আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উন্নয়নের মরনাস্ত্র : "২০ কোটি ডলার" মুলা ঝুলিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন আধিপত্য ১৬ আনা বিস্তারের প্রজেক্ট হাতে নিল আম্রিকা

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য আমি উন্নয়ন চাই, কিন্তু সাম্রাজ্যবাদীদের উন্নয়ন দর্শনের উপর ভিত্তি করে যে উন্নয়ন তারে ভয় পাই, সাম্রাজ্যবাদীদের উন্নয়ন কর্মসূচী মানেই আপনারে, আপনার দেশরে ওরা ১০০% দাস রাষ্ট্রে পরিণত করবে, জাতীয় উন্নয়নের জিগির তুলে ওরা দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ নীতি , নিরাপত্তারে পুরা ধংস কইরা বৈশ্বিক লুণ্ঠনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে! তাই যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারম্যান যখন বলেন , “বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট ২০ কোটি ডলার, যা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পরে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন কর্মসূচি” [http://bangla.bdnews24.com/business/article630152.bdnews] আমার তখন কেবলি ভয় হয় আমরা কি তবে পাকিস্তান আর আফগানিস্তানে চলমান ওয়ার অন টেরর প্রজেক্টের মত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিরোধী প্রকল্পের নয়া ক্ষেত্রে পরিনত হয়ে গেলাম নাকি? অর্থের মুলা ঝুলিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন আধিপত্য ১৬ আনা বিস্তারের প্রজেক্ট হাতে নিল নাকি আম্রিকা! এইসব উন্নয়ন বাজেট এর মুখে থুথু মারি, পাকিস্তান আর আফগানিস্তানরেও আম্রিকা উন্নয়নের নামে ধংসস্তুপ বানাইছে, এবার বাংলাদেশের দিকে নজর দিছে আম্রিকা! বাংলাদেশের সাথে ১৯৮৬ সালের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, হানা (হিউম্যানেটারিয়ান এসিস্ট্যান্ট নিডস এগ্রিমেন্ট) চুক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসংক্রান্ত চুক্তি, সোফা চুক্তি (US Serviceman Protection Agreement) এবং মেমোরেন্ডাম অব ইনটেন্ট (এমও আই) এসব সাম্রাজ্যবাদী হেজিমনিক চুক্তির পর আকসা আর টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র! ইতোমধ্যে ঢাকায় এফবিআই এর অফিস খোলার চুক্তি সম্পন্ন করে ফেলল, চলছে চাটগাঁ এ বন্দর দখলের চেষ্টা আর বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি গাড়ার পাঁয়তারা, সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সামনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ওয়ার অন টেরর ভূমি হওয়ার আশঙ্কা দানা বাঁধছে, আর এসব কিছুকেই জায়েজ করা হবে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট ২০ কোটি ডলার দিয়ে, এদেশের সুশীলরা বলবেন ভালোই তো বেবাক উন্নয়নের জোয়ারে ভাসবে দেশ তার বিনিময়ে মার্কিনীদের সব চুক্তিতে সই করে দিলেই তো হয়! পাকিস্তানে আমরা দেখেছি এক দিকে কোটি কোটি ডলার মার্কিন সাহায্য অন্যদিকে মার্কিন ড্রোণ হামলা! তাই সাধু সাবধান! উন্নয়নের গাল ভরা সাম্রাজ্যবাদী বয়ানে বেঘোর না হয়ে মেরুদণ্ড সোজা করার চিন্তা করেন, নাইলে এই উন্নয়ন আপনার সামগ্রিক অবনয়নের হাতিয়ার হয়ে কাজ করলে ধংসযজ্ঞ ছাড়া আমাদের পাওয়ার আর কিছুই থাকবে না! এবার আসেন বাংলাদেশের জন্য আম্রিকার বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট এর মাজেজা কি তা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করিঃ ওয়ার অন টেররর প্রোজেক্টে বাংলাদেশ কেন ইম্পরট্যান্ট ? ক। পরাশক্তি হিসেবে চীনের অগ্রগতি ঠেকানো সাম্প্রতিককালে ভারত মহাসগরীয় অঞ্চলে চীনের নৌবাহিনীর প্রভাব বৃদ্ধি এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক এবং রাজনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থি । সে কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে একটি মোর্চা গড়ে তোলা যুক্তরাষ্ট্রের নয়া কৌশল। পরাশক্তি হিসেবে চীনের অগ্রগতি ঠেকানোর জন্য বঙ্গোপসাগরে এবং ভারত মহাসাগরে মার্কিন উপস্থিতি জোরদার করতে বাংলাদেশ ভূ-রাজনৈতিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । বাংলাদেশে অবস্থান করে খুব সহজেই বাংলাদেশের নিকট-প্রতিবেশী দেশগুলোর উপর যেমন প্রভাব খাটানো সম্ভব, তেমনি সম্ভব চীনের আঞ্চলিক আধিপত্য ঠেকিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা।

তাই বঙ্গোপসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র! ইতোমধ্যেই দক্ষিন এশিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা চালু রেখেছে মার্কিন স্পেশাল ফোর্স। গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কমিটির শুনানিতে পেন্টাগনের শীর্ষ কমান্ডার অ্যাডমিরাল উইলার্ড সন্ত্রাস দমন (সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন?) প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর (স্পেশাল ফোর্স) উপস্থিতির কথা স্বীকার করেন। খ) দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি সন্ত্রাসবিরোধী মোর্চা গঠন ঃ যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বিপ্লবী রাজনৈতিক শক্তির নয়া উত্থানের আশঙ্কা করছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী যে কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঠেকানোর লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি সন্ত্রাসবিরোধী মোর্চা গঠন আমেরিকার পরিকল্পনায় রয়েছে। আগামীতে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে বাধ্য হলে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওপর মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার তাগিদে এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী মোর্চা গঠন খুবই দরকার হবে আমেরিকার জন্য।

২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা হলে, আঞ্চলিক স্বার্থ সুরক্ষার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি 'শান্তিরক্ষী' বাহিনী গঠন করা যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজির অন্তর্ভুক্ত, যে বাহিনী ২০১৪ সালের পর মার্কিন সৈন্যদের পরিবর্তে আফগানিস্তানে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত হবে। অর্থাৎ পরাশক্তি হিসেবে চীনের অগ্রগতি ঠেকানো, এ অঞ্চলের গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিপুল জ্বালানি সম্পদ এর উপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি সন্ত্রাসবিরোধী মোর্চা গঠন করে এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ বিরোধী শক্তির রাজনৈতিক এবং সামরিক উত্থান প্রতিরোধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তার ওয়ার অন টেরর প্রকল্পে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে অনেক আগেই। এই পরিকল্পনায় রয়েছে- ১। ঘন ঘন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সংলাপঃ গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের বহর প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এখন ভু রাজনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে অংশীদারিত্ব সংলাপ বলে চালিয়ে দিলেও এসব সংলাপ আসলে মার্কিনীদের হেজিমনিক চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা ছাড়া আর কিছুই না! এইতো গত দুই দিনে ঢাকায় চলল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যানের নেতৃত্বে একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল এর সাথে বাংলাদেশের সংলাপ (Click This Link)।

সংলাপে উন্নয়ন ও সুশাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা এই চারটি বিষয়ের ওপর আলোচনা হয় , মূলত এই সংলাপের টার্গেট ছিল বাংলাদেশের নিরাপত্তায় মার্কিন সহায়তার নামে এই অঞ্চলে মার্কিনী ঘাঁটি গড়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষরে বাংলাদেশকে রাজী করানো আর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার নামে বাংলাদেশ বিধ্বংসী টিকফা চুক্তি সাক্ষর করা ! সংলাপের পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এবং চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এবারও তা চূড়ান্ত হয় নাই! যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ প্রবর্তন করার পরও এখানে নতুন করে সন্ত্রাস বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে খানিকটা আলোচনার দরকার আছে। সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ বাংলাদেশের লোকাল পর্যায়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী তৎপরতায় যুক্তদের প্রতিহত করার কাজে সহায়ক হলেও সরাসরি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে ওয়ার অন টেরর এ যুক্ত করার জন্য আম্রিকার সাথে দ্বিপাক্ষিক সন্ত্রাস বিরোধী চুক্তি দরকার যেখানে সর্বদা মার্কিন স্বার্থের বিরোধী রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক যে কোন শক্তিকে এই চুক্তির নিরিখে সন্ত্রাসী বলে তাকে প্রতিহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সর্বাত্মক সাপোর্ট পাবে বলে নিশ্চয়তা বিধান করতে পারে । উল্লেখ্য সন্ত্রাস দমন বলতে যুক্তরাষ্ট্র বুঝে থাকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে যারা সক্রিয় তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে। ২। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক ‘নিরাপত্তা সংলাপে’ঃ ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা’য় দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করণের লক্ষে এখন পর্যন্ত ২ দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে ঢাকা ও ওয়াশিংটনে।

এই সংলাপের টার্গেট হচ্ছে বাংলাদেশে মার্কিন স্বার্থ দেখভালের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনী নিয়ে এমন একটা নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা যেন সন্ত্রাসবাদ ( মার্কিনী আগ্রাসন বিরোধী তৎপরতা) মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল প্রজেক্টে বাংলাদেশে লোকাল ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় মার্কিন সহায়তায় ঢাকায় ন্যাশনাল একাডেমি ফর সিকিউরিটি ট্রেনিং স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে ৯ই এপ্রিলের ঢাকা ওয়াশিংটন নিরাপত্তা সংলাপে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি । মজিনার মতে এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নাকি আবার বাংলাদেশের। মজিনা বলেন, “ এটি একটি অসাধারণ প্রস্তাব। আমরা এটাকে সমর্থন করি।

এই একাডেমির মাধ্যমে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ড, সেনাবাহিনী সবাই প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একে অন্যের সম্পর্কে জানতে পারবে। “ এদেশকে ওয়ার অন টেরর এর পরবর্তী যুদ্ধ ক্ষেত্র বানানোর প্রস্তুতি সম্পন্নঃ যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় বাংলাদেশের ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইন পাস, কয়েক মাস আগে ঢাকায় এফবিআই এর স্থায়ী প্রতিনিধি সহ স্থায়ী অফিস বসানোর চুক্তি স্বাক্ষর, টিকফা ও আকসা চুক্তি সাক্ষরের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি এবং সাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অবস্থানকে বাংলদেশ রাষ্ট্রের আইনি কাঠামোতেই সুনিশ্চিত করার পরিকল্পনা, ঢাকায় নিরাপত্তা প্রশিক্ষণের জন্য একটি একাডেমি স্থাপনের প্রস্তাব, আর এখন আবার নতুন করে সন্ত্রাস বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর এর জন্য আম্রিকার ক্রমাগত চাপ –এই সব কিছুর মূল লক্ষ্য সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার নাম করে আর বাংলাদেশের নিরাপত্তার নাম করে এদেশকে ওয়ার অন টেরর এর পরবর্তী যুদ্ধ ক্ষেত্র বানানো! অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামরিক খাতকে পুরাপুরি মার্কিন বলয়ে নিয়ে এসে বাংলাদেশসহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার উপর চলমান সাম্রাজ্যবাদী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা আরও জোরদার করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যেন বাংলাদেশের শাসক গোষ্ঠী সর্বাত্মক সহযোগিতা করে তার জন্যই ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট ২০ কোটি ডলার এর মুলা! উন্নয়ন কর্মসূচির আড়ালে এখন চলবে আরও বেশি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী তৎপরতা, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি সাক্ষর আর জাতীয় সম্পদ মার্কিন কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার পুরানা তবে জোরদার তৎপরতা! মার্কিনী উন্নয়নের আফিম খেয়ে বুঁদ হয়ে থাকবেন এদেশের অনেক কুশিলবরা, তবে মনে রাইখেন এই উন্নয়নের আড়ালে আছে অবনয়নের মরনাস্ত্র যার নাম নয়া উপনিবেশবাদী সাম্রাজ্যবাদ! নির্ঘণ্টঃ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে স্বাক্ষরিত ও প্রস্তাবিত নানান চুক্তির হদিসঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসংক্রান্ত চুক্তিঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত চুক্তির ফলে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো গবেষণা হাতে নেয়ার আগে অবশ্যই ওয়াশিংটনকে জানাতে হবে। হানা (হিউম্যানেটারিয়ান এসিস্ট্যান্ট নিডস এগ্রিমেন্ট চুক্তিঃ হানা চুক্তির ফলে ‘মানবিক’ সাহায্যের প্রয়োজন নির্ধারণ করতে মার্কিন সামরিক ব্যক্তিরা পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই এ দেশে অবাধে যাতায়াত করতে পারবে।

এ চুক্তির আমরা প্রত্যক্ষ কার্যকারিতা দেখলাম সিডরের সময় আমন্ত্রণ জানানোর আগেই মার্কিন যুদ্ধজাহাজের আগমন এবং এ দেশের কোনো কমান্ডের অধীনস্থ না হয়ে মার্কিন সেনাদের সম্পূর্ণ স্বাধীন কমান্ড প্রতিষ্ঠা। US Serviceman Protection Agreement ঃ ইউএস সার্ভিসম্যান প্রোটেকশন অ্যাগ্রিমেন্ট-এর কারণে কোনো মার্কিন সেনা বা অফিসার এ দেশের কাউকে খুন বা নারীকে ধর্ষণ করলে, তার কোনো বিচার করা বা আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া যাবে না। সুবোধ বালকের মতো তাকে সসম্মানে পেন্টাগনের হাতে তুলে দিতে হবে। ঢাকায় এফবিআই এর অফিস খোলার চুক্তিঃ সন্ত্রাস দমন, আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত এবং এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের কাজে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দেয়ার নামে বাংলাদেশে এফবিআই’র একজন স্থায়ী প্রতিনিধি নিয়োগ দানে ইতোমধ্যেই সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তি করেছে। মূলত এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ্যে কোন আন্দোলন প্রতিরোধের যাবতীয় কৌশল প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্যই এফবিআই’র স্থায়ী প্রতিনিধি কাজ করবেন।

প্রস্তাবিত টিকফা চুক্তি ঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন চাচ্ছে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (টিকফা) এর মাধ্যমে এদেশের বাজার পুরাপুরি মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির দখলে নিয়ে যেতে। চুক্তির বিভিন্ন প্রস্তাবনায় এবং অনুচ্ছেদে বাজার উন্মুক্তকরণ এবং সেবা খাতের ঢালাও বেসরকারিকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতসমূহে বিশেষ করে সেবা খাতগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। ফলে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে দেশের সেবাখাতসমূহ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির দখলে চলে যাবে। টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বন্দর প্রভৃতির ব্যবহার মূল্য বহুগুণ বেড়ে যাবে। প্রস্তাবিত আকসা চুক্তিঃ অ্যাকুইজেশন ও ক্রস সার্ভিসেস অ্যাগ্রিমেন্ট (আকসা) স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামরিক খাতে সহায়তার নামে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করে দক্ষিন এশিয়ার উপর মার্কিন নিয়ন্ত্রন পাকাপোক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।

প্রস্তাবিত আকসা চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ‘গাইডেড মিসাইল’সহ বেশ কয়েক ধরনের আধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করবে। এসব অস্ত্র ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতা দেয়ার কথাও রয়েছে। এছাড়া থাকবে যৌথ মহড়া ও সংলাপের ব্যবস্থা। প্রস্তাবিত ‘আকসা’ চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী জ্বালানি সংগ্রহ, যাত্রাবিরতি, সাময়িক অবস্থানসহ এ ধরনের বিভিন্ন সুবিধার জন্য বাংলাদেশে ‘পোর্ট অব কল’ সুবিধা পাবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর বাংলাদেশে উপস্থিতিরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।

আকসা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে চায় মার্কিন নৌবাহিনী। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.