আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উইলিয়াম ডালরিম্পলের ইন্টারভিউ (পর্ব -৩)

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

প্রশ্ন : জাফর শাহর নিজের ব্যাপারটি কি রকম। তার ব্যাপারে আপনি খুবই সহানুভূতিসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন। তাকে গতানুগতিকভাবে এমনভাবে পোর্ট্রেইট করা হয়েছে যেন তিনি ঠিকমতো সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না। কিংবা উভয় দিক ভাবতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন এমন ব্যক্তি ছিলেন। উত্তর : আমি মনে করি না এটি যথার্থ।

তিনি আন্ডার রেটেড ক্যারেক্টারের। কিন্তু আমি কখনোই তার ব্যর্থতাকে অস্পষ্ট করতে চাইনি। মুখ্য একটি কালচারাল রেনেসার জন্য তিনি প্রভাবকের মতো ছিলেন। কিন্তু তাকে একটি বিদ্রোহের নেতৃত্বে উপযোগী মনে করা কঠিন। তার নেতৃত্বটি ছিল অন্যতম প্রধান ব্যর্থতা।

সেখানে একজন তরুণ নেতৃত্ব থাকতে পারতো। তাহলে হয়তো ইতিহাস অন্য রকম হতো। ৮২ বছর বয়স্ক একজন লোক আর কিইবা করতে পারতেন। তিনি সেই বয়সে তো অশ্বারোহী সেনাদলের নেতৃত্ব দেয়ার পর্যায়ে ছিলেন না। আমি এ বিষয়টি মানি না যে, আমি তার দোষ ঢাকার উপায় খুজেছি কিংবা তাকে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরেছি।

প্রশ্ন : এক পর্যায়ে আপনার বইটি সাধারণ পাঠকদের লক্ষ্য করেছে। অ্যানেকডটে পরিপূর্ণ সুপাঠ্য অংশ সেগুলো, সেই সময়কার ইতিহাসের বিশেষ জ্ঞানের আলোচনা ছিল না। কিন্তু আরেকটি পর্যায়ে এসে আপনি ইতিহাসবিদদের মনোযোগ টেনেছেন। নতুন উপাত্তের প্রাচুর্যের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ১৮৫৭ সালের ঘটনাটিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার প্রয়াস পেয়েছেন।

উত্তর : আমি মনে করি না, এগুলোকে পারস্পরিক বিরোধ হিসেবে দেখা হবে। ইনডিয়াতে আজকের দিনে ইতিহাস লেখার বেশ কিছু বিষয় রয়ে গেছে। এগুলোকে কন্ট্রাডিকশন হিসেবে দেখা হয়। আমি কেমবৃজে হিস্টোরিয়ান হিসেবে শিক্ষা নিয়েছি। আমি কোনেভাবেই অনুভব করি না যে হিস্টোরিয়ান হিসেবে আমি আনকোয়ালিফাইড।

প্রশ্ন : আসলে আমি আপনাকে কোনো পরামর্শ দিচ্ছি না। উত্তর : না না। কিন্তু ইনডিয়ায় লোকদের যদি কোনো একাডেমিক জব না থাকে তাহলে তাদের পক্ষে ইতিহাস লেখাটা খুবই বিরল ঘটনা। নিশ্চিতভাবে ইতিহাস বিষয়টি আমার কাছে উপভোগ্য। স্টিভেন রানজিম্যান আমার হিরো।

তিনি কেমবৃজে পড়ান, তবে লেখালেখিতেও বেশ পাকা। তিনি বাইজেনটিয়ামের শেষ দিনগুলো সম্বন্ধে চমতকার একটি বই লিখেছেন। এর নাম দি ফল অফ কনস্ট্যানটিনোপল ১৪৫৩। দি লাস্ট মোগল বইটি লেখার সময় আমি একে মডেল হিসেবে ভেবেছি। ইতিহাস লেখার ব্যাপারে তাকে আমি অনুকরণীয় হিসেবে ভাবি।

ইতিহাস লেখার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। আমি বড় বড় ইনডিয়ান ইতিহাসবিদদের অর্জন সম্বন্ধে মানহানিকর কিছু বলার ইচ্ছা রাখি না। কিন্তু আমি এটা মনে করি যে, তারা সাধারণ জনগণের জন্য লেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা কেবল একে অপরের জন্য লেখেন। এতে খুব কমই ব্যতিক্রম রয়েছে।

তাদের মধ্যে পান্ডিত্যপূর্ণ পরিভাষা ব্যবহারের একটা ঝোক আছে। আমার দৃষ্টিতে এভাবে লেখাকে পাঠকদের কাছে পৌছানো যায় না। ঐতিহাসিক মিথ চালু থাকে এসব কারণেই। (শেষ) অনুবাদ: একরামুল হক শামীম

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.