আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুন্টার গ্রাসের সাক্ষাৎকার ( তৃতীয় পর্ব )

কবি

গুন্টার গ্রাস-এর সাক্ষাৎকার ( প্রথম পর্ব ) গুন্টার গ্রাসের সাক্ষাৎকার ( দ্বিতীয় পর্ব ) এলিজাবেথঃ কবিতা, ড্রয়িং আর ভাস্কর্য এই তিনটি কাঠামোর মধ্যে কোনটি কি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে? গ্রাস: এই প্রশ্ন যদি আমাকে করে থাকো,.তবে একমাত্র নিজের ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, আমার কাছে কবিতা অনেক বেশি অর্থবহ। একটা উপন্যাসের জন্ম হতে পারে একটা কবিতা থেকে। তবে আমি বলছি না এটাই শেষ কথা। তবে আমি কবিতা ছাড়া কিছুই গড়ে তুলতে পারবো না। এই বিষয়টাকে আমি খুব সরাসরি দেখি।

এলিজাবেথ: অন্যান্য শিল্প মাধ্যম থেকে চিত্রকলার বিশেষ এবটা ভূমিকা রয়েছে আপনার কাজের মধ্যে। গ্রাস: না না। তা ঠিক নয়। গদ্য, পদ্য, ড্রয়িং সমস্তই আমার কাজের মধ্যে অনায়াসেই ঢুকেছে। এলিজাবেথঃ ড্রুয়িংয়ের ভেতর অনুভবগত বা দৃশ্যগত ভাবে এমন কিছু কি আছে যা লেখনীর ভেতর নেই? গ্রাস: হ্যাঁ, লেখা লেখি আসলেই একটা কঠোর পরিশ্রমের ব্যাপার।

বিমূর্তও বটে। লেখার আনন্দ, ড্রয়িংয়ের আনন্দ থেকে একদমই আলাদা। ড্রয়িংয়ের ক্ষেত্রে এক খণ্ড সাদা কাগজের উপর আমি আমার সৃষ্টিকে ফুটিয়ে তুলি। এটা খুবই স্পর্শকাতর একটা ব্যাপার যা তুমি লেখালেখির ক্ষেত্রে পাবে না। প্রায়ই আমি লেখালেখির ভেতর ফিরে আসার জন্য ড্রয়িং করে থাকি ।

এলিজাবেথঃ লেখালিখে খুব বেদনাদায়ক? গ্রাস: এটা একটা মূর্তি গড়ার মত কাজ। মূর্তি গড়ার সময় তোমাকে এর চারপাশে চোখ রাখতে হয়। তুমি যদি কোন এক পাশে কোন রকম পরিবর্তন করো তবে অন্য পাশেও তোমাকে পরিবর্তন করতে হবে। যদি হঠাৎ কোন পরিবর্তন করে বসো তবে তা কিন্তু আর মূর্তি হবে না। তাকে সেক্ষেত্রে অন্য কিছু বলা ভালো।

এর ভেতর একটা সংগীত ধর্ম আছে। লেখালেখির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। আমি প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় খসড়া নিয়ে একই কাজ বারবার করতে থাকি। সমস্তই ঠিক আছে তবে তি যেনো নেই। এই নেই টাকে ঠিক করার জন্য সামান্য কিছু পরিবর্তন করি।

আমার মনে হয় এটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। এরপর আমি এগিয়ে যাই। কাজ করতে থাকি। এলিজাবেথঃ কবিতায় ফিরে আসি। উপন্যাসের অংশ হিসাবে আপনি যে কবিতা লেখেন সেই কবিতা আর সচারাচর আমার কবিতা বলতে যা বুঝি তার মধ্যে কি কোন পার্থক্য আছে? গ্রাস: এক সময় কবিতা লেখার ক্ষেত্রে আমি পুরনো ধ্যান ধারণার অধিকারী ছিলাম।

আমি ভাবতাম বেশ কটা কবিতা লেখা হয়ে গেলেই সেই কবিতাগুলো আর কিছু ড্রয়িং নিয়ে একজন প্রকাশকের কাছে চলে যাওয়াই ভালো। সেক্ষেত্রে একটা দারুণ কবিতার বই পাওয়া যাবে কবিতা প্রেমিকদের জন্য। সেই সময় From the Dairy of a Snail লেখার সময় আমি গদ্য আর পদ্য উভয়ই একসাথে রেখে দিলাম এক বইয়ে। এই কবিতাগুলোর আলাদা একটা সুর আছে। গদ্য আর পদ্য কে আলাদা ভাবে দেখার কোন কারণই আমি দেখি না।

বিশেষত জার্মান সাহিত্যে গদ্য-পদ্য মিশ্রনের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ আছে। প্রতিটি অনুচ্ছেদে কবিতা ঢোকানোর ঝোক আমার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে লাগলো। এবং এর মধ্যেই আমি গদ্যের বুনন খঁজে পেতে চাইলাম। যে সমস্ত পাঠক ভাবেন 'কবিতা খুবই কঠিন' তারা দেখে থাকবেন কিছু কিছু কবিতা গদ্য থেকে অনেক সহজ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.