অন্ধকারে হাতরে ফিরি বাঙ্গালীর আলকিত ইতিহাস।
বাংলাদেশ
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই স্বর্ণভূমির জন্মলগ্ন থেকেই মিথ্যাচার জড়িয়ে আছে খুব সূক্ষ্মভাবে। মিথ্যাচার বা গুজব গুলোর বিষয়ও খুব স্পর্শকাতর কিছু ব্যাপার নিয়ে। আপনি যখন জানবেন যে মানুষটি একটি জাতিকে আলোর পথ দেখায়, নতুন ভাবে বাঁচতে শেখায় তাঁর পরিবারের মানুষরাই যখন অনৈতিক কার্যকলাপে নিযুক্ত থাকে তখন কিছু প্রতিউত্তর করা যায় না।
হ্যাঁ; আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের কথা বলছি।
যার নামে আমাদের নভো থিয়েটার যার নামে আমাদের চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র আরও হয়ত অনেক কিছু আছে যা দেখে আমরা নাম সিটকাই। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র প্রতি আমাদের অনেকের একটা আক্ষেপের বাণী থাকে।
যেমনঃএহ, বাপের নামে সব দিতেছে
কিন্তু আমি মনে করি যে পুরো বাংলাদেশের নামটাই যদি শেখ মুজিব হয়ে যেত তাতেও কারও আক্ষেপ থাকার কথা না। কিন্তু থাকে। কারও কারও ব্যাক্তিগত বা রাজনৈতিক কারনে আক্ষেপ না সীমাহীন রেষারেষি কাজ করে।
বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং আলোচিত নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশের শেখ মুজিবুর রহমান কে নিয়ে সবচেয়ে বেশি গুজব রটানো হয়। এতো কিছুর পরেও নত হননি পিতা। আমাদের জন্মমুক্তি দিয়ে গেছেন। তাঁর লালিত স্বপ্ন বাস্তব করে দিয়ে গেছেন।
সম্পূর্ণটা পারেননি।
কিন্তু তাঁর পরিবার বিশেষ করে তাঁর ছেলে শেখ কামাল কে নিয়ে কিছু গুজবের পরিচিতি আছে। এরমধ্যে আছেঃ
১ শেখ কামাল মেজর ডালিমের বউকে অপহরন করে ধর্ষণ করেছিল।
২ শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাতি করতে যেয়ে গুলিবিদ্ধ হন । পরে জাতির পিতা ব্যাপারটা ধামা-চাপা দেন।
এই গুজবগুলো আবার শুধুমাত্র বিশেষ কিছু শ্রেণীর মানুষের কাছে মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায়।
যেমন শুধু মাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কিছু নেতা কর্মীদের কাছ থেকে। কোন ইতিহাসবিদের কাছ থেকে এমন কথা কথা কখনো শোনা যায়নি।
এসব গুজব প্রথমে প্রচার করে জাসদ। তাদের থেকে এই মিথ্যা ধারন করে বিএনপি এবং ক্রমান্বয়ে এই মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ব্যাবহার করে।
গুজব গুলোর কিছু ব্যাবচ্ছেদ করা যাক
শেখ কামাল মেজর ডালিমের বউকে অপহরন করে ধর্ষণ করেন
এই ব্যাপারে আমার কথা বেশি কিছু বলার দরকার নেই।
মেজর ডালিমের নিজ লেখা বইয়ে আমি কোথাও এমন কথা খুঁজে পাইনি। শেখ কামালের এতো ঘৃণিত কাজের কথা নিশ্চয়ই লিখে যাবেন ডালিম তার লেখা বইতে। যেহেতু ঘটনা জানা জানি হয়ে ছিল। তার বইগুলোর কোথাও এমন কথা লেখা নেই। সেইদিনের সেই লেডিস ক্লাবের ঘটনা মেজর ডালিম নিজে লিখে গেছেন তার বইয়ে তার নিজের মত করে।
ঘটনার দিন ঢাকা ল্যাডিস ক্লাবে ডালিমের খালাত বোন তাহমিনার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল কর্নেল রেজার সাথে। সেই অনুষ্ঠানে সামরিক-বেসামরিক অনেক লোক উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ততকালীন ঢাকা জেলা আ:লীগের নেতা ও রেডক্রস এর সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফার পরিবার। ডালিমের কানাডা ফেরত শ্যালক বাপ্পি'র ছেলেমানুষী ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাজীর ছেলেদের সাথে কথা কাটাকটি ও হাতাহাতি হয়। বিষয়টার জন্য গাজী সশস্ত্র লোকজন নিয়ে ক্লাবে এসে ডালিম, ডালিমের বউ নিন্মি ও তাদের পরিবারের আরো কয়েকজনকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
বিষয়টা শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর হাতেই নিস্পত্তি হয়।
এখানে শেখ কামালের কোন ভুমিকাই ছিলনা।
শেখ কামালের ব্যাংক ডাকাতি
আচ্ছা, এই প্রসঙ্গে আমার ব্যাক্তিগত একটা জিজ্ঞাসা ছিল।
আপনি যদি দেশের প্রধান মন্ত্রীর ছেলে হন তাহলে কি আপনি ব্যাংক ডাকাতি করবেন?
অবশ্যই না। আপনার তা করার প্রয়োজন পরবেনা।
আমাদের বাংলাদেশের রাজপুত্র তারেক কোকো যা করেছেন আপনিও নিশ্চয়ই তাই করবেন অথবা আপনি সৎ হলে তাও করবেন না। কিন্তু ভুলেও কি অস্ত্র হাতে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে ব্যাংক ডাকাতি করতে যাবেন? যখন আপনি একজন প্রধান মন্ত্রীর ছেলে।
এই ঘটনার নেপত্থে ছিল সিরাজ শিকদার। তাকে নিয়ে এই এখানে বেশি কিছু লিখছিনা। লিখব অন্য কোন কলামে।
বিজয় দিবসের আগের রাতের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় যে রাতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, সে রাতে কতিপয় দুষ্কৃতকারীর ব্যাংক লুটের ষড়যন্ত্রের খবরটি কামাল আগেই জানতে পেরেছিলেন তাঁর সদ্য গঠিত আবাহনী ক্রীড়াচক্রের ফকিরেরপুলে অবস্থানকারী দুজন খেলোয়াড়ের মাধ্যমে। দুষ্কৃতকারীদের ধরার জন্য তিনি মতিঝিল এলাকায় জিপে করে ছুটে যান তার কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে আবাহনী মাঠের রাতের আলোচনা বৈঠক থেকে। তাঁর মাধ্যমে খবর পেয়েই ঢাকার পুলিশ সুপার বীরবিক্রম মাহবুবের পুলিশ বাহিনী সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে, দুজনকে পায়ে গুলিবিদ্ধ করে। আর শেখ কামাল দুষ্কৃতকারীদের ধরার জন্য জিপ থেকে লাফ দিলে, রাস্তায় পড়ে যান। এই ঘটনার মূল সত্য কাহিনি পরের দিন ‘দৈনিক মর্নিং নিউজ’ এ প্রকাশিত হয়।
কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীদের কুৎসার নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল সত্য ঘটনা।
এ ব্যাপারে চারজন প্রত্যক্ষদর্শী আছেনঃ
১) তৎকালীন পুলিশ সুপার মাহাবুব আলম (বীরবিক্রম) যাকে সবাই এক নামে এসপি মাহবুব নামে চেনে এবং যার নেতৃত্বে সেদিন পুলিশ দুষ্কৃতকারীদের ধরতে এসেছিল।
২) সেই সময়কার "দৈনিক মর্নিং নিউজ" এর সম্পাদক প্রবীন সাংবাদিক এ.বি.এম মুসা। যিনি ঘটনার পরদিন পত্রিকায় ঘটনাটি তুলে ধরেছিলন।
৩) বর্তমানে বিএনপির "নেতা ইকবাল হাসান টুকু"।
যে জিপটিতে কামালরা দুষ্কৃতকারীদের ধরতে গিয়েছিলেন সেটা ছিল টুকুর এবং সেদিন জিপটি টুকুই ড্রাইভ করেছিলেন।
৪) জাপা'র প্রেসিডিয়াম সদস্য "কাজী ফিরোজ রশিদ"
যিনি কামালদের সিনিয়র হলেও, কামালদের সাথে প্রায় বন্ধুর মতো চলাফেরা করতেন এবং সেদিন তিনিও সেই জিপে ছিলেন।
আমার আর কিছুই বলার নেই। বাকিটা আপনার বা আপনাদের যুক্তি এবং সত্য সন্ধানী মনের উপর নির্ভর করে।
রেফারেন্স
মেজর ডালিমের ব্লগ
মেজর ডালিমের ওয়েব সাইট
অমি রহমান পিয়াল ব্লগ
বিস্তারিত আরো পাবেন
View this link
View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।