আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেটওয়ার্ক আর্কিটেকচার (Cont'd)



নেটওয়ার্ক প্রোটকল সমূহ এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই আন্তঃসংযোগকৃত ডিভাইস বা যন্ত্র সমূহ কিভাবে পরষ্পরের সাথে যোগাযোগ করে? সবার প্লাটফরম্ এক হবে এমন কোন কথা নাই, এক একটি সিস্টেম এক এক রকম কারিগরী প্রকৌশলে তৈরী, বাংলাদেশে অবস্থিত একটি পিসি কিভাবে কানাডায় স্হাপিত একটি সার্ভারে সংরক্ষিত ওয়েব পেজ দেখতে পারে? আসলেই এক জটিল ব্যপার প্রকৌশলীরা যখন বিভিন্ন স্হানের কম্পিউটার কে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরষ্পরের সাথে সংযুক্ত করার কাজ শুরু করলেন, তখন তারা যে জিনিষটির সবচেয়ে বেশী প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন তা হল সব সিস্টেমের মধ্যে একটি সাধারনভাবে গ্রহনযোগ্য যোগাযোগ সিস্টেম বা একটি প্রোটকল। প্রোটকল হল সিস্টেম সমূহের মধ্যে আন্তঃ যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদানের জন্য সর্বসম্মত একটি ফরম্যাট বা লে-আউট যা তথ্য আদান -প্রদানকারী উভয় সিস্টেমে বিদ্যমান। একটি প্রোটকলকে কতগুলো সর্বসম্মত প্যারামিটার তথা মানের সাহায্যে সংজ্ঞায়িত করা যায়, যেমন; ডেটা কম্প্রেশন পদ্ধতি, কি রকম এ্যারর চেকিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় এবং সিস্টেম সমূহের সংকেত প্রদান পদ্ধতি যার মানে বুঝা যাবে উভয়ের মধ্যে ডেটা আদান প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সুবিধা ও ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে বেশ বিশাল সংখ্যক প্রোটকল ডেভেলপ করা হয়েছে। কিছু প্রোটকল আছে যা বহুল ব্যবহৃত এবং সচরাচর সবখানেই দেখা যায়, তাদের একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হল।

AppleTalk: ম্যাকিন্টশ্ কম্পিউটার ও প্রিন্টার কে নেটওয়ার্কে যুক্ত করার জন্য এ্যাপল এই প্রোটকল টি ডেভেলপ্ করে। Asynchoronous Transfer Mode (ATM): এ প্রটোকলের ভিত্তি হল একটি নির্দিষ্ট আকারের বা সাইজের প্যাকেট বা গুচ্ছাকারে ডেটার আদান প্রদান। এই নির্দিষ্ট প্যাকেট আকারের ডেটা পাঠানোর ফলে একক কোন ডেটা, বরাদ্দকৃত ব্যান্ডউইথ্ আটকে রাখে না। DECnet: এই প্রোটকলটি ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট কর্পোরেশন কর্তৃক ডেভেলপ করা। এটি PDP ও VAX সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।

Ethernet: সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ইথারনেট বা ল্যান (LAN) স্ট্যানডার্ড প্রোটকলটি জেরক্স্, ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট কর্পোরেশন এবং ইন্টেল কর্পোরেশন সম্মিলিত ভাবে ডেভেলপ করে। Fibre Distributed Data Interface (FDDI): অপটিক্যাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে ডেটা পাঠানোর জন্য এই প্রোটকল টি ব্যবহৃত হয়। Internet Protocols (IP): প্যাকেট-সুইচড্ কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে ডেটা আদান প্রদানের মাধ্যম হিসাবে এই প্রোটকল টি মূলত প্রতিরক্ষা বিভাগের জন্য ডেভেলপ করা হয়। বেশীরভাগ ব্যবহারকারী বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক প্রোটকল যেমন ইমেইল, ফাইল ট্রান্সফার প্রোটকল (FTP), টেলনেট এবং হাইপার টেক্সট ট্রান্সফার প্রোটকল (HTTP)। Internetwork Packet Exchange (IPX): এই প্রোটকল টি নোভেল নেটওয়্যার অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে।

Netware: নোভেল কর্তৃক ডেভেলপ কৃত একধরনের ল্যান (LAN) প্রটোকল। Signaling System 7 (SS7): এই টেলিকমিউনিকেশন প্রোটকল টি কল সংযোগ, রাউটিং ও বিচ্ছিন্নকরণের জন্য PBX সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়। Systems Network Architecture (SNA): আই.বি.এম কর্তৃক ডেভেলপকৃত এই নেটওয়ার্ক প্রোটকল টি আই.বি.এম এর মেইনফ্রেম সিস্টেম সমূহকে সংযোগ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। Token Ring: আই.বি.এম কর্তৃক ডেভেলপকৃত একটি ল্যান (LAN) প্রোটকল জেখানে ডেটা প্রেরণ করার পূর্বে সিস্টেমকে অবশ্যই সেই "টোকেন" নেটওয়ার্কের সদস্য হতে হবে। Transmission Control Protocol/Internet Protocol (TCP/IP): কতকগুলো কমিউনিকেশন প্রোটকলের সম্মিলিত সংগ্রহ যা হোস্ট্ সিস্টেম কে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে সাহায্য করে।

এটি সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক প্রোটকলের মধ্যে একটি এবং TCP ও IP প্রোটকলের সমন্বয়ে গঠিত। X.25: ইন্টারন্যাশনাল টেলিফোন এ্যান্ড টেলিগ্রাফ কনসালটেটিভ কমিটি (Comité Consultatif International Téléphonique et Télégraphique) কর্তৃক ডেভেলপকৃত এই প্রোটকলটি প্যাকেট-সুইচড্ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হয়। ১৯৯২ সনে ভেঙ্গে দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত CCITT ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (ITU) একটি সাব গ্রুপ ছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন প্রোটকল গুলো OSI (Open System Interconnection) মডেলকে কেন্দ্র করে ডেভেলপ করা হয়েছে। OSI বা OSI Reference মডেলটি ISO স্বীকৃত বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এতে সাতটি নির্দিষ্ট স্তরে বিভিন্ন প্রোটকল সমূহ প্রয়োগ করা হয়। OSI মডেলে কন্ট্রোল এক সিস্টেম থেকে অন্য সিস্টেমে যাওয়ার পূর্বে এক স্তর থেকে অন্য স্তরে স্থানান্তরিত হয় (উপর থেকে নীচে), আবার অন্য সিস্টেমে প্রবেশের পর কন্ট্রোল এক স্তর থেকে অন্য স্তরে স্থানান্তরিত হয় (নীচ থেকে উপরে), এইভাবে কমিউনিকেশন সাইকেলটি সম্পূর্ণ হয়। এটা স্মর্তব্য যে অনেক প্রোটকল বিস্তৃতভাবে OSI মডেল ব্যবহার করে এবং OSI মডেলে অনেক গুলো প্রোটকল এক বা একাধিক স্তরের সাথে মিলে একটি সিংগেল বা একক ফাংশনের মত কাজ করতে পারে। OSI মডেল প্রতিটি স্তরের জন্য সংক্ষেপন ও স্বাতন্ত্র্য (Abstraction and Isolation) সুবিধা প্রদান করে, যেমন একটি স্তরকে শুধু মাত্র তার উপরের বা নীচের বা উভয় স্তরের সাথে কিভাবে অন্তঃসংযোগ রাখতে হবে। উদাহরন হিসাবে এ্যাপলিকেশন লেয়ারের কথা বলা যেতে পারে, এই লেয়ার বা স্তরকে শুধুমাত্র প্রেজেন্টেশন লেয়ারের সাথে যোগাযোগ রাখতে হয় - একে সরাসরি ফিজিক্যাল লেয়ারের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করতে হয় না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।