আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিহতের আর্তনাদ!

ইমরোজ

(প্রিয় পাঠক, চিত্রটি রাত সাড়ে বারোটার। নগরভবনের উলটো দিকে ঘটে এইসব ঘটনা। বিশ্বাস করা কঠিন। তবু আজকে আমরা নিজেকে প্রশ্ন করতে পারি, আমরা কোথায় যাচ্ছি? ঘটনাটি একজন মাদকাসক্ত লোকের কাছ থেকে শোনা। গত দুইদিন নগরভবনের সামনে দিনে ও রাতে ঘুরে আমি ঘটনাটির সাথে মিল খুজেছি।

কী দেখলাম তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এইদেশে কোন সরকার আছে কিনা খুব জানতে ইচ্ছা করছিলো। ) খুব সাবধানতার সাথে কাজ করতে হয়। যেন কেউ দেখে নে ফেলে। একটি ছাউনি তৈরী করা হয় প্রথমে।

হয় সেটা তৈরী করা হয় পলিথিনের চাটাই দিয়ে, নাহলে বড় ছালা দিয়ে। তারপর সেটার ভেতরে ঢুকে পরে দুই তিনজন। একটা সিগারেটের ভেতরে পুড়ে ফেলে গাজা। আরেকজন প্যাকেট থেকে অল্প পরিমানে বের করে ফেলে হালকা গোলাপি রঙের পাউডার জাতীয়। তারপর সেটা সিগারেটের ভেতর দিয়ে স্মোক করা হয়।

একেকটা টান দেবার পর অল্প বয়সিরা ঝিমিয়ে পড়ে। আর বয়স্করা ঝিম ধরে, আরেকটা টান দেয়। আরও একটা একটা করে শেষ হতে থাকে দুই তিনটা জ্বলন্ত সিগারেট। এর পরের দৃশ্য ঘুম। ছালাটা আলতো করে গায়ের উপরে ফেলে প্রচন্ড রকমের ঘুম।

কখনও তাদের পাশ দিয়ে যেতে থাকলে মনে হবে কোন লাশের পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। লাশ ছাড়া আর কী, বলা যেতে পারে ছালায় ঢাকা দেহটাকে। হটাত করেই লাথি পড়ে জীবন্ত লাশের উপরে। “ঐ ওঠ হারামজাদা...”। ছালার আড়াল থেকে বের হয়ে আসে থকথকে দুইটি অলস চোখ।

চোখ দুইটি সহজেই বুঝতে পারে কিসের জন্য এদের আগমন। এরা পুলিশ। ভয়ংকর লোক। মানুষকে শোষন করে থাকে এরা। যেদিন গাড়ি থেকে টাকা বেশি খেতে পারে না, সেদিন এদের চোখ গিয়ে পরে অসহায় নেশাগ্রস্ত মানুষগুলোর দিকে।

“ঐ চায়ে চায়ে কী দেহস, ওঠ এখান থেকে...জিনিস কই?” -চান ভাইরে কন না, আমগোর তো কিছু দেয় নাই। -ঐ মাদার... কালকে না একটা ছিন্তাই করলি, মোবাইলটা বেইচ্চা আজকেই শেষ? -চান ভাইয়ের কাছে যান, উনার কাছে সব আছে, সব। পুলিশের মেজাজ অত সহজে বদলায় যায়। এই বিচ্ছিরি নোংরা লোকটাকে ধরে উপরে তুলে। লোকটা তাল রাখতে পারছে না।

দাড়াতে পারছে না। আসলে কখন দিন আর কখন রাত হয় এই কথাটা লোকটার জানা নেই। হয়তো এইটাও জানে না সে কখন ঘুমিয়েছিলো। মাথা বিষ করে তার। পুলিশ লোকটার পকেটে হাত দেয়।

গালি চলতে থাকে মুখে। পকেট থেকে বের হয়, একশো টাকা। লোকটা বুঝতে পেরে বৃথা চেষ্টা করে টাকা ছো মেরে নিয়ে নিতে। কিন্তু ধাক্কা খেয়ে পথে পড়ে যায়। ছালার উপরে, শীতে কুকড়ে যায়।

দু’টো পুলিশ আলাপ করতে করতে চলে যায়। রাত তখন সাড়ে বারোটা। জীবন্ত লাশ আবারও ঘুমিয়ে পড়ে। এবার কেউ কম্বলের মত করে ছালাটা তার গায়ে দেয় না। ছালার উপরে সে কুকড়ে থাকে।

জানে না সে সকাল হতে আর কতক্ষণ। আর কী সকাল হবে?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.