আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বায়নের নরকীয়তা : মিডিয়ায় নারী উপস্থাপনা- পর্ব ২



‘....... পণ্য ব্যবহার করুন’- এমন বিজ্ঞাপন ছাপানো এক ধরনের বিষয়। আর পণ্যের সাথে একজন জলজ্যান্ত নারীকে দেশে দেশে হাঁটিয়ে সে সংবাদ ছাপানো আরেক জিনিস। পত্রিকার জন্য অর্থ দরকার। সে অর্থের জন্য নিশ্চয়ই বিজ্ঞাপন ছাপবে। কিন্তু সংবাদপত্র যেখানে নিজেই জনগণের প্রতিনিধি সেখানে সে নিজেই এ জাতীয় একটি সংবাদ ছাপাবে কী না তা নিয়ে এ নাগাদ বহু আলোচনা হয়েছে এবং এখনো বোধ হয় তা আবারো আলোচনার জন্যই উঁকি দিচ্ছে।

কেননা সংবাদপত্র নিজেই যদি নিজ দায়িত্ব থেকে এমন সংবাদ ছাপে তাহলে কী তা সত্যিই ‘জনগণের সদা জাগ্রত লোকসভা’ হতে পারে। সমাজ পরস্পরায় যে নির্ভরশীলতা তার সাথে দায়বদ্ধতাও যুক্ত থাকে। গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও তা অক্ষরে অক্ষরে স্বীকার্য। বৈশ্বিক অবস্থার কারণে এখন কসমোপলিটন কোম্পানিগুলোর মানুষকে পণ্যমনস্ক করার সময়। সব কোম্পানিগুলো মানুষকে পণ্যমনস্ক করার জন্য, মানুষের মাঝে মনস্তাত্তিক চাহিদা বৃদ্ধিতে সব রকম কৌশল গ্রহণ করছে।

কিন্তু গণমাধ্যম, নারী ও পণ্য এ তিনটির সম্পর্কে কেমন হবে? গণমাধ্যমকে বিচার করতে হবে এ সম্পর্ক। নিশ্চয়ই পণ্যের বাজার বাড়ানোর জন্য নারীকে যা তা ভাবে ব্যবহার করা যাবে না। এ নৈতিক দায়বদ্ধতা জন্ম নিতে হবে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর মাঝে এমনকি পত্রিকার মালিক প্রকাশক ও সম্পাদকদের মাঝে। আর গণমাধ্যমগুলো নিশ্চয়ই এটা ভুলে গেলে চলবে না যে নারী আর পণ্য এক জিনিস নয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই নারী মর্যাদাসম্পন্ন উপস্থাপন থাকতে হবে।

সবশেষে একটি বাস্তবতা - øায়ুযুদ্ধের পর আমেরিকার বিখ্যাত সিনে পত্রিকা প্লে-বয় এমন সব বিজ্ঞাপন ছাপাতে লাগলো যে প্লে-বয়ের প্রচ্ছদে একটি মেয়ের ছবি ছাপা হওয়া মানে সে দুনিয়া জোড়া বিখ্যাত হওয়া, ক্ষমতায়িত হওয়া। এ জাতীয় বিজ্ঞাপন হাতে পেয়ে আর প্লে-বয়ের প্রচ্ছদে আমেরিকার মেয়ে অর্ধ-নগ্ন ছবি দেখে রাশিয়ার মেয়েদের মনে আগ্রহ আর জেদ দুটোই জন্ম হয়। যেন নিজেদের ক্ষমতায়িত করার এটাই মোক্ষম সুযোগ। ফলে যা হবার তাই হলো। প্লে-বয়েরও ইচ্ছা হাসিল হলো।

এরপর রাশিয়ার মেয়েরা প্লে-বয়ের প্রচ্ছদে স্থান পেতে পুরো নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামেন পোজ দিতে আরম্ভ করলো। এমনকি লেলিনের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়েও নগ্ন হয়ে পোঁজ দিতে আরম্ভ তারা কুন্ঠা বোধ করে না। আমরা নিশ্চয়ই তেমন নারী উন্নয়ন চাই না। আমাদের সংস্কৃতি তেমন নারী উন্নয়নে বিশ্বাসীও নয়। আমাদের বেঁচে থাকা ও সার্বিক উন্নয়নে রয়েছে নিজস্ব মূল্যবোধ।

তা বিচার করতে হবে তাই পণ্যের বাজারজাত করলে মুক্ত বাজারের ধুয়া তুলে সবই হোক কিন্তু অন্তত নারী উন্নয়নের নামে নারীর দেহ মেপে ঝোপে সুন্দরী বাছাই, ফটোজেনিক বাছাই বন্ধ হোক।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.