আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বোধ প্রানীদের শত্রুতা

জীবন গঠনে নিজেস্ব প্রতিক্রিয়ার দায় বেশি, ঘটে যাওয়া ঘটনার ভূমিকা সামান্য।

আমার ছাত্রীর বাসার কলিং বেল টিপেই বুক দুরুদুরু করতে থাকে। দরজা খুলেই যেই হাসিমুখটা স্বাগতম জানায়, তাকে দেখে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই, পড়াতে আমার দারুন লাগে। ভয়ের কারণ তখন ওর ফাঁক দিয়ে এসে আমার সামনে... একটা এক ফুটি পিচ্চি কুকুর। যারা কুকুর প্রেমিক, তারা হয়তো একে 'কিউট' বলবেন... গা ভর্তি চকচকে কালো এলোমেলো বড় বড় লোম।

চোখ গুলাও লোমে ঢাকা। খুব উৎসাহের সাথে বাইরে বেরিয়ে এসেই কিছুক্ষন চিৎকার। আমি কাষ্ঠ হাসি হেসে সেদিকে তাকাতেই কুকুর আরও উৎসাহ পেয়ে যায়, স্কার্টের নিচ দিয়ে উঁকি দিতে থাকা পায়ের আঙ্গুল মহা উৎসাহে চাটা শুরু করে। এক একবার ইচ্ছা করে একটা গগন বিদারী চিৎকার দিয়ে পা ঝাড়া দিয়ে কুকুরকে ছুঁড়ে ফেলে দেই। কিন্তু 'ভদ্রতা' বলে কথা, আমি মুখের মাপা হাসিটা ধরে রেখে কুকুর ছানাকে কিছু আদরের কথা বলে... আহারে কি সুন্দর কুকুররে।

আমাকে বড় ভালোবাসেরে... এই টাইপের। তীব্র ভালোবাসায়, প্রতিবার পড়াতে চাওয়ার সময়ই কুকুর সাহেব আমাকে আদর করতে আসেন। আমি আতঙ্কে সিটিয়ে থাকি। আমার কুকুর ভীতি অতি পুরানো। হাস্যকর পর্যায়ে আছে এখন।

রাস্তার একই পাশে কুকুর হাঁটতে থাকলে আমি সাথে সাথে রাস্তা পার হই। আর যাই হোক, কুকুর আর আমি এক পাশে নেই। কুকুর ভালোবাসতে না পারার পিছনে আমার দোষ নেই। ছোটবেলা একবার কুকুরের তাড়া খেয়েছিলাম। নানুবাড়িতে, সেই যেগুলোকে নানাভাই দুই বেলা খাওয়াতো, ওই নির্বোধগুলো তাড়া করেছিল কি না কি ভেবে।

আমি কি সুন্দর সামনে দিয়ে হাঁটছি, তখন একটা হঠাৎই উঠে দাঁড়ালো। আমি ভয় পেয়ে দৌঁড়ে সরে যেতেই সব ক'টা দলবল নিয়ে আমার পিছনে দৌড়ানো শুরু করলো... তারপরে সেবার.. যখন বানরের খামচি খেয়েছিলাম? ঝিকাতলায় একটা ছোট চিড়িয়াখানার মত ছিল। একবার হিমেল ভাইয়া এসে চার বছরের আমাকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়েছিল। বানরের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতেই একটু কাছে চলে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষন পরে আমি হাপুশ নয়নে কান্না।

ওই ভালো ভালো চেহারার বানরগুলো আমাকে খামচি দিয়েছে। বা হাতের বাহু থেকে রক্ত পড়ছিল অনেক, মনে আছে। এখন অবশ্য দাগ টাগ নেই, থাকলে তা দেখিয়ে কোন দুধ্বর্ষ অভিজানের গল্প করা যেত। শুধু এখানেই শেষ না, ওই একই সময়ের দিকে। এক বিলাই আরেক বিলাইকে তাড়া করেছে, বিলাই দিয়েছে আমার পায়ের উপর দিয়ে লাফ।

বিড়াল সরে যাওয়ার পরে দেখা গেল আমার ডান পা দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছে...বিড়ালের খামচি। তখন নানু লাউ পাতা দিয়ে আদা বাটা টাইপের অনেক বিদঘুটে খাবার খাইয়েছিল, মনে আছে। আরও কত কি করলো! ছাত্রীর কুকুরের পা চাটানি খেয়ে পা ধুয়ে এসে মনে হলো লিখেই ফেলি আমার শোক গাঁথা...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।