সবাইকে বিজ্ঞানী হতে হবে এমন কথা কেউ বলে না। কিন্তু ন্যূনতম বিজ্ঞানশিক্ষা সবার জন্য অপরিহার্য। --বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম
ছবি: ডিএনএ-র একটি অংশের এনিমেশন চিত্র
এইযুগে "জিন" বা "জেনেটিকস" বা "ডিএনএ" এই শব্দ-গুলো শুনেননি এমন মানুষ হ্য়ত খুজে পাওয়া একটু দুস্কর হবে। বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রী হলেত অবশ্যই শুনে বা পড়ে থাকবেন আর না হলেও কোন না কোন ভাবে কারও না কারও কাছে সেটা শুনে বা পড়ে থাকবেন।
আসলে এই শব্দগুলো কি? মানে এর দ্বারা কি বুঝায় যা নিয়ে সারা দুনিয়ায় তোলপাড় চলছে, হাজার হাজার কোটি ডলারের গবেষণা হচ্ছে পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে।
কেনই বা মানুষ, গরু, ইদুর, মাছ, ডরসোফিলা (এক প্রজাতির ক্ষুদ্র মাছি), ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের পুরো জেনম সিকুয়েন্স করা হচ্ছে।
এই লেখার শিরোনামের ব্যাপারে আলোচনা শুরুর আগে একটু ভূমিকার দরকার আছে। আজকে সেই ভূমিকাতেই থাকছি। ভবিষ্যতে সিরিজ চলতে পারে। চলুন দেখা যাক কি দাড়ায় এই সর্ম্পকে একটু জানলে।
নীচের এই অংশটুকু এবং ছবি ইংরেজী উইকিপিডিয়ার থেকে নেয়া। সেজন্য উইকিকে ধন্যবাদ।
-------------
জেনেটিকস হচ্ছে সেই বিষয় সর্ম্পকে জানা বা বুঝা যার দ্বারা আমরা জানতে পারি কি করে জীব (সেটা এককোষী ব্যাকটেরিয়া হোক আর মানুষ) তার পূর্ব-পুরুষের বৈশিষ্ট্যগুলো তার নিজের মধ্যে গ্রহণ করে। ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলে হয়ত বুঝা যাবে বিষয়টা। ধরুন আপনার বাবা-মা দুজনেরই চোখের রঙ কালো।
তাহলে ৯০% ভাবে ধরে নেয়া যায় যে আপনার চোখের রঙও কালো। ঠিকই একই ভাবে, আপনার চোখের রঙ দেখেও ধারণা করা যায় যে, আপনার বাব-মা অথবা আপনার পূর্ব-পুরুষের চোখের রঙ ছিল কালো। তাই বলে সব সময়ই যে তাই হবে এটা কিন্তু বলা যাবে না। তবে এরকম হবার সম্ভবনাই বেশি। এর ব্যতিক্রমও হয় এবং হতে পারে।
যেমন আপনার আশে-পাশেই হয়ত কাউকে দেখবেন যার চোখের রঙ বাদামী কিন্তু তার বাব অথবা তার মার চোখের রঙ কালো। কেন এটা হতে পারে সেটা নিয়া পরে একসময় আলোচনা করা যাবে।
এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় "জেনেটিক ইনফরমেশন" যা একটা জেনারেশন থেকে আর একটা জেনারেশনে সঞ্চালিত হয় একটি "মলিকিউল" বা রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা যাকে বলা হয় "ডিঅকক্সি-রাইবো-নিউক্লিক-এসিড" সংক্ষেপে "ডিএনএ"।
এই ডিএনএ-র মধ্যেই থাকে সকল তথ্য কিভাবে এবং কি করে একটা জীব গঠিত বা পরিচালিত হবে। এই দুনিয়ার যত প্রাণী আছে অর্থাৎ: জীব-জন্তু, গাছ-পালা, মাছ, শ্যাওলা, ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাস যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই বা না পাই সকলেরই ডিএনএ আছে তাদের প্রতিটা কোষে।
তাহলে সহজ ভাষায় আমরা "জিন" কে বলতে পারি আমাদের পূর্ব-পুরুষের বৈশিষ্ট্য বহনকারী একটা খাম, যেই খামে থাকে একটা চিঠি অর্থাৎ "ডিএনএ" যেখানে আমার এবং আমার পূর্ব-পুরুষের সকল তথ্যই লেখা আছে পুন্খানপুন্খ ভাবে। আর এই খাম আর চিঠি অর্থাৎ জিন আর ডিএনএ র ব্যাপারটাকেই একসাথে বলা যায় ক্রোমোজম।
এই জিনগুলোই আমাদের বাবা-মার কাছ থেকে আমরা পাই এবং এই জিনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের পিতা-মাতার শারীরিক এবং মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলো আমাদের মধ্যে গ্রহণ করি একই সাথে আমাদের পুর্ব-পুরুষদেরও।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।