আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামের আলোকে সন্তানের প্রতি পিতামাতার কর্তব্য

রসুলে পাক(দঃ)বলেছেন,যে ব্যত্তি এ জগতে কোন মোমিনের দুঃখ দূর করে,পরজগতে আল্লাহ তার দুঃখ দূর করবেন এ

ইসলামের আলোকে সন্তানের প্রতি পিতামাতার কর্তব্য (১) মাওলানা মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন তৈয়বী মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে ইহ জগতে অসংখ্য নেয়ামত দান করেছেন। সন্তান সন্তনি মানুষের জন্য একটি অন্যতম নেয়ামত। সন্তানের প্রতি পিতা মাতার স্নেহ,মায়া মমতা,আসত্তি ইত্যাদি হূব্বে তব্‌য়ী' বা স্বভাবজাত ভালবাসার অন্তভুত্ত। যে লোক নিঃসন্তান হয়,সন্তানের অভাব তার জীবনের প্রতিটি মুহূতে অনুভূত হয়। সে ভীষণ মানসিক যন্ত্রনায় ভোগে।

যেন তার জীবনে অপূর্ণতায় ছোয়া লাগে। আর যার সন্তান থাকে,সন্তানের ভালবাসায় তার জীবন হয় আনন্দে ভরপুর। জীবনকে সে পূর্ণতায় খুঁজে পায়। এযেন সৃস্টিকর্তার এক অতূলনীয় নেয়ামত। এর বর্ণনায় পবিএ কুরআন মজীদে আল্লাহ পাক বলেন,এবং যারা বলে,হে আমাদের পালনকতা,আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরুপ করুন।

তাঁদেরকে তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ দেয়া হবে। আর তাদেরকে তথায় দোয়া ও সালাম সহাকারে অভ্যর্থনা করা হবে। তথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা কত উত্তম। (সূরা আল ফুরকান,৭৪-৭৬ আয়াত)ইসলামী বিধানে পিতামাতার প্রতি সন্তানের যেমনি হক রয়েছে,তদ্রুপ সন্তানের প্রতি ও পিতামাতার হক বা দায়িত্ব রয়েছে যা আদায় করার জন্য শরীয়তের নির্দেশ রয়েছে।

এ সর্ম্পকে একটি নাতিদীর্ঘ বিবরণ পেশ করা হলো। সন্তানের জন্মলগ্নে তার হেফাজত করা পিতা মাতার প্রথম কতব্য। এটা সন্তানের ফিত্‌রী বা স্বভাবজাত হক। মহান আল্লাহ মানব সন্তান সৃস্টির জন্য একটি মাধ্যম নিধারণ করেছেন। তা হল স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য মিলন।

এর ফলে যে মানব সন্তান জন্ম গ্রহণ করে,তার যথাযথ হেফাজত ও রক্ষাণাবেক্ষণ করা সন্তানের প্রথম হক হিসেবে স্বীকৃত। ইসলাম পূব্বতী আইয়্যামে জাহেলি বা অন্ধকার যুগে এ ব্যাপারটি ছিল সম্পূর্ণ উপেক্ষিত। সে যুগের লোকেরা ভুমিস্ট সন্তানকে কেবল জুলুমেই করতোনা বরং নিস্পাপ শিশু সন্তানকে নিমম্ভাবে হত্যা পযন্ত করতো। কখনো দারিদ্রতার ভয়ে শিশুকে জীবন্ত কবর দিত। আবার কখনো সন্তানকে দেব দেবীর নামে উৎসগ করার জন্য জ্যান্ত শিশুকে কেটে টুকরা টুকরা করতো।

(নাউজুবিল্লাহ)ইসলামে এ জঘন্য অন্যায় কাজকে চিরতরে হারাম করা হয়েছে। এরুপ অমানবিক কাজকে কবীরা গুনাহ্‌ সাব্যস্ত করা হয়েছে। পবিএ কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,''দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করোনা। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমি জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্মক অপরাধ''(সূরা বণী ইসরাঈল,৩১ আয়াত)সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পর তার ডানকানে আযান ও বাম কানে ইকামতের তাকবীর বলা সুন্নাত।

হযরত আবু ইয়ালা(রাঃ)হতে বর্ণিত,রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,''কোন গৃহে মানব সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে,তার ডান কানে আযান ও বাম কানে ইকামতের তকবীর বলবে। ''(আবু দাউদ শরীফ)আযান দেয়ার পর শিশুর মুখে মিস্টি জাতীয় কোন খাদ্য দেয়াও সুন্নাত। একে শরীয়তের পরিভাষায় তাহ্লীক'' বলা হয়। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ভূমিস্ট শিশুর মুখে খেজুর চিবিয়ে দেয়া হতো। বিশিস্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবাইর(রাঃ)জন্ম গ্রহণ করার পর তাঁকে রাসূলে পাকের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের)খেদমতে নিয়ে আসলে তিনি একটি খেজুর চিবিয়ে তাঁর মুখে দেন এবং তারঁ কল্যার্ণের জন্য দোয়া করেন।

সন্তান জন্ম গ্রহণের সপ্তম দিবসে মাথায় চুল মুণ্ডিয়ে ঐ চুল ওজন করে সমপরিমাণ চাঁদী সদকা করা উচিত। অতঃপর সন্তানের'আকীকা' করতে হয়। আকীকায় ছেলের জন্য দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল জবেহ করতে হয়। এ সর্ম্পকে হাদীস শরীফের বর্ণনায় রয়েছে, হযরত আমর বিন শোয়াইব(রাঃ)বর্ণনা করেছেন,রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,''কোন মুসলমানের গৃহে সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে,ঐ সন্তানের আকীকা হিসাবে কুরবানী করা চাই,আকীকার কুরবানী ছেলের জন্য দুটি আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল। ''(আবু দাউদ শরীফ)আকীকার জন্য পশু কুরবানী করা মূলতঃসন্তান লাভের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।

আর আকীকা সপ্তম দিবসে সম্ভব না হলে চতুদশ দিবসে বা একুশতম দিবসে অথবা যখন সম্ভব হয় তখন করা যায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.