আমি সত্য জানতে চাই
লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান, একজন সেনাপ্রধান মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন ১নং সেক্টর কমাণ্ডার এবং জেড ফোর্সের অধিনায়ক। এ ছাড়াও তিনি জাতীয়তাবাদী দল- বি এন পির প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮১ সালের ৩০শে মে তিনি চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে একদল আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। আজ শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী।
মৃত্যুদিবসে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯শে জানুয়ারী বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মাতার নাম জাহানারা খাতুন ওরফে রানী। পাঁচ ভাইদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর পিতা কলকাতা শহরে এক সরকারি দপ্তরে রসায়নবিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অসম্ভব মেধাবী ও প্রখর বুদ্ধি জ্ঞানসম্পন্ন । তাঁর শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে ও কিছুকাল কলকাতা শহরে অতিবাহিত হয়। ভারতবর্ষ বিভাগের পর (১৯৪৭) তাঁর জন্মস্থান পূর্ব পাকিস্তানের অংশে চলে আসে এবং তাঁর পিতা পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি শহরে চলে যান। তখন জিয়া কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমী স্কুলে ভর্তি হন। ঐ স্কুল থেকে তিনি ১৯৫২ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং তারপর ১৯৫৩ সালে করাচিতে ডি.জে. কলেজে ভর্তি হন।
একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদে উন্নীত হয়ে জয়দেবপুরে সেকেন্ড ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন। উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানিতে যান। ১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং চট্টগ্রামে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর বর্বরের মতো ঘৃণ্য হামলা চালায়।
সে রাতে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনপ্রিয় বাঙালি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বন্দী হন। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন।
This is Swadhin Bangla Betar Kendra. I, Major Ziaur Rahman, at the direction of Bangobondhu Mujibur Rahman, hereby declare that Independent People's Republic of Bangladesh has been established. At his direction , I have taken the command as the temporary Head of the Republic. In the name of Sheikh Mujibur Rahman, I call upon all Bengalees to rise against the attack by the West Pakistani Army. We shall fight to the last to free our motherland. Victory is, by the Grace of Allah, ours. Joy Bangla.
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে একদল উছৃঙ্খল বিপদগামী সামরিক কর্মকর্তার হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত পর বাংলাদেশকে বহু বছরের রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে টেনে নেয়।
সেনাঅভ্যুত্থানের নেতারা অল্পদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ হয়ে যান এবং অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান আর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দেশ অচল হয়ে পড়ে। এরই মাঝে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৬ সালের ২৯শে নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন এবং ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত সায়েমকে কৌশলে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। এর পর ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সামরিক বাহিনীর মধ্যে যারা জিয়ার বিরোধীতা করত তাদের সাথে জিয়ার নির্মম ব্যবহারের কারণে জিয়ার অনেক সমালোচনা করা হত।
জিয়ার পুনর্বাসনে কয়েকজন আওয়ামী লীগের লোক তার প্রচুর বিরোধীতা করে।
(চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস)
জিয়াউর রহমান চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর রাস্ট্রপতি থাকাকালে তার দলের চট্রগ্রামের স্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যকার কলহ থামানোর জন্য ১৯৮১ সালের ২৯শে মে চট্টগ্রামে আসেন এবং চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে অবস্থান করেন। পারের দিন ৩০শে মে গভীর রাতে সার্কিট হাউসে বীর উত্তম মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুরের নেতৃত্বে সার্কিট হাউসে একদল আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। বিক্ষুব্ধ সেনা সদস্যরা তার লাশ চট্টগ্রামের রাউজানের গভীর জঙ্গলে কবর দেয়। তিনদিন পর ঐ লাশ উদ্ধার করে ঢাকার শেরে বাংলানগরে এনে দাফন করা হয়।
আজ ৩০শে মে,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বি এন পির প্রতিষ্ঠাতা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমাণ্ডার, জেড ফোর্সের অধিনায়ক, শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুদিবসে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।