অন্যদিকে...
আকমল: অন্যদিকে? অন্যদিকে কী?
জয়তুন: উফ! আমি ভাবতেই পারি না তুমি। উঃ উঃ ইঃ ইঃ (কান্না) আকমল: কী হয়েছে আমাকে খুলে বল না, প্লিজ।
[এবার কাঁদতে কাঁদতে আকমলেরএকটা শার্ট তুলে ধরবে জয়তুন।
শার্টটার মাঝখানে লিপস্টিকের দাগ। ]
জয়তুন: এটা কী? তুমি এত নিচে নামতে পারো। ছি ছি।
আকমল: বিশ্বাস কর, আমি জানি না এটা কী?
জয়তুন: আপনার দুই চুতে কি পর্দা পড়ছে যে দেখছেন না এইটা কী? এইটা মেয়ে মানুষের ঠোটের লিপস্টিকের দাগ।
আকমল: বিশ্বাস করো, আমি এর কিছুই জানি না।
জয়তুন : না, আপনি কী করে জানবেন? এ শার্টটা তো আপনার না। এটা মঙ্গলগ্রহের এলিয়েনের শার্ট, তাই না?
আকমল: জয়তুন তুমি বোঝার চেষ্টা করো- আমি এ সম্পর্কে সত্যি কিছু জানি না।
জয়তুন : হু, এর আগে যখন দুই দুইবার শার্টের সঙ্গে লম্বা চুল পেয়েছিলাম, তখনো তুমি একই কথা বলেছিলে। [তখনই মরিয়মের মার আগমন] মরিয়মের মা: হ, ঠিকই কইছের আফা। আজকালকার সব ব্যাডাগো একই খাছলাত।
চোখ খারাপ আর অভ্যাস খারাপ।
জয়তুন: চুপ!! তোমাকে এসবের মধ্যে কথা বলতে কে বলেছে। যাও এখান থেকে। ইডিয়েট।
আকমল: জয়তুন, আমার কথা শোনো...
জয়তুন : না, তোমার চরিত্র ঠিক না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।
আমার এক দফা এক দাবি- তোমার চারিত্রিক শুদ্ধতা চাই...[হাউকাউ চলতে থাকবে...]
দৃশ্য- তিন
আকমল: তুমি বুঝতে চেষ্টা করো, শার্টটা আমি লাস্ট পরেছিলাম গত সপ্তাহে আর লিপস্টিকের দাগটা একেবারে তাজা।
জয়তুন: কোনো অজুহাত মানি না। এই রকম করে পাশের ফ্ল্যাটের ফাতেমা ভাবীর স্বামীও অজুহাত দাঁড় করাতো। এখন ঠিকই আরেকজনকে বিয়ে করে বসে আছে।
আকমল: ওগো, আমাকে কি তোমার এমন মনে হয়?
জয়তুন : মনে হবে না, তোমরা সব পুরুষই এক।
কয়দিন ধরে তুমি আমাকে বারবারই বলেছ আমি নাকি মুটিয়ে যাচ্ছি।
আকমল: মোটানোর সঙ্গে লিপস্টিকের সম্পর্ক কী?
জয়তুন: ইস! কাঁচা মাছটিও ভেজে খেতে পারে না। সুযোগ পেলে কাঁচাটাও খাপুস ঘুপুস খাওয়ার ধান্ধায় থাকে। আকমল: কী বুঝাতে চাচ্ছ তুমি? জয়তুন: তুমি আমাকে রেখে অন্য একটা ইঃ ইঃ... [ আবার কাঁদবে জয়তুন। তখনই আকমল সাহেবের একমাত্র শ্যালিকা জেমি রুমে প্রবেশ করবে]
জেমি: কী ব্যাপার আপা-দুলাভাই এত হাউকাউ কিসের?
আকমল: দেখো তো জেমি, সামান্য একটা লিপস্টিকের দাগ নিয়ে তোমার আপু কী শুরু করেছে?
জয়তুন: এটা সামান্য না? নিজের কুকীর্তির কথা বলতে লজ্জা লাগে না।
ইঃ ইঃ হুঃ হুঃ [ জেমির হাসিতে অবাক হয়ে যাবে জয়তুন ও আকমল ] জেমি: আরে আপা গতকাল বিকেলে আমিই দুষ্টুমি করে দুলাভাইর শার্টে লিপস্টিক মেখেছি। ভেবেছি তাকে ব্ল্যাকমেইল করব। কিন্তু ব্যাপারটা এত দূর গড়াবে ভাবিনি।
জয়তুন: কী- এটা কোনো কথা হলো? বজ্জাত মেয়ে কোথাকার। [ সব শুনে মুখ গোমড়া করে বেরিয়ে যাবে আকমল ]
জয়তুন : এ্যাঁই কোথায় যাচ্ছ? খেয়ে যাও আমি অবরোধ তুলে নিচ্ছি।
[ আকমল দাঁড়াবে না। ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক বাজবে যেও না সাথী...]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।