বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে
প্রশ্ন : বইটি থেকে এটি পরিষ্কার যে, কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক সম্বন্ধে তাদের পিটিশনের সূত্রে মিউটিনি পেপার থেকে আপনি আমাদের অবহিত করেছেন। সেই জীবনগুলোর গল্প আপনি বলেছেন। উপাত্ত টেনে মজার গল্পে সুতোয় গেথেছেন। ১৮৫৭ সালের ঘটনাটিকে পরিচ্ছন্ন চোখে দেখলে সিপাহিদের ক্ষেত্রে আদতে কি ঘটেছিল?
উত্তর : আপনি যদি দিল্লি পতনের সময়টির দিকে তাকান তাহলে হয়তো আরো অনেক কিছুই বুঝতে পারবেন। সিপাহি বিদ্রোহটি কেন ব্যর্থ হলো এ সম্বন্ধে পূর্ণাঙ্গ বেশ কিছু প্রমাণ রয়েছে।
আসলে দিল্লির সিপাহিরা সবাই খাদ্যাভাবের মধ্যে ছিল। এটি শুধু বৃটিশদের দ্বারা নগরী অবরোধের কারণেই হয়নি। এটি নগরীর প্রান্তদেশের গুজার এবং মিওয়াটি জাতিগোষ্ঠীর কারণেও হয়েছিল। কারণ তাদের হাত ধরেই নগরীতে সবকিছু পৌছাতো। নগরীর কেবল কিছু অংশ বৃটিশদের অবরোধে পড়েছিল, কিন্তু বিরাট অংশটিই প্রান্তদেশের লোকদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়েছিল।
সেই লোকগুলোর নিজস্ব কিছু এজেন্ডা ছিল। জুলাইয়ের শেষদিকে নগরীতে প্রায় ১ লাখ সিপাহি ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বরে নগরী পতনের সময় সম্ভবত ৩০ থেকে ৩৫ হাজারেরও কম সিপাহি অবশিষ্ট ছিল। বাকি অংশ চলে গিয়েছিল। কারণ তাদের সঠিকভাবে বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
সব পর্যায়ে পেপারটি প্রচুর বিষয় সম্বন্ধে বিশদ বর্ণনা প্রদান করে। মিলিটারি রেজিমেন্টের সব পিটিশন, সিপাহিদের অন্তর্বিদ্রোহ, বৃটিশদের হস্তক্ষেপ, উস্কানি, বৃটিশ ইনটেলিজেন্স সিস্টেমের উৎকর্ষ, ইনডিয়ান অংশের ব্যর্থতাসহ সবকিছুই এতে আছে।
প্রশ্ন : বৃটিশদের অত্যাচারের ব্যাপারে একটি প্রশ্ন। এটি কেবল একটি ঘটনা নয়। কিন্তু এটি এতোই তিক্ত যে, আশ্চর্য হতে হয়।
আপনি কি বৃটেন কর্তৃক প্রবল আঘাতের ব্যাপারটিকে দোষারোপ করতে যাচ্ছেন?
উত্তর : আমি এরই মধ্যে তা করে ফেলেছি। বলা হয় পশ্চিমের প্রতি দোষারোপ করার দিকে আমার ঝোক। আবার নিখুত বায়োগ্রাফি তৈরিতেও আমি আছি। উভয় দিকেই নাকি যথেষ্ট প্রমাণাদি আছে। নগরীর প্রতিটি পুরুষ সম্বন্ধে জানতে হবে।
তারা অস্ত্রধারী নাকি অস্ত্রবিহীন, সিপাহি নাকি সিভিলিয়ান সবকিছুই বুঝতে হবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, নিয়াল ফার্গুসন ও এন্ড্রি রবার্ট সেই সময়ে বৃটিশ সাম্রাজ্যকে সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করছিলেন। বিশেষ করে বৃটিশ সাম্রাজ্যকে গ্লোবালাইজেশনের মডেল হিসেবে তুলে ধরতে, উন্নতির ইঞ্জিন হিসেবে পরিচিত করতে চেষ্টা করছিলেন। আমাদের নিজস্ব ভুলগুলো এবং বৃটিশ সাম্রাজ্যের অন্ধকার দিকগুলো তুলে ধরা উচিত। দিল্লিতে যা ঘটেছিল তা সত্যিই দুঃখজনক।
প্রশ্ন : তারপর অমৃতসরের ব্যাপারটা?
উত্তর : হ্যা, আমি মনে করি বৃটিশ ইতিহাসবিদ এবং জাতীয়তাবাদী ইনডিয়ান ইতিহাসবিদদের উভয় অংশেরই দিল্লির কেন্দ্রীয়তার প্রতি গুরুত্ব না দেয়ার একটা ঝোক আছে। দিল্লি ছিল যে কোনো কর্মকান্ডের প্রধান থিয়েটারের মতো। তারপর না লক্ষৌ এবং কানপুর।
(চলবে)
অনুবাদ: একরামুল হক শামীম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।