আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন মুক্তিযোদ্ধার দূঃখের পোস্টার

লেখার মান যাই হউক সব কিন্তু লেখকের নিজস্ব সম্পত্তি

ভোলা থেকে সংবাদদাতা: যাদের জন্য স্বাধীনতা বিরোধীরা গাড়িতে পতাকা লাগানোর সুযোগ পেয়েছে জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। ৮৮ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক জমাদ্দারের ক্ষোভ- মিথ্যা পরিচয়ে অনেক অমুক্তিযোদ্ধা নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি আহাদ চৌধুরী তুহিনকে তিনি বলেন, একাত্তরে তারা যুদ্ধ করেছিলেন সোনার দেশ আর সোনার মানুষের জন্য। ইসাহাক জমাদ্দারের এখন একটাই চাওয়া- মৃত্যুর এক মুহূর্ত আগে হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যাওয়া। তিনি বলেন, "মৃত্যুর আগে ওদের বিচার দেখে যেতে পারলে মরেও শান্তি পাব।

" একাত্তরে কমান্ডার ছিদ্দিকুর রহমানের (ভোলা-২ আসনের সাবেক সাংসদ) অধীনে তিনি যুদ্ধ করেছেন ভোলা সদরের খুইংগারহাট, বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফেউলা ও বোরহানগঞ্জে। ইসাহাক জমাদ্দার বলেন, "যে স্বপ্নের দেশের জন্য মৃত্যুকে পরোয়া না করে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, সেদেশে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার -আলবদরদের গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে আমাদের সামনে দিয়ে যেতে দেখেছি। এটা দেখলে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারিনা। " তিনি আরও বলেন, "যাদের জন্য রাজাকার-আলবদররা স্বাধীন দেশে এই সুযোগ পেয়েছে জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। " বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ইসাহাক জমাদ্দার।

কিন্তু যে তেজ নিয়ে শত্র" নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন একাত্তরে তা এখনো নিভে যায়নি। অশীতিপর এ মানুষটি মনে করেন, এখনও একটা অস্ত্র পেলে প্রয়োজনে আবারও যুদ্ধ করতে পারবেন। এক সময়ের বাম রাজনীতিক ইসাহাক জমাদ্দার সারা জীবন শুধু মানুষের জন্য করে গেছেন। স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে।

দুই ছেলে কোনোরকমে সংসার চালায়। বীর শ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের পৈত্রিক নিবাস ভোলার আলীনগরের বাসিন্দা ইসাহাক জমাদ্দারের আরও একটি বড় কষ্ট হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মধ্যে অমুক্তিযোদ্ধাদের আস্তানা গেড়ে বসা। এদের কেউ আবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃত্বেও রয়েছে। এই লজ্জায় এবং ক্ষোভে তিনি ভোলা মুক্তিযোদ্ধা অফিসে যান না। ইসাহাক জমাদ্দার বলেন, "আমরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি।

হাজারো মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীন দেশের জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন। আমরা যুদ্ধ করেছি সোনার দেশের সোনার মানুষের জন্য। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে নিজের আখের গোছানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেনি। আজ যখন দেখি মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে কেউ হাট-বাজার ইজারা নিতে যায়, কেউ নদী শাসন করতে যায়; তখন নিজেই নিজের অজান্তে লজ্জিত হই। " তার পরও ইসাহাক জমাদ্দার স্বপ্ন দেখেন সুন্দর বাংলাদেশের।

যেখানে থাকবে না হানাহানি, থাকবে না রাজনৈতিক সংঘাত। থাকবে শুধু গণতন্ত্র আর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। যখন আর কেউ গাইবে না- 'কি দেখার, কি দেখছি! এত বছর পরেও আজ স্বাধীনতাটাকে খুজছি'।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.