আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগিং, সিটিজেন জার্নালিজম ও বাস্তবতা

বাংলাদেশের মানুষের সেন্স অব হিউমার তেমন উচু মানের নয় বলে একটা অভিযোগ পাওয়া যায়। এই ব্লগে শুধু থা

2002 এর কথা, বিদেশী কয়েকটি সাইটে প্রথম ব্লগিং এর খোঁজ পাই। আমি নিজেও একটি ব্লগ ওপেন করি সেখানে। টুকটাক লেখালেখি করতাম তখন। 2003 এ ত্রিভুজ ডট কম ওপেন করে তাতে ব্লগিং সুবিধা যুক্ত করি ইংরেজীতে।

বাংলাদেশী অনলাইন ব্যবহারকারীদের মতই অনেকেই তখনো ব্লগিং এর সাথে পরিচিত ছিলো না। সুতরাং ব্লগ নামটা পরিবর্তন করে অনলাইন জার্নাল করে দিয়েছিলাম। কিন্তু খুব বেশী লোক তাতে লিখতে উৎসাহী হয়নি.. হয়তো আমার সাইটি তখন ততটা জনপ্রিয় ছিলনা বলেই। 2004 এর শেষের দিকে আমার সাইট ক্রাশ করে ডেটাবেসটা হারিয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও আমার পুরোনো ডেটাগুলো ফিরিয়ে আনতে পারিনি।

ফলশ্রুতিতে সেটা আর কন্টিনিউ করা হয়নি। 2005 থেকে ব্লগ স্পটে শুরু হয় আবার আমার ব্লগিং..। বাংলায় ব্লগিং সুবিধা পেয়ে সামহোয়্যারইনেও 2006 থেকে 2007 পর্যন্ত ব্লগিং চালিয়ে যাই। পাশাপাশি ত্রিভুজ ডট কমে আবার ব্লগিং সুবিধা যুক্ত করি ইংরেজী ও বাংলায়। সর্বশেষে নিজের জন্য এই পার্সোনাল ব্লগ পেজ সেটাপ করি।

এটাই ব্লগিং বিষয়ক আমার কার্যকলাপের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বলা চলে। বলা চলে ব্লগিং বিষয়ে আমি মোটামুটি ভালই সিরিয়াস ছিলাম সেই প্রথম থেকেই। কথা হলো কেন করেছি এসব? করেছি একটা বিশেষ কারনে… আমার মনে হয়েছে এই ব্লগিংই দিতে পারে সত্যিকারের বাক স্বাধীনতা। ব্লগিই এর মাধ্যমেই আমরা সমন্বিত কণ্ঠস্বরে আওয়াজ তুলে সমাজ পরিবর্তন করতে পারি। এই সেদিনও আমি ব্লগিং নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলাম।

কিন্তু কিছুদিন আগে ব্লগ নিয়ে গবেষণামূলক একটি পেপার সাবমিটে এক বড় ভাইকে সাহায্য করার জন্য ব্লগের বর্তমান অবস্থা নিয়ে রিসার্স শুরু করি। গুগল ঘেটে ঘেটে সব ব্লগ সাইটগুলো পড়তে থাকি। বিভিন্নজনের মতামত ও ব্লগ বিষয়ক ভাবনাগুলোও পড়ে যাই একের পর এক। অবাক হয়ে লক্ষ করলাম ব্লগিং এর কি ভয়াভয় এব্যিউস হচ্ছে এখন। গত পাঁচ বছরের ধ্যান ধারনা গত একমাসেই অনেকটা বদলে গিয়েছে আমার।

বর্তমানে ব্লগের ব্যবহার ও ব্লগাররাই আমার সেই ধারনা বদলে দিচ্ছে। আমি এখন আর আগের মত আশাবাদী নই ব্লগিং বিষয়ে। ব্লগিং বিষয়ে কেন আশাবাদী নই আর সেটা বলতে হলে আমাকে আরো অনেক ষ্টাডি করতে হবে। তবে গত একমাসের ষ্টাডিতে যা দেখলাম তা পুরোই হতাশাব্যঞ্জ্যক। বস্তুত ব্লগিং হলো এমন একেটা মিডিয়া যা যেকেউই অর্জন করতে পারে এবং যা খুশি তাই প্রচার করে বেড়াতে পারে।

ফলশ্রুতিতে মতলববাজ মানুষদের একটি মোক্ষম হাতিয়ার হয়ে যাচ্ছে এই ব্লগিং। আমরা জানি পৃথিবীতে ভাল মানুষের চাইতে খারাপ মানুষরই বেশী ঐক্যবদ্ধ এবং খারাপ বিষয় প্রচার করার জন্য তারা খুবই সংঘবদ্ধ ও নিবেদিতপ্রাণ। অপর দিকে ভালমানুষরা অনেকটা গা বাঁচিয়ে চলছে এই সময়টায়। এদের ভেতরে যারা আবার একটু সচেতন তারা অলসতা করে হোক বা নিজেদের ভেতরে ঐক্যমত না থাকার কারনেই হোক এগিয়ে আসছে না এই মিডিয়াতে। এর ফলাফল হলো খারাপ জিনিষের প্রচার খুব বেশী হচ্ছে ব্লগিং নামক ওপেন মিডিয়াতে।

তবে যেহেতু ব্লগিং একটি ওপেন মিডিয়া, সেহেতু খারাপ এই প্রচারের জবাব দেয়ার জন্যও কাউকে না কাউকে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু যদি একটি গ্রুপ ঠিক করে তাদের মতামতের বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হবে তাহলে সেটাও হচ্ছে না। দু:খজনক হলেও সত্যি এই খারাপ ও মিথ্যা প্রচারকারীরা তাই করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মত অনুন্নত ও অল্পসংখ্যক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর দেশেও এরকম বেশ কয়েকটি মিডিয়া দাড়িয়ে গিয়েছে। ‘সচলায়তন’ নামের একটি ব্লগ সাইট তো রীতিমত ঘোষনা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধ মতের মানুষদের নিজেদের সাইটে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছে।

সামহোয়্যাইন ব্লগ নামের ব্লগটিতেও একই ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে। ক্রমাগত মিথ্যা পরিবেশনকারীরা দলবদ্ধভাবে সেখানে নোংরামী করলেও তাদের কিছু বলা হচ্ছে না কিন্তু সেইসব নোংরামীর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তাদেরকে কোন না কোন একটা কৌশল খাটিয়ে সাইট হতে ব্যান করে দিচ্ছে। এটা তো পুরো চিত্রটার খুবই খন্ডিত অংশ… পুরো বিশ্বব্যপী যা চলছে এই মিডিয়া নিয়ে সেটা নিয়ে গবেষনা করলে খুবই ভয়াভয় চিত্র তৈরি হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা কি এই মিডিয়াটি বয়কট করবো না এটিকে পজেটিভলি ব্যবহারের চেষ্টা করবো? এই প্রশ্নটারই একটা সুন্দর ও যৌক্তিক উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.