আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিউজিক কম্পোজার সানী জুবায়েরের কথা

গভীর কিছু শেখার আছে ....

সুইডেনের রয়াল ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মিউজিক থেকে মাস্টার্স করা উপমহাদেশের একমাত্র মিউজিক কম্পোজার সানী জুবায়ের। মিউজিকের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসাই তাকে আজ দাড় করিয়েছে বর্তমান অবস্থানে। সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন যায়যায়দিনে। শেয়ার করেছেন মিউজিক নিয়ে তার উচ্চ শিক্ষার নানা স্মৃতি ও জানিয়েছেন মিউজিক নিয়ে তার ভাবনার কথা। সে কথাগুলোই তুলে ধরা হলো এখানে।

আপনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে কোথায়? শৈশব-কৈশোরের পুরোটা সময়ই কেটেছে পুরনো ঢাকায় নানাবাড়িতে। নানা মইনুদ্দিন ছিলেন কবি। তাই বাড়িতে সাহিত্যিক আবহ ছোট থেকেই আমরা পেয়েছিলাম। আর পড়ালেখা সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। মিউজিক নিয়ে পড়ালেখার কনসেপ্টটি কখন পেলেন? উচ্চ মাধ্যমিকের পর আমি গ্র্যাজুয়েশন করার জন্য চলে যাই ইনডিয়ায়।

সেখানে কুমাউন ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি সাহিত্য, ভূগোল ও মিউজিক নিয়ে পড়ালেখা করি। মিউজিক নিয়ে আগ্রহ আমার আগে থেকে হলেও ইনডিয়ায় যখন মিউজিক নিয়ে লেখাপড়া করি তখনই আমার মাঝে মিউজিক নিয়ে আরো উচ্চশিক্ষার আগ্রহ তৈরি হয়। এ সময় আমি ওস্তাদ বাড়ৈ গোলাম আলি খানের নাতি ওস্তাদ মাজহার আলী খান ও ওস্তাদ জাওয়াদ আলী খানের কাছে সঙ্গীতের তালিম নিই। আরেকটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়। ’৯৩-৯৪ সালের দিকে যখন আমি মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করছি তখন দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে প্রথম একটি লাইভ কনসার্টে মোজার্ডের সিম্ফোনি শুনি।

এটি আমাকে এতোটাই আন্দোলিত করেছিল যে, মিউজিক নিয়ে আরো নতুন কিছু শেখা ও করার আগ্রহ আমার সেদিন থেকে আরো দৃঢ় হয়। মিউজিক নিয়ে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন সত্যি হলো কিভাবে? ইনডিয়ায় গ্র্যাজুয়েশন করে দেশে ফিরে আসি ’৯৫ সালে। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করি। এর পরপরই। তবে মিউজিক নিয়ে কিছু শেখা ও করার ভাবনাটা তখন ভেতরে ভেতরেই ছিল।

তাই ঢাবি থেকে মাস্টার্স করার পর ’৯৭ সালে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে প্রথম কনসার্টটিও করে ফেলি সেই তাগিদ থেকেই। এরপরই সুইডেনের স্টকহোমের রয়াল ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মিউজিকের ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পোজিশনের প্রফেসর বিল ব্রুনসনের সঙ্গে কন্টাক করি কম্পোজিশনের ওপর পড়ালেখার সুযোগ পাওয়ার জন্য। তবে সেজন্য আমাকে গটল্যান্ডের স্কুল অফ মিউজিক কম্পোজিশনে দুই বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কমপ্লিট করতে হয়েছে। ডিপ্লোমা শেষ করার পর আরেকটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে চান্স পাই রয়াল ইউনিভার্সিটি কলেজে। ২০০৬ সালের ৯ জুন হাতে পাই বহু সাধনার মাস্টার্স ইন মিউজিকের সার্টিফিকেটটি।

এভাবেই মিউজিক নিয়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন এক সময় সত্যি হয়। বর্তমানে কি কি কাজ করছেন? বর্তমানে আমি আলিয়স ফ্রসেজে ওয়েস্টার্ন ক্লাসিকাল কম্পোজিশনের ক্লাস নিচ্ছি। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইভ সলো কনসার্ট করছি। বাজারে কতোটি অ্যালবাম রয়েছে আপনার? আমি সংখ্যায় বেশি কিন্তু মানহীন অ্যালবামে বিশ্বাসী নই। ২০০৩ সালে ওয়ার্ল্ড মিউজিকের ব্যানারে অ্যালবাম নির্জনস্বাক্ষর ও ২০০৬ সালে টোনাটুনির ব্যানারে অ্যালবাম অজস্র কবিতা রিলিজ হয়।

ভালো গানের শ্রোতা সব সময়ই ছিল ও থাকবে। এ কারণে শ্রোতাদের রেসপন্সও ভালো পেয়েছি। আর আমি কখনোই মিক্সড অ্যালবাম বা মিক্সড কনসার্ট করিনি। বরং আমার সব কাজই সলো। মিউজিক নিয়ে আপনার ভাবনা কি? এটা সত্যি, বর্তমানে উপমহাদেশে আমিই একমাত্র মিউজিক কম্পোজিশনে উচ্চশিক্ষা নেয়া।

তবে আমি স্বপ্ন দেখি ও বিশ্বাস করি, আগামী ২০ বছরের মধ্যে এ দেশের ছেলেমেয়েরাই সিম্ফোনি বাজাবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.