অতীতকে নিয়ে নস্টালজিক হতে ভালোবাসি, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেও।
গত বছর পিয়ার সাপোর্ট লিডার হওয়ার সুবাদে ক্যাম্পে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো। জীবনের দ্বিতীয়, বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে প্রথম ও লিডার (আইন অনুযায়ী মাতব্বরি করার সিংহাসনের রানী) হিসেবে প্রথম ক্যাম্প, তাই উত্তেজনার সীমা ছিলো না। সে জন্যই বোধ হয় এ বছর এতোটা ইচ্ছা করছিলো না যেতে। মনে হচ্ছিলো, একে তো নতুন স্কুল, তার ওপর পড়াশুনার এতো চাপের মধ্যে এ তিন দিন বাসায় থেকে ধীরে সুস্থে কাজ করলে ভালো হবে।
তবে এখন, তিন নম্বর ক্যাম্প থেকে আসার পর, মনে হচ্ছে না গেলে বড় একটা অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতাম!
প্রথম দিন: স্কুলে গিয়েই শুনি সোমবার সকাল বেলা আমাদের টিমের প্রথম ডিবেট। সপ্তাহের মাঝখানে এতো সকালে এরকম শর্ট নোটিস খবর পেয়ে মেজাজ খারাপ হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু আমার ছোটখাট সাইজের উত্তেজনা সেটা হতে দিলো না। শীতের মধ্যে কাঁপতে কাঁপতে নাম ডাকা হলো, তারপর সবাই ব্যাগ ভর্তি চিপস চকলেট নিয়ে বাসে উঠলাম। উঠতে গিয়ে দেখি বড় করে লেখা 'নো ফুড এন্ড ড্রিন্ক', তবুও ড্রাইভার চাচার বুড়ো মুখে হাসি হাসি ভাব দেখে সবাই আশায় আশায় বসে ছিলাম, এবং তিনি একদম আমাদের আশাহত করলেন না ।
পৌঁছেই আমাদের খেতে দেওয়া হলো।
বেশ মজাই ছিলো তাই পেট ভরে খেয়ে নিলাম। কে জানে আবার কখন কি দেয়! তারপর কেবিন খুঁজে দেখি আমাদেরটা সবচেয়ে শেষে! বিরাট ব্যাগ কোন রকম টেনেটুনে খাটের পাশে রেখেই চোখ গেলো কমন রুমের দিকে। সেখানে একটা টিভি, একটা ফ্রিজ ও দুটো বিরাট আরামদায়ক সোফা দেখে মন জুড়িয়ে গেলো। ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক সবাইকে সন্তুষ্ট করতে না করতেই ডাক পড়লো প্রথম এ্যাকটিভিটিতে যাওয়ার জন্য।
এবসেইলিং জিনিসটা যত খারাপ হবে ভেবেছিলাম, আসলে ততটা খারাপ না।
পাঁচ বা দশ মিটার ওপর থেকে উল্টো হয়ে দেয়াল বেয়ে আস্তে আস্তে নামতে হয়। তাড়াতাড়িও নামা যায়, তবে একটু পর পর ধাক্কা খাওয়ার সম্ভবনা থাকে। বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েক প্যাঁচের দড়ি বাঁধা থাকে, তাই পড়ে মরার চান্স কম। সেটা পুঁজি করে একটু সাহস জোগাড় করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে পাঁচ মিটারেরটায় গেলাম। কয়েকবার চিৎকারের পর দেখা গেলো অত কঠিন কিছু না, তাই দশ মিটার ওপর থেকেও করলাম।
ওপর থেকে পুরো জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো। ক্যামেরা থাকলে ঠাস ঠাস করে কয়েকটা মাস্টারপিস তুলে ফেলতাম। (দীর্ঘশ্বাস) এই জন্যই এখনও বড় ফোটগ্রাফার হইতে পারলাম না!
পাশাপাশি ড্যাম্পার নামক অস্ট্রেলিয়ান রুটি ভাজা হচ্ছিলো। প্রথমবার একটা হাসিমুখ এঁকে জেলি দিয়ে খেলাম। দ্বিতীয়বার একটা রাগান্বিত-মুখ এঁকে মধু ও ঘি দিয়ে ভাজলাম।
মধু দিয়ে ক্যারামেল হওয়ার বদলে পুড়ে গেলো। তৃতীয়টা করার সাহস হলো না।
সারে পাঁচটার সময় 'ডিনার' যে করা যায় এটা ক্যাম্পে যাওয়ার আগে মাথায় আসেনি। এখন মনে করতে পারছি না কি খেয়েছিলাম, কিন্তু মনে আছে, সময়টা মোটেই সুখকর হয় নি। এর পরের রাতে অবশ্য ভালো খাবার দিয়েছে।
দ্বিতীয় দিন: গত রাতে গভীর রাত পর্যন্ত মজা করার পরও সকাল ছয়টায় চোখ খুলে গেলো। ঠান্ডাতে কাঁপা কাঁপা হাতে দাঁত মাজার পর খাবারের ডাক পড়লো। রাতের অভিজ্ঞতার পর আমরা সবাই যত পারি তত খেয়ে নিলাম ব্রেকফাস্টে!
(এখন আর একদম লিখতে ইচ্ছা করছে না, তাই...)
...টু বি কন্টিনিউড...
গত বছরের ক্যাম্প কাহিনী
ছবি: -তে আমি নাই! দশ মিটার লম্বা এ্যবসেইলিং টাওয়ার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।