সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশে অপরাধ প্রবনতা বাড়ছে ! তাই মেয়েদের ওপর আক্রমন কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করলে ভুল হবে। সেটা সামগ্রিক অবক্ষয়ের প্রতিফলন। সামাজিক জটিলতার ক্ষেত্রে এক পক্ষ আর পক্ষকে ঘায়েল করতে মেয়েদেরকেই লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেয়া হচ্ছে! আমাদের দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা যুগে যুগে এমন-ই কায়েম হয়ে গেছে যে, মেয়েদের একটু উত্ত্যক্ত করা বা অপমান করাকে ছেলেরা তো বটেই অনেক মেয়েও প্রশ্রয়ের চোখে দেখে! দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো প্রয়োজন! মাথা নিচু করে নয়। মাথা উঁচু করে সম্মান নিয়ে বাঁচতে হবে মেয়েদের। মেয়েদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিবাদে মেয়েদের-ই এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে।
এই শহরে, এই দেশে, বাসে, টেম্পোতে লেডিস সিটের সামনে এক শ্রেণীর পুরুশের ইচ্ছেকৃত ঠেলাঠেলি বা রাস্তা দিয়ে আসার সময় কোন মেয়ের প্রতি ছেলেদের ছুড়ে দেয়া মন্তব্য তো ইভটিজিং এর প্রাথমিক উদাহরন। আবার রাস্তাঘাটে বা পাড়ার টিজিং এ দেখা যায় অল্প বয়স্কদের প্রাধান্য । সহযাত্রী বা পথচারীরা প্রতিবাদ তো দূরে থাক, দেখেও না দেখার ভান করে! অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়েরা লোকলজ্জার ভয়ে ব্যাপারটাকে চেপে যায়! আর এর ফলেই ঐ সমস্ত বিকৃত রুচির পুরুষ আরও জোর পায়। এক্ষেত্রে মেয়েদের-ই এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করতে হবে। সবার সামনে পুরুষটির তথাকথিত ভদ্রতার মুখোশটা খুলে দিতে হবে।
অফিসে আদালতে মহিলা সহকর্মীদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত করে তাচ্ছিল্য দেখিয়ে অনেক সময় মহিলাটির প্রতি অশ্লীল মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে অনেকেই আনন্দ পান। আর তাই অফিসে সমস্ত মহিলা কর্মীকে একজোট হয়ে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে।
এখনো অধিকাংশ পুরুষ কি ঘরে কি বাইরে মেয়েদের অসম্মান করে চলেন! পুরুষের মনে রাখা উচিত- নারী- পুরুষের সম্পর্ক চাটনি নয়! তারা একে অপরের পরিপুরক। মেয়েদের সম্মান দিয়ে, সহজ বন্ধুত্তের পথে চললে বিকৃত মনের ভাবটিও উধাও হয়, পরিবেশটাও সুন্দর হয়ে উঠে । মেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠিত হলে বাড়ীতে, অফিসে, সমাজে সর্বত্র মেয়েরা নিজেদের সম্মান আদায় করে নিতে পারবে। নিজের উপর নির্ভরশীল হলে তার চিন্তার বিকাশও ঘটবে। ভাবতে শিখবে। তখন শুধু সে নিজের কথা না আর পাঁচজনের কথাও ভাববে।
তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। সামগ্রিক চেতনাই ক্রমশ তখন বদলে যাবে। ফলে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে উঠবে । যখন মেয়েরা সচেতন হবে, প্রতিবাদী হবে, বিকৃত মানসিকতার পুরুষদের মুখোমুখি হবে একমাত্র তখন-ই সম্ভব হবে এ দেশের মেয়েদের, প্রতিদিনের, প্রতিমুহূর্তের এইসব সমস্যার সমাধান। জানি এটা বড় কঠিন কাজ।
কিন্তু তবুও মেয়েদের একজোট হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।
একদিন হয়ত পুরুষ ও নারীরা সম্মিলিত ভাবে ঐসব বিকৃত মনের পুরুষের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে । আর মেয়েরা তাদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে পথ চলতে পারবে। কাজ করবে। সংসার সামলাবে ।
কিন্তু এইসব সমস্যা সমাধানে প্রথমে মেয়েদের-ই এগিয়ে আসতে হবে। সচেতন হতে হবে নিজের সম্পর্কে । চারপাশের পরিবেশের মানুষ সম্পর্কে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।