আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'আমি মানুষ খাই না' একান্ত সাক্ষাৎকারে রয়েল বেঙ্গল টাইগার

৫ বছর শেষ করে স্থপতি হতে যাচ্ছি,আর কিছু না হলেও শিখেছি আমরা দরিদ্র জাতি না। দারি্দ্রতা অাছে স্বপ্

আমাদের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার আয়োজনে আজকের অতিথি দক্ষিণ এশিয়ার বিশিষ্ট প্রাণী রয়েল বেঙ্গল টাইগার। অনেক ঝামেলা পেরিয়ে তিনি আজ এসেছেন সাক্ষাৎকার দিতে। চলুন তার সঙ্গে কথা বলা যাক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন নিজস্ব সাংবাদিক: তো বাঘ সাহেব, কেমন আছেন? : ভাল থাকি কী করে বলুন? সাক্ষাৎকার দিতে শহরে এসে জ্যামের মধ্যে পড়ে প্রচন্ড মাথা ধরেছে।

আপনারা এখানে থাকেন কীভাবে? এর চেয়ে আমাদের জঙ্গলই ভালো। জ্যাম মুক্ত নিরিবিলি শান্ত পরিবেশ। কোথাও কালো ধোঁয়া নেই, গাড়ির বিরক্তিকর হর্ণ নেই। : সেটা অবশ্য ঠিক বলেছেন। কিন্তু শুনেছি ওখানে খাওয়া দাওয়া জোগাড় করা খুব কষ্টকর? : হ্যাঁ, জঙ্গলে ওয়ান স্টপ শপিং মল তো দূরের কথা, সামান্য মুদি দোকানও নেই।

খাবার দাবার দৌড়ে দৌড়ে ধরতে হয়। সে বিরাট ঝামেলার ব্যাপার। : আপনারা প্রধানত কী কী খান? : বনের গরু, ছাগল, শুকর, বানর। আর সবচেয়ে প্রিয় হরিণ। মাংস খুবই সুস্বাদু।

: সে কী, আপনারা হরিণ শিকার করেন? : হ্যাঁ করি। কেন কী হয়েছে? : না মানে বলছিলাম কী, হরিণ শিকার করেন বলে পুলিশ ধরে না? কিছুদিন আগে ভারতের অভিনেতা সালমান খান হরিণ শিকার করে কিন্তু ফেঁসে গিয়েছেন! : না! তেমন সমস্যা নেই। কারণ আমাদের জঙ্গলে কোনো থানা পুলিশ নেই। সুতরাং যা ইচ্ছে তাই ধরে ধরে খাওয়া যায়। : বাহ! তাহলে জঙ্গলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব খারাপ বলে মনে হচ্ছে।

: সে আপনি যা মনে করেন। তবে আমার জঙ্গলে আমিই আইন আমিই শৃঙ্খলা। : বেশ বেশ। তা আপনারা বেশ ফিগার সচেতন বলে মনে হচ্ছে? : হ্যাঁ, ফ্রেশ খাবার খাই, কোন কিছুতেই ফরমালিন নেই, বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান নেই। কাজেই আমরা বেশিরভাগ সময়ই থাকি ফিট।

আর এমনিতে আমাদের মানে বাঘদের দেহ প্রায় ৯ থেকে সাড়ে ১০ ফিট লম্বা হয়ে থাকে। বাঘিনীরা সারাদিন ঘর দোর সামলায় বলে তেমন খাওয়া দাওয়া করতে পারে না। সে কারণে ওরা আকারে আমাদের চেয়ে কিছুটা ছোট হয়। : আপনাদের শিশুরা কেমন হয়? : এক সঙ্গে প্রায় ৫/৬টা শিশু হয়। ওরা ৮ সপ্তাহেই বেশ বড় হয়ে যায়।

৬ মাসের মাথাতেই শিকার করতে পারে। তবে... : তবে কি? : আপনাদের মানে মানুষদের অত্যাচারে শিশুরা বড় হবার খুব একটা সুযোগ পায় না। শিকারিরা চামড়ার লোভে ওদের হত্যা করে। : কী বলছেন এসব। সত্যি? : অবশ্যই সত্যি।

আর সে কারণেই তো আমাদের সংখ্যা কমে যেতে শুরু করেছে। : কী রকম? : বাংলাদেশে আমাদের প্রধান আবাসস্থল সুন্দরবন। আগে যেখানে হাজারেরও বেশি বাঘ ছিল সেখানে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চারশো আর ভারতে তিন হাজার সাতশ’। আমাদের বাংলাদেশের লোকরা মোটেই আমাদের সম্পর্কে সচেতন না। আর এরকম যদি চলতেই থাকে তাহলে সুন্দরবন থেকে আমাদের হারিয়ে যেতে খুব একটা সময় লাগবে না।

: আচ্ছা সর্বশেষ প্রশ্ন, আপনারা কি এবার ভোটার হয়েছেন? : আসলে আমরা একটু অপরাধ করে ফেলেছি। ভোটার তালিকা করতে একজন গিয়েছিল সুন্দরবনে, আমরা সবাই মিলে তাকে খেয়ে ফেলেছি। : সে কী...! : কী করব বলুন, বড্ড খিদে পেয়েছিল যে। : আপনারা কি নিয়মতই মানুষ খান নাকি? : আরে না না, কী যে বলেন। আমরা মোটেই মানুষ খাই না।

তবে খুব বেশি খিদে পেলে অবশ্য ভিন্ন কথা। (বাঘের পেটের ভেতর থেকে গুড়-ম গুড়-ম আওয়াজ বের হলো। ) : আওয়াজ কীসের? : বেশ খিদে পেয়েছেতো তাই পেটে আওয়াজ হচ্ছে। : ওরে বাবা! আজকের সাক্ষাৎকার তাহলে এ পর্যন্তই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.