আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ানো? (চার)

কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...

পেডা টিং টিং মানে পেট ভরা ভরা...তিন পাহাড়ি রাজনৈতিক নেতা যারা দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা পয়সা খাটাইছেন পর্যটন ব্যবসায়...পাহাড়ের আমেজটারে হয়তো তারা বুঝেন, তাই তাগো স্থাপনায় পাহাড়ের প্রাকৃতিক আমেজ পুরা পাওন যায়। কিন্তু লোভনীয় খাদ্য তালিকার মূল্য দেখলেই খাওনের শখ উইবা যায়...তাওতো একবেলা ওয়াইল্ডারনেস'এর মধ্যে খাওয়া। কিন্তু অর্ডার করনের পর ঘন্টা দেড়েক লাগবো শুইনা আমরা পিছুটান দিলাম...পেট চো চো করতেছিলো ক্ষিদায়। সিদ্ধান্ত নিলাম শহরে গিয়া খামু। শহরের সেরা খাওনের রেস্তোরাঁ গ্রীন...হিমেলের নির্দেশনামতো শহরের একমাত্র পরিবহন অটোরিক্সায় কইরা রিজার্ভ বাজারে গিয়া দেখি সেইখানেও কেবল ইফতারের আয়োজন হয়।

তয় ভাগ্য মনে হয় আমাগো সহায় ছিলো তাই পুলিশ সুপার রোজার মাসেও তার অতিথী আপ্যায়নে দুপুরে খাবার নিয়া গেছেন...তার কিছু উচ্ছিষ্ট রইয়া গেছে আর সেই উচ্ছিষ্ট দিয়াই আমরা ক্ষুধা নিবারন কইরা কটেজে রওনা দিলাম। রিজার্ভ বাজার এলাকা পার হইতে হইতে টের পাইলাম দেশের যেকোন মফস্বল প্রান্তের মতোন এইখানেও ঈদের আমেজ...শামিয়ানা টাঙ্গাইয়া ঈদ বাজার বসছে রীতিমতো। বেইজমেন্ট মার্কেট পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য ঈদ উপলক্ষে আসা ক্রেতাগো ভীড়ে। এই এলাকায় মনে হইলো কোন পাহাড়ির প্রবেশাধিকার নাই...বাঙালী মুখেরা বিভিন্ন ডায়ালেক্টে কথা কয় নোয়াখালি-সাতকানিয়া-ময়মনসিংহ-ঢাকা(?)। শহরের সংস্কৃতির সাথে তাল মিলাইয়া তারা এখনো রাঙ্গামাটির লোক হইতে পারে নাই।

আমাগো অটোওয়ালার বাড়ি লালবাগে ছিলো এইটা কইতেই বরং তার আগ্রহ বেশী মনে হইলো। চাচা সিদ্দিক মিস্ত্রীর হাত ধইরা ৯০ সালে রাঙ্গামাটিতে আসলেও ঢাকাই তার পছন্দের এলাকা। পর্যটনে আসনের পথে প্রচুর ছাড়া-ছাগল দেইখা তারে প্রশ্ন করলাম এইরম ছাগল ছাইড়া রাখলে কেউ চুরি করেনা? তার নিস্পৃহ মুখের উত্তরটা খুব পছন্দ হয় নাই আমার...সে কয়,"বাঙালীরা চুরি করেনা কিন্তু যদি বনরূপায় চইলা যায় তাইলে চাকমারা কাইটা খাইয়া ফেলে। " তার কন্ঠে স্পষ্ট পাহাড়িগো প্রতি বিদ্বেষের স্বর শুনলাম। আগে এর পাল্টা অভিযোগ পাহাড়ি বন্ধুগো থেইকা প্রচূর শুনছি।

পাহাড়িগো চরিত্র নিয়া যদ্দূর জানি তাগো সম্পদ কেন্দ্রীক সততা আছে...কিন্তু অটোওয়ালার তথ্য আমারে বিভ্রান্ত করে কি!? এই তথ্যের পর আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচমেট আলোময় চাকমার কথা মনে পড়ে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সাথেই ঘুরতো...জাতীয়তাবাদি ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতেও কোন এক পদে চইলা আসছিলো তার পাহাড়ি সত্ত্বার কোটা আর সাহস দিয়া। সেই আলোময়রেও কখনো ফাও খাইতে দেখি নাই ক্যাম্পাসের কোন দোকানে। বন্ধু ক্যহল্বা চিং মারমা তার ক্ষোভ মিশানো গলায় কইতো আলোময় হইলো পাহাড়ি রাজাকার। পাহাড়ি কোটার সমস্ত বৃত্তি আর সুবিধা ভোগ কইরাও তার ছিলো বাঙালী সখ্যতা...যেই সখ্যতা পাহাড়ি অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরোধী অবস্থান ছিলো স্পষ্ট।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.