জ্বলে উঠার অপেক্ষায় নিভু নিভু প্রদীপ।
আনিস আমার ভাইয়ের বন্ধু।
ক্লাস সিক্স থেকে টেন পর্যন্ত প্রতি ক্লাসেই সে ছিল ফতেয়াবাদ স্কুলের ফার্স্টবয়। আনিসের বাবা বেচেঁ নেই। কোন বড় ভাইও ছিল না তাই আর্থিক অবস্থা খুব একটা অনুকুলে ছিলনা।
যার কারনে নিজের পড়ালেখার খরচ নিজেকে উপার্জন করতে হতো। ভাইয়ের কাছে যতটুকু শুনেছি ক্লাস সেভেন থেকেই সে টিউশনি করে উপার্জনের কাজটা চালায়। আমার ছোট ভাই ও বোনের জন্য যখন টিউটর খোঁজা হচ্ছিল আনিস'কে অনুরোধ করেছিলাম। সে নিরাশ করেনি।
এরপর থেকে বাসায় আসলে ওর সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতাম, পড়ালেখার খবরাখবর জানতে চাইতাম।
সে আমার দেখা অসম্ভব মেধাবী ও বিনয়ী ছেলে (একটি উদাহরণ; দশম শ্রেণী'র ছাত্র হয়ে সে একাদশ শ্রেণী'র উচ্চতর গণিত টিউশনি দিত)। একদিন জানতে চেয়েছিলাম কলেজ পাশ করে সে কোথায় কিংবা কি বিষয় নিয়ে পড়তে চাই...
তার মেডিক্যাল' পড়ার অভিপ্রায় শুনে সেদিন আমি উৎসাহ দিয়েছিলাম।
পরের কথা: আনিস তার কথামত মেডিক্যাল' এর ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছিল কিন্তু সে ভর্তি হয়নি। ভাইয়ের কাছে শুনেছি মেডিক্যাল পড়ার খরচ বহন করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না বলে সে ভর্তি হতে পারেনি।
এটা শোনার পরে সেদিন আমি নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম, বুকের ভিতরটায় এক ধরনের চাপা কষ্ট অনুভব করেছিলাম।
বাস্তবতা আনিস'দের জন্য কতটুকু কঠিন হতে পারে সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম।
আনিস আর স্বপ্ন দেখেনা।
এভাবে আরো কত আনিস অকালেই ঝরে যায় শুধুমাত্র অর্থের অভাবে।
সেদিন পর থেকে আমি একটি স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। গরীব মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা দিতে একটি 'ফান্ড' গড়ে তোলার স্বপ্ন।
কলেজে থাকাকালীন সময়ে পাড়ার বন্ধুদের নিয়ে 'স্টুডেন্টস ওয়ালফেয়ার কাউন্সিল' নামে একটি সংগঠন করেছিলাম।
গরীব ছাত্রছাত্রীদের ফ্রি'তে টিউশন দিতে কোচিং সেন্টার ও করেছিলাম।
কিন্তু, প্রবল ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও সংগঠন নিয়ে আর বেশিদুর এগোতে পারিনি। কারণ, আমি লন্ডনে আসার পরে সব কিছুই থমকে গেছে।
পাঁচ বছর পরে ও আমি ভুলে যায়নি আমার ছোট্ট ইচ্ছা কিংবা স্বপ্নের কথা।
এ স্বপ্নের কথা বলেছি দেশ-বিদেশের সকল বন্ধুদের।
সবাই আমাকে দিয়েছে সহযোগীতা করার আশ্বাস।
এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি দৃঢ় প্রতীগ্গ।
(বি:দ্র: আমার লেখার হাত ব্লগের অন্যান্য লেখকদের মত অসাধারন না মোটেও। আমার সাধারন মনের সাধারন ইচ্ছাটুকু সাধারন ভাষায় শেয়ার করলাম।
তাই ভুলত্রুটিগুলো আশা করছি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।