আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একশত টাকায় বাসা ভাড়া দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন (আমরা লজ্জিত, আমাদের ক্ষমা করবেন)

আহ অমরত্ব, তোমার উষ্ণ ঠোঁটে রাখি ঠোঁট, চোখ বন্ধ করে সবটুকু আনন্দ ভোগ করি। তোমার উষ্ণতায় বারেবারে বিলীন হয়ে যাই, দিতে পারিনি কিছুই, শুধু নষ্ট করে যাই। আমাদের শিক্ষকদের সাথে রাষ্ট্রের নিশ্চয়ই ঠাট্টার সম্পর্ক নয়। একজন শিক্ষককে বাসা ভাড়া বাবদ একশত টাকা দেয়া হত এখন যা পাঁচশত করা হয়েছে। চিকিৎসা ভাতা একশত পঞ্চাশ টাকা থেকে তিনশত টাকা করা হয়েছে।

বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এটা অত্যন্ত হাস্যকর। আমাদের শিক্ষকরা আন্দোলন করেছিলেন। সবচেয়ে নির্বিবাদী মানুসগুলো, যারা নীরবে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন, সেই মানুষগুলো একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। আমাদের রাষ্ট্র সেই নির্বিবাদী মানুষগুলোর চোখ পানিতে ভরিয়ে দিল। বুঝিয়ে দিলো এ চোখ শুধু অশ্রু বিসর্জনের জন্য।

শিক্ষায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা এতটাই এগিয়ে গিয়েছি যে, এইসব দরিদ্র শিক্ষকদের আমাদের চোখে আর মানুষ মনে হচ্ছে না। লক্ষ্য করে থাকবেন যে গল্প উপন্যাসে স্কুল মাস্টারদের পূর্বে সবসময় দরিদ্র বিশেষণ লাগানো হয়। এটাই ঠিক, তাই শিক্ষকরা যখন আন্দোলন করেন, তখন তাদের লাঠিপেটা করে মেরে ফেলতে হয়। সবাই কে তো আর আন্দোলন করা মানায় না।

আমাদের এক শিক্ষক একদিন ক্লাশে আমাদের জিগ্যেস করেছিলেন, আমরা ভবিষ্যতে কি হব। আমরা সবাই তখন লাভজনক পেশাগুলোকেই বেছে নিয়েছিলাম। শিক্ষক হব এমন আত্মঘাতী চিন্তা আমরা কেউ করিনি। স্যার তখন অসহায় ভাবে বলেছিলেন, 'তোমাদের মধ্যে কি একজনও শিক্ষক হবেনা। ' তখন একজন পেছন থেকে বলেছিল, 'শিক্ষক হলেও আপনার মত বাংলার শিক্ষক হবনা, প্রাইভেট পড়ান যায় এমন সাবজেক্টের শিক্ষক হব।

' তখন স্যার যে লজ্জা পেয়েছেলেন, সেটা মাঝে মাঝে মনে হয়। জানিনা তখন কেন আমার মাঝে একটু খারাপ লাগা কাজ করে। আমাদের শিক্ষকরা কখনই কোন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেন না। হলমার্ক কেলেঙ্কারি কেন হল, পদ্মা সেতু কেন হবেনা, শিবির কেন যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে পারে, বিশ্বজিৎকে কেন কুপিয়ে মারা হল, বিরোধী দল সংসদ বর্জন করলেও কেন ভাতা নিচ্ছে, সে ব্যাপারে তারা কোনদিন প্রশ্ন করেননি। হয়তো ছেলেটার অসুখ, কিংবা টাকার অভাবে মেয়েটার বিয়ে দিতে পারছেননা কিংবা শুধুই দুইবেলা ভাত খাবার টাকা নেই এইজন্য হয়তো আন্দোলনে নেমেছিলেন।

এটা কি তাঁদের ভুল ছিল? আমাদের শিক্ষকরা লজ্জিত, উনারা আপনাদের মানুষ করতে পারেননি, সেই সব পুলিশ কিংবা মন্ত্রীদের জন্য উনারা লজ্জিত। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর, তাই তাঁরা যখন দেখেন সমাজে কোন মানুষ পশু হয়ে গেছে, তখন তারা এটাকে তাঁদের ব্যর্থতা মনে করেন। যারা আমাদের সবচেয়ে শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তিদের গায়ে হাত তুলেছেন, তাদের জন্য আমরা করুণা বোধ করি। কারণ তারা মানুষ হতে পারেনি, পশু হয়ে গেছে। আমাদের শিক্ষকবৃন্দ আমরা লজ্জিত, আপনারা আমাদের ক্ষমা করবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.