আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নুহাশের মেয়ে হতে চান বাঁধন

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

মেয়েটা নাচতে জানে না, গাইতে জানে না, অভিনয় পারে না এমনকি কবিতা আবৃত্তিও করতে পারে না, তবে বই পড়তে জানে। হুমায়ূন আহমেদের বই হলে তো কথাই নেই। প্রিয় এ লেখকের প্রায় সব বই পড়া হয়ে গেছে তার। ডাক্তারি পড়াশোনার খাতিরে কলেজে যেতে হয় তাকে। যাওয়ার সময় আসাদ গেটে একবার, মিরপুর-1 নাম্বারে আরেকবার বড় একটি বিলবোর্ড দেখতে পায়।

বড় বিলবোর্ডগুলোতে লেখা দারুচিনি দ্বীপের নায়িকা খুজছি। নিচে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফোন নাম্বার। এভাবে বিলবোর্ড দেখে দেখে মেয়েটি ভাবে_ দারুচিনি দ্বীপ তো হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস। এটা আবার কি? একদিন আগ্রহ করে ফোন করে ফেলে। হয়ে যায় তার রেজিস্ট্রেশন।

তখনো কোনো প্রস্তুতি নেই। আর সেই মেয়েটিই লাক্স-চ্যানেল আই সুপার স্টার প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছে। তিনি বাঁধন, পুরো নাম আজমেরী হক বাঁধন । বাঁধনের পরিবারটি খুবই রক্ষণশীল। তার পরিবারে আগে কেউ কখনো গান করেননি, অভিনয়ও করেননি।

কিন্তু বাঁধন সেই চিরাচরিত গন্ডি ছেড়ে বের হয়ে আসতে পেরেছেন আত্মবিশ্বাসের জোরে। মিডিয়ায় নিজের উপস্থিতিকে ক্রমেই করে তুলেছেন উজ্জ্বল। চাওয়া পাওয়ার খেরোখাতা চাওয়া পাওয়ার হিসাবটি খুবই পরিষ্কার বাধনের। পাচ ফুট তিন ইঞ্চি উচ্চতার এ মেয়েটি মনে করছেন, পৃথিবীতে খুব ভাগ্যবতী মানুষের একজন সে। লাক্স-চ্যানেল আই প্রতিযোগিতার ফলে বদলে গেছে তার জীবনধারা।

লাক্স ও চ্যানেল আইয়ের কাছে তার সীমা পরিসীমা ছাড়া কৃতজ্ঞতা। তিনি এখন পরিচিতি পেয়েছেন, মিডিয়ায় কাজ করতে পেরেছেন। এটিকে অনেক বড় পাওয়া হিসেবে মানছেন বাঁধন। হিমু আর মিসির আলীর মতো চরিত্রগুলো খুবই পছন্দ তার। হুমায়ূন আহমেদের যে কোনো কাজই আন্দোলিত করে তাকে।

লাক্স-চ্যানের আই সুপার স্টার প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছেন কেবল দারুচিনি দ্বীপ হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস বলে। মনে লালিত স্বপ্ন ছিল হুমায়ূন আহমেদের নাটকে কাজ করবেন। আর এ স্বপ্ন বেশ ভালোভাবেই পূরণ হয়েছে। গত ঈদে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের নাটক 'বুয়াবিলাস'-এর মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু। তারপর এ ঈদে হুমায়ূন আহমেদের দুটি নাটক করলেন।

তাহের শিপনের পরিচালনায় দুটি নাটকে কাজ করেছেন। এতো অল্প সময়ে খ্যাতনামা পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ বিনয়ী বাধন। এ ঈদের জন্য হুমায়ূন আহমেদ 'শুভ বিবাহ' নামে একটি নাটক নির্মাণ করেছেন। নুহাশপল্লীতে শুভ বিবাহ নাটকের স্কৃপ্টের গল্প পড়ে শোনাচ্ছিলেন তিনি। চারপাশে বসা বিভিন্ন কলাকুশলী।

স্কৃপ্ট পড়া শেষে হুমায়ূন আহমেদ বললেন, এ নাটকে যে মেয়েটার বিয়ে হবে তার নাম নীলা। নীলা মেয়েটার ক্যারেক্টার করবে এ মেয়েটা। তিনি ইশারায় বাঁধনকে দেখালেন। বাঁধন তো তখন আনন্দে কেদে ফেলেন। নাটকের কাজ শেষে হুমায়ূন আহমেদ বাঁধনকে বলেন, তুমি যদি আমার সঙ্গে আরো কাজ করো, তাহলে আমার মনে হয় আমরা একজন ভালো অভিনেত্রী পেতে যাচ্ছি।

এর চেয়ে বড় মনত্দব্য বাঁধনের জন্য আর কি হতে পারে! স্বপ্নের পথে চলা বাধনের স্বপ্ন হলো হুমায়ূন আহমেদের নাটকে নিয়মিত কাজ করা। আর সেই পথেই তো এখন হাটছেন তিনি। চ্যানেল আই অফিস থেকে একজন বাধনকে ফোন করে বলেন নাটক করার কথা। বলেন, চরিত্রটি ছোট। তবে ডিরেক্টরের নাম বলেননি।

এতে রাজি হয়ে যান বাঁধন। পরে তিনি জানতে পারেন ডিরেক্টরটি হচ্ছেন স্বয়ং হুমায়ূন আহমেদ। তখন কি যে আনন্দিত হয়েছিলেন বাঁধন! বাঁধনের স্বপ্ন_ লোকে দেখলেই যেন ওকে বলে, আরে ও তো নুহাশের মেয়ে! তবে কারো জায়গায় স্থানান্তরিত হতে চান না তিনি। নিজের চিন্তাশক্তি দিয়ে, নিজের আত্মবিশ্বাস দিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে চান। ইচ্ছাঘুড়ির সুতোয় পাওয়া থেকে মানুষের প্রত্যাশা বাড়ে।

বাধনের ইচ্ছাঘুড়িটি এখন উড়ে বেড়াচ্ছে নীল আকাশে। সীমানাটাও তাই অনেক বড়। তবে ইচ্ছা বলুন আর স্বপ্নই বলুন, আফজাল হোসেনের বিপরীতে কাজ করার খুব ইচ্ছা তার। ছোট থেকেই আফজাল হোসেনকে খুব পছন্দ করেন। সরয়ার ফারুকীর কাজের ধরন খুবই ভালো লাগে তার।

ফারুকীর সঙ্গেও কাজ করার ইচ্ছা আছে তার। এছাড়া গিয়াসউদ্দিন সেলিম এবং সালাউদ্দিন লাভলুর নাটক নির্মাণ তার কাছে খুবই ভালো লাগে। ইচ্ছা রাখেন তাদের নাটকে অভিনয় করার। প্রিয় ও পছন্দ বাঁধনের জন্মতারিখ 28 অক্টোবর। বৃশ্চিক রাশির জাতক সি্নগ্ধ এ মেয়েটি নিজের রাশিকে ডেঞ্জারাস রাশি বললেন।

নিজে রাশিচক্র পড়েন আবার বিশ্বাসও করেন। মিষ্টি জাতীয় খাবার খুবই পছন্দ তার। শপিং করতে তার খুব ভালো লাগে। মন খারাপ হলে শপিং করেন, কোনো বাহানা হলেই শপিং করেন। আবার ঘুরতেও ভালো লাগে তার।

বাঁধনের প্রিয় তারকার তালিকায় আছেন আফজাল হোসেন, আসাদুজ্জামান নূর ও ডা: এজাজ। যে জীবন অন্য মাত্রার বাধন বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজে পড়াশোনা করছেন। একান্ত ব্যক্তি জীবনের পাশাপাশি তার তৈরি হয়েছে আরেকটি জীবন। যে জীবনটা অন্য মাত্রার, অন্য রঙে রাঙানো। আর সেটি হচ্ছে তারকা জীবন।

লাক্স-চ্যানেল আই পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য তিনি গিয়েছিলেন দুবাই। সেখানকার বাংলাদেশিরা তাকে ভালোভাবে চিনতে পেরেছে, এটি দেখে খুবই ইমপ্রেস বাধন। অন্য মাত্রার এ জীবনে তার রয়েছে ভক্ত। শুনতে হয় ভক্তদের অনেক আবদার। দেখা হলেই কথা বলতে চায়।

বাঁধনও উপভোগ করেন বিষয়গুলো। তার মতে, ভক্ত না হলে আবার আর্টিস্ট কিসের! ভক্তদের সঙ্গে কথা বলতেই ভালো লাগে। তাদের শুভ কামনায়ই তো আমি আজকের বাঁধন। ও আরেকটা কথা, আজকের এ বাধনকেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম বিয়ে সংসার নিয়ে। তিনি বললেন, আপাতত বিয়ের চিন্তা একদমই করছি না।

কবে চিনত্দা করবো সেটাও বলতে পারছি না। আকাশের একরাশ নীল 'আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল, বাতাসের আছে কিছু গন্ধ', গানটি বাঁধনের খুবই প্রিয়। আকাশের একরাশ নীলের সি্নগ্ধতা বয়ে বেড়ায় বাতাসে বাতাসে। সেই সি্নগ্ধতার পরিসীমা বহুদূর। তেমনি বাধনও নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে চান ততোদূর।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.