আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোশেখ দেখবো ব’লে...

দ্য ওয়ে আই ফিল ইট...

ঝকঝকে কার্ণিশে বসে খড়িমাটি, পাকা উঠোন, উঁইয়ের ঢিবি, লাল ফড়িং আর খসখসে আম গাছটার কথা ভাবছিল রোদ্র। পেটে ক্ষুধা আর রাজ্যের সব চিন্তাভাবনা মিলিয়ে রোদ্রের মাথা গরম হয়। মনে মনে সে সবুজ কাঁচের বোতল সারি করে। লাথি দিয়ে যখন বোতল ভাঙবে তখন হঠাৎই হালকা দমকা বাতাস... আর বাতাসে কিছু ধুলোবালি, সুড়কি আর একটা হলুদ বয়স্ক আমপাতা এসে পড়ে রোদ্রর সামনে। রোদ্র একটু থমকায়, হাসে।

বোশেখের গন্ধ বুঝি!! এর পরই পুরনো ক’লাইন কবিতা, হাবিজাবি কি কি গান আর হলুদ রঙের পানজাবিটা ঘোরাঘুরি শুরু করে চোখের সামনে। শ্যাল আই কম্পেয়ার দি টু আ সামার্স ডে...। একটা রঙচটা গানের দুলদুল কোরাস, ঘন দুধের মত মিউজিকের পরপরই বেদম আওয়াজ। লে বাবা! সপ্তাহ দুয়েকের অনেক আয়োজন, লাল-পেড়ে শাড়ি, বেলি ফুলের মালা, মাইক্রোফোন, বাদাম-ভাজা, আইসক্রিম, পান্তা-ইলিশ, একতারা-- সব কিছু দুম করে ভেস্তে গেলো। রোদ্র অতঃপর ঘর ছেড়ে ঘন দুঃসময়ের মধ্যে বেরিয়ে পড়ে।

সূর্যতাপের মধ্যে বিচিত্র গন্ধ। বাতাস ভারি অদ্ভুত রকম রঙিন। কোন আমপাতার উল্টা দিকে মাকড়সার জালের মত গুটি মেরে আছে কেউ--শুয়োপোকা। আর এই যে শহর এখানকার সব ধুলো আসে ইতিহাস থেকে। দক্ষিণ থেকে।

প্রত্নপ্রাসাদের ছাদ আর ঘুলঘুলি থেকে। রোদ্র আমপাতা, মেহগনিপাতা, দেবদারুপাতায় মানচিত্র আঁকা প্রত্নপ্রাসাদের ধুলো দেখে আর বিচিত্র কিছু প্রাণীদের মিছিল ঠেলতে থাকে। এই প্রাণীদের ক্রোধ, লোভ, ক্ষুধা, লালসা, সবুজ রঙের মানিব্যাগ, পেতলের আঙটি, বিবিধ ডিজাইনের স্যান্ডেল, ঠান্ডা লাচ্ছির লোভ, গরমের অনুভূতি--ইত্যাকার অনেক কিছুই আছে বলে জানা যায়। ঘ্রাণেই বোশেখ, রঙেই নাকি বোশেখ। তো রঙ দিয়ে গোসলের পর ভীষণ ভিন্নরকম এক ভাবনায় পেয়ে বসে রোদ্রকে।

সে কোন মৃত্যুগামী আত্মার উরুর পাশে দাঁড়িয়ে এই রং-গন্ধ দেখবে। এরপর হঠাৎই থ্যালাসেমিয়া, রক্ত-ক্যান্সার কিংবা মৃত্যুখাদের কিনারে দাঁড়ানো হৃদরোগীদের খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে রোদ্র। সে পিজি দেখে, বারডেম দেখে, আবার পিজি দেখে। তারপর ফিনাইল মাখা ওষুধের এক গাদা দোকান হাতড়ে হাতড়ে এক ত্রস্তপদ ক্রেতার অস্থির পদশব্দ গুনতে গুনতে যেন মহাকালের দিকে হাঁটতে শুরু করে। বোশেখের রঙ আর ঘ্রাণ তাকে দেখতেই হবে।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।