নাজিল আযামীর ব্লগ সাইট
তাবলীগ জামাত এমনিতে খুব সুন্দর মনে হয় , কিন্তু এটা প্রকৃতপক্ষে ইসলামের চেতনার সাথে যায় না । তাবলীগ জামাত যারা করেন , উনারা চল্লিশ দিনের একেকটা চিল্লা করে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ান । যেখানে রাত , সেখানে কাত এই ভাবে উনারা বিভিন্ন স্থানে ইসলামের পক্ষে সবাইকে আহ্বান করে থাকেন ।
কিন্তু তাবলীগ জামাতের ভাইয়েরা ভেবে দেখেন না যে এই ভাবে তারা দিনের পর দিন ঘরের বাইরে থাকলে তাদের ঘরের হক নষ্ট হয় । তারা যদিও জোর গলায় বলে থাকেন যে তারা যতোদিন ঘরে থাকেন না , ততোদিনের খানা খোরাকি রেখে তারপরই ঘরের বাইরে যান ।
কিন্তু শুধু মাত্র খানা খোরাকিই কি সব ? চল্লিশ দিন তারা নিজ নিজ স্ত্রী এবং সন্তানদেরকে সাহচার্য থেকে বঞ্চিত করেন ।
এই সন্তান যদি বিপথে চলে যায় , তার দায়ভার কে নিবে ?
এই স্ত্রী যদি বিপথে চলে যান , তার দায়ভার কে নিবে ?
এই ভাবে বছরের পর বছর তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান বলে তারা চাকরি বাকরি করতে পারেন না , কারন কয়জন নিয়োগকর্তার পক্ষে সম্ভব যে নিজের কর্মচারীকে এতো লম্বা সময়ে ছুটি দেয়া ? নিয়োগকর্তা তো তার কাজের জন্যই লোক রেখেছেন , কাজ না হলে উনি কিভাবে বেতন দেবেন ?
এই কারনে তাবলীগ জামাত এ জড়িত হওয়া মানে নিজের ও নিজ পরিবারেরর প্রতি জুলুম করা , এবং অন্যায় করা । এটা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা নয় ।
তদুপরি , তাবলীগ জামাতের মানুষেরা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মানুষকে ইসলামের পক্ষে এবং নামাজরোজা করতে দাওয়াত দেন । কিন্তু উদাহরন হিসাবে ধরি যে ফরিদপুরের একজন মানুষ বরিশালে গিয়ে সবাইরে এই দাওয়াত দিতেছে ।
কিন্তু বরিশালে তো কেউ উনাকে চিনে না , উনার কথার তাই কোন গুরুত্ব দিবে না । তার চাইতে উনি যদি ফরিদপুরে নিজের এলাকায় এই কাজ করতেন তাইলে তাকে চিনে হয়তো কেউ কেউ তার কথায় প্রভাবিত হতো ।
এছাড়া এই সব লোক বিভিন্ন স্থানে মসজিদে রাত্রি যাপন করেন । এটা অন্যায় । মসজিদকে ইবাদতের ঘর হিসাবে তৈরী করা হয়েছে , এটা কোন সরাইখানা নয় ।
মসজিদে রাতে ঘুমানো অবস্থায় যদি কোন ধরনের নাপাকি স্বপ্ন কেউ দেখে থাকেন যাতে ফরজ গোসলের আবশ্যকতা দেখা দেয় , তাহলে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হয় যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না ।
প্রত্যেক বছর টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার নামে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ হয় । এটা খুবই আনন্দের কথা , কিন্তু এই সমাবেশ থেকে মুসলমানরা কিভাবে লাভবান হন , সেটা জানি না । হজ্ব একটি ইবাদত কিন্তু ইজতেমা মুসলিম সমাবেশ হিসাবে মুসলমানদের উপকারে অনেক ভাবেই কাজে লাগানো যায় ।
সেই সমাবেশে ভারতের বিভিন্ন মাওলানারা উর্দু আর ফার্সী ভাষায় বয়ান করেন , যা সমাবেশে উপস্থিত নব্বই ভাগ লোকই বুঝতে পারে না ।
বিশ্ব ইজতেমাকে অন্যভাবে মুসলমানদের কাজে লাগানো যেতে পারে । ধরা যাক , একবছরের স্লোগান হলো " সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা " তাহলে সেখানে অংশগ্রহনকারী সকল মুসলমান যদি শপথ নেন যে তারা নিজের ছেলেমেয়েদেরকে স্কুলে বা আলিয়া মাদ্রাসায় পাঠাবেন এবং অন্যদেরকেও শিক্ষার জন্য সবাইকে সাহায্য করবেন , এতে করে মুসলমান সমাজে শিক্ষা দীক্ষা অনেক বেড়ে যাবে । এইভাবে আরো অনেক সামাজিক কাজ করা যায় এবং দুনিয়ার নিপীড়িত মুসলমানদেরকে কিভাবে সাহায্য করা যায় এটা নিয়ে সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম নেতাদের মাঝে আলাপ আলোচনা এবং দিক নির্দেশনা আসতে পারে ।
তা না করে গোসলের নিয়ত নিয়ে কয়েক ঘন্টা বয়ান করে লাভ নাই , কারন সেই গোসলেনর নিয়ত ও নিয়মকানুন সকল মুসলমানই জানেন অথবা অল্প আয়াসেই জানতে পারেন , এই জন্য তুরাগ নদীর তীরে দুই রাত বসে থাকার প্রয়োজন পড়ে না ।
( আগামী পর্বে সমাপ্য )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।